আবার চাপে পড়ছেন সংস্কারপন্থিরা
আওয়ামী লীগের এবারের কাউন্সিলেও গুরুত্বহীন থেকে যাবেন এক-এগারোর সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দলের হেভিওয়েট নেতাদের অনেকে। সংস্কারপন্থির ছাপ নিয়ে অনেকে মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও এবারের কাউন্সিলে কেউ কেউ ছিটকে পড়তে পারেন উপদেষ্টা পরিষদ থেকেও। সম্প্রতি দলের সভাপতি শেখ হাসিনার করা এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের কেউ কেউ এমনটিই ধারণা করছেন।
গত কাউন্সিলেও সংস্কারপন্থিদের গুরুত্বপূর্ণ পদের বাইরে রেখেই কমিটি গঠন করা হয়।
এক-এগারোর প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা দলের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সম্প্রতি সংস্কারপন্থিদের উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘তাদের (১/১১-এর সময় যারা দলের সংস্কার চেয়েছিলেন) ক্ষমা করে দিয়েছি, কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ডের কথা ভুলে যাইনি।’
সাধারণ মানুষের মন থেকে এক-এগারোর বিষয়টি অনেকটা আড়ালে চলে গেলেও ওই সময়ে প্রকাশিত কিছু সংবাদের জন্য সম্প্রতি ডেইলি স্টার সম্পাদক তার ভুল স্বীকার করলে বিষয়টি আবার আলোচনায় উঠে আসে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে হয়েছে অর্ধশতাধিক মামলা। সংসদের তাকে নিয়ে হয়েছে বিস্তর আলোচনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি নিয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে কড়া বক্তব্য দিয়েছেন। ওই সময়ে দুটি জাতীয় দৈনিকের ভূমিকা নিয়েও বিশদ অভিযোগ করেছেন তিনি।
কাউন্সিলের আগ মুহূর্তে দলপ্রধানের এমন পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটাকে অনেকেই বিশেষ অর্থবহ মনে করছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগোনিউজকে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকটি কারণে এবারের কাউন্সিল আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ বিশেষ চমকও থাকবে এবারের কাউন্সিল ঘিরে।’
তিনি বলেন, ‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সম্প্রতি এক বৈঠকে ১/১১-এর সময় কতিপয় নেতার ভূমিকার যে সমালোচনা করেছেন, তা যথার্থই। সংগঠনের দুর্দিনে বিশেষ সুবিধা পেতে তারা (সংস্কারপন্থিরা) দল প্রধানের ব্যাপারে যে বিরাগভাজন আচরণ করেছিলেন, তা কখনোই ভোলার নয়, ভোলা যায় না।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরো বলেন, ‘এবারের কাউন্সিলে বিগত দিনের বিতর্কিত নেতাদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্যও একই ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘পরপর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে এখন অধিক সংগঠিত। দলপ্রধান শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থাও এখন পাহাড়সম।’
তিনি বলেন, ‘অতীতের কোনো কোনো ঘটনা ভুলে গেলে চলে না। তাহলে ইতিহাস ক্ষমা করে না। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য অতীতে ফিরিয়ে নিচ্ছে। এটি সময়ের একটি সাহসী বক্তব্য এবং দলের জন্য মঙ্গলও বটে। কারণ, দলের সঙ্গে গাদ্দারি করে কেউ ভালো করতে পারেনি। হয়তো সময় এসেছে অতীতের ভুলের জন্য কারো কারো খেসারত দেয়ার।’
আসছে ২৮ মার্চ আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ৯ জানুয়ারি এ তারিখ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে এ কাউন্সিল দু’তিন সপ্তাহ পিছিয়ে যাচ্ছে বলেও খবর রয়েছে গণমাধ্যমে। কাউন্সিল যখনই হোক এতে বড় ধরনের রদবদল না হলেও বিতর্কিত ও নিষ্ক্রিয় নেতারা বাদ পড়বেন বলে প্রচার রয়েছে। পাশাপাশি গঠনতন্ত্র সংশোধন করে কমিটির কলেবর বাড়ানোসহ নতুন পদের সৃষ্টি হতে পারে। গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রেসিডিয়াম, সম্পাদকমণ্ডলী এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্যপদে পরিবর্তনসহ বিভিন্ন পদে নতুন মুখ আসতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এ রাজনৈতিক দলটির সর্বশেষ ১৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সে হিসেবে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর বর্তমান কমিটির মেয়াদ তিন বছর পূর্ণ হলেও পৌর নির্বাচনের কারণে কাউন্সিল পেছানো হয় বলে জানা যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সাবেক এমপি মিয়াজী যশোরের পার্ক থেকে আটক
ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক এমপি ও শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিববিস্তারিত পড়ুন

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন