আমার স্বামী সত্যিকার অর্থেই বহির্মুখি স্বভাবের লোক। সবসময়ই হাসিখুশি থাকেন এবং আমার পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দেন। তিনি প্রায়ই এও বলেন যে, তিনি যৌনতা উপভোগ করেন। আর আমরা প্রায়ই যৌন মিলনে লিপ্ত হই। এক্ষেত্রে তিনিই প্রথম উদ্যোগ নেন। কিন্তু যৌন মিলনের সময় তিনি চুপমেরে থাকেন। কখনোই তিনি আনন্দ প্রকাশে কোনো আওয়াজ করেন না। এমনকি বীর্যপাতের সময়ও তিনি চুপ করে থাকেন। আর যৌন মিলনের সময় তিনি কোনো ধরণের ভালোবাসা বা স্নেহ-মমতাও দেখান না। অথচ অন্য সময় সারাক্ষণই তিনি খুব সজীব থাকেন এবং আমার প্রতি তার অগাধ ভালোবাসার কথা বলেন। বিয়ের পর থেকেই তিনি এখনো এমনটাই আছেন। আমি ভেবেছিলাম তিনি হয়তো পরিবর্তিত হবেন। কিন্তু না তিনি আগের মতোই আছেন। তিনি যদি যৌন মিলনের সময় আনন্দদায়ক অনুভুতি প্রকাশ করতেন তাহলে আমিও হয়তো যৌনতাকে আরো বেশি উপভোগ করতাম। দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থা চলছে। কিন্তু বিষয়টি কীভাবে তাকে বলবো তা বুঝতে পারছি না।

যৌন মিলন এবং অন্য সময়ে তার আচরণের ভিন্নতার কারণটি যদি আপনি বের করতে চান তাহলে আপনাকে বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে হবে। একবার নয় বারবার আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি বুঝার চেষ্টা করতে হবে।

কিন্তু আপনি নিজেও বিয়ের বেশ কয়েকবছর পরও বিষয়টি নিয়ে চুপমের বসে আছেন। আপনি হয়তো নিজে নিজেই বিষয়টি বুঝার চেষ্টা করছেন।

আপনি কি তাকে হারানোর ভয়ে আছেন? বা তাকে কোনোভাবে আঘাত বা বিব্রত করতে চান না? নাকি আপনি এই ভয়ে আছেন যে এতে হয়তো এমন কোনো সত্য বেরিয়ে আসবে যা আপনি জানতে চান না বা যার মুখোমুখি হতে ও মোকাবেলা করতে চান না?

তিনি কেন চুপ থাকেন তার অনেক কারণই থাকতে পারে। হতে পারে তার স্বভাবই এমন। যে কারণে তিনি নিজেও বিষয়টি নিয়ে আপনাকে কিছু বলেন না। আর আপনি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি নিজেও হয়তো বিষয়টি যে আপনাকে পীড়া দেয় তা জেনে বিস্মিতও হতে পারেন।

তিনি হয়তো এভাবেই যৌনমিলন করতে উপভোগ করেন। সকলেই যে যৌন মিলনের সময় আওয়াজ করবে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। অথবা এমনও হতে পারে তিনি হয়তো বিয়ের আগে যৌনতার তাড়নায় নীরবে হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত ছিলেন। আর এখনো সে নীরবতার অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসার কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না।

যৌন মিলনের সময় তার এই নীরবতার অভ্যাস বদলাতে চাইলে আপনাকে নিজে থেকেই উদ্যোগী হয়ে তাকে তার অনুভুতি প্রকাশে উৎসাহিত করতে হবে। তাকে বুঝাতে হবে যৌন মিলনের সময় তিনি যদি আপনার প্রতি স্নেহ ও মমতা দেখান এবং ভালোবাসা প্রকাশ করেন তাহলে আপনি আরো বেশি আনন্দ পাবেন।

অথবা এমনও হতে পারে আপনার আনন্দ নিশ্চিত করার জন্যই তিনি তার লিঙ্গকে দীর্ঘসময় ধরে উত্থিত করে রাখতে এবং দ্রুত ফুরিয়ে না যেতেই এমনভাবে চুপ করে থাকেন। তিনি হয়তো তার পুরো মনোযোগ ও শক্তি এতেই ব্যয় করতে চান। আর এ কারণেই হয়তো অন্য কোনোদিকে মনোযোগ দেওয়ার ফুরসৎ হয় না তার।

আর তিনি যদি ছোটবেলা থেকেই এমন কোনো পরিবেশে বড় হয়ে থাকেন যে পরিবেশে যৌনতাকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হতো সে কারণেও হয়তো তিনি আপনার সঙ্গে স্বাভাবিক হতে পারছেন না।

আবার এমনও হতে পারে তার বিশেষ কোনো যৌন উৎকল্পনা, প্রতিমা বা খেয়াল আছে যা তিনি কল্পনায় উদঘাটন করতে চান কিন্তু তা করতে পারছেন না।

আবার এমনও হতে পারে তিনি আপনাকে বিব্রত করতে ব মনোক্ষুণ্ন করতে চাননা বলেই বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না। ছোটবেলায় কোনো ধরণের শারীরিক, যৌন বা আবেগগত নিপীড়ন বা অবহেলার কারণেও হয়তো তার এমন স্বভাবের সৃ্ষ্টি হয়ে থাকতে পারে। অথবা আগের কোনো সম্পর্কে সহিংসতার শিকার হওয়ার ফলেও তিনি এমনটা বনে গেছেন।

আপনি যদি বিষয়টি আরো মমতা ও সহমর্মিতা নিয়ে এবং খোলামনে আলোচনা করতে পারেন তাহলে হয়তো আপনাদের সম্পর্ক আরো সুন্দর হয়ে উঠবে। আপনি তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন কী করলে তিনিও যৌনতাকে আরো বেশি উপভোগ করবেন।

অথবা এর পেছনে যদি মনোযৌনগত কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্নও হতে পারেন। কিন্তু বিষয়টি যদি যৌনতা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গীর ভিন্নতার নিদর্শন হয়ে থাকে তাহলে তা আপনাদের সম্পর্কের জন্য মৌলিক সমস্যার উৎস হয়ে দাঁড়াবে এটি। যার পরিণতিতে বিয়ে বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

সবচেয়ে ভালো হয় আপনি তাকে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করুন। তাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন এভাবে আর ঠিক চলছে না। এ থেকে কীভাবে বের হওয়া যায় তা নিয়েও দুজনে মিলে পরামর্শ করুন। মনে রাখবেন বিয়ের কয়েক বছর পরও যদি যৌনজীবন সুখের না হয় এবং উন্নতির কোনো লক্ষণই দেখা না যায় তাহলে সম্পর্কের ইতি টানার জন্য এই একটি কারণই যথেষ্ট।