‘আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না?’
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এক সময়ের মাঠ মাতানো পেস বোলার শাহাদাত হোসেন বেশ কিছুদিন থেকেই মাঠের বাইরে। গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা থাকার কারণে এতদিন ক্রিকেটে ফিরতে পারেন নি তিনি। তবে দুই মাস আট দিনের জেলজীবন কাটিয়ে গত ১২ ডিসেম্বর থেকে জামিনে আছেন এই পেসার।-অনলাইন।
গতবারের বিপিএলে না খেলতে পারলেও ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে খেলার আশা ছিল শাহাদাতের। সেই লক্ষ্যেই জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে গত চার মাস ধরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে আসছিলেন শাহাদাত।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশই হতে হয়েছে শাহাদাতকে। শাহাদাতকে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে খেলার অনুমতি দেয় নি বিসিবি। বিসিবির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে সবগুলো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন না শাহাদাত। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী এমনটাই নিশ্চিত করেছেন সাংবাদিকদের। বর্তমানে জামিনে মুক্তি পেলেও গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের মামলা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া অনেকটাই সময়ের ব্যাপার। তাই হতাশায় অনেকটাই মুষড়ে পড়েছেন শাহাদাত।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমী ভবনে সাংবাদিকদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শাহাদাত।
কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “ভাই সারা জীবন ক্রিকেটই খেলেছি। আরতো কিছু করি না। এখন সংসার চলবে কি করে যদি খেলতে না পারি। ছোট্ট একটা বাচ্চা আছে। কিভাবে ওর ভবিষ্যৎ গড়বো? আমিতো ভুল বুঝতে পারছি। কত মানুষ বড় বড় ভুল করে ক্ষমা পায়, আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না? আমি সবার কাছে আমার ভুলের জন্য ক্ষমা চাই। ক্রিকেটে বোর্ড কি পারে না আমাকে আরেকবার সুযোগ দিতে?” তবে শাহাদাত চেষ্টা করে যাচ্ছেন যত দ্রুত সম্ভব মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করতে।
তিনি বলেন, “আমি চেষ্টা করছি মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলে সেটি নিষ্পত্তি করার। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কথা হয়েছে। চুক্তিও হয়েছে যে, সে মামলা তুলে নেবে। আমিতো মেয়েটিকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি আছি”।
শেষ পর্যন্ত বিসিবি যদি তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং শাহাদাতকে ক্রিকেটে ফেরার অনুমোদন না দেয় তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার পড়তে পারে হুমকির মুখে।
২৯ বছর বয়সী এই পেসার বলেন, “কি করার আছে আমার বলেন! আমিতো তাদের কাছে হাত জোড় করছি। একটা বার আমাকে সুযোগ দিন। আমিতো ক্রিকেট খেলেই আয় করি। ১৫ বছর ধরে বিসিবি’র সঙ্গে আছি। একটা ভুল কি তারা আমার ক্ষমা করতে পারে না। আমি এখন ক্রিকেটে খেলতে না পারলে কিভাবে সংসার চালাবো। আমার মেয়ে আমার স্ত্রীর কি হবে?” বলতে বলতেই আবারও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শাহাদাত।
এরপর জানান তাঁর খেলার উপর কোর্টের কোনও বিধি নিষেধ নেই। কিন্তু খেলায় ফিরে আসা না আসা পুরোপুরিই নির্ভর করছে বিসিবির ওপর। “আমি এখন সবকিছু করতেই প্রস্তত। আমি এখন জামিনে আছি। আমার খেলার উপর কোর্টের কোন বিধি-নিষেধ নেই। আর রায় না হওয়া পর্যন্ত আমি অবরাধীও না। যদি বিসিবি চায়, বোর্ড সভাপতি যদি দয়া করে তাহলে আমি খেলতে চাই। আবারও মাঠে ফিরতে চাই। অন্তত ঘরোয়া লীগগুলো খেলার অনুমতি দিক”, বললেন তিনি।
নিজের কৃতকর্মের জন্য অবশ্য অনুতপ্ত শাহাদাত। ক্ষমাও চাইলেন সকলের কাছে। এমনকি প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন সেই নির্যাতিত শিশুটির দেখভাল করার এবং ক্ষতিপূরণ দেয়ার।
অনুতপ্ত শাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, “জেলে থাকা কি, মামলা কি তা এখন আমি বুঝতে পারছি। এমন কিছু হলে কতটা অর্থ কষ্টে পড়তে হয় তা বলে বুঝাতে পারবো না। আমি ও আমার স্ত্রী দু’জন জেল খেটেছি এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কি হতে পারে আমাদের জন্য। আমিতো ভাই ভুল করে ফেলেছি”।
তিনি আরও বলেন, “মেয়েটির পরিবার বা মেয়েটিও আমার বিরুদ্ধে মামলা করেনি। করেছে তৃতীয় পক্ষ। আমিতো চাই আমার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে। তাই শিশুটির যেন বড় হওয়া পর্যন্ত আর কাজ করতে না হয় সেই ব্যবস্থা করতে রাজি। আমি ওর পড়া লেখার দায়িত্ব নিতে রাজি। ভাই কত মানুষ বড় বড় অপরাধ করে ছাড়া পায়, ক্ষমা পায়। আমি কি পাব না? আমি সত্যি সত্যি অনুতপ্ত আমার কর্মের জন্য। আমি এমন ভুল আর করবো না। আমি গোটা দেশের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছি। একটি বার আমাকে সুযোগ দেন”।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন