‘আমি আওয়ামী লীগ নয়, শেখ হাসিনা লীগ করি’
নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সেই শামীম ওসমানই আইভীর মাথায় হাত রেখে বলেন, ছোট বোন তুমি চিন্তা কর না। নিশ্চিন্তে বাড়ি যাও। আমি তোমার নির্বাচন করে দিচ্ছি। আমি আওয়ামী লীগ নয়, শেখ হাসিনা লীগ করি। নেত্রী আমাকে তোমার পক্ষে কাজ করতে বলেছেন। আমি তোমার পক্ষেই কাজ করব। কারণ নৌকা জয়ী হলে শেখ হাসিনার বিজয় হবে।
বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের সমঝোতা বৈঠকে এমন আবেগঘন নাটকীয়তা ঘটে। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলে আড়াই ঘণ্টারও বেশি। রাত ৮টায় শুরু হয়ে চলে সাড়ে ১০টা নাগাদ। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও বিদায় সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী উষ্ণ সৌজন্যতা বিনিময় করেন। একপর্যায়ে আইভীর মাথায় হাত রেখে শামীম ওসমান তাকে অভয় দিয়ে বলেন, আমরা সবাই নৌকার কর্মী। নৌকার যাত্রীদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক নেতার কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আয়োজিত এ সমঝোতা বৈঠকের প্রথম পর্যায়ে দু’পক্ষের নেতাদের মধ্যে দফায় দফায় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। মাঝেমধ্যে উভয়পক্ষ তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও শেখ হাসিনার প্রতি অগাধ আনুগত্যের কথা তুলে ধরেন। একপর্যায়ে মান-অভিমান ভাঙার পর্ব শুরু হয়। সেটিও চলে দীর্ঘক্ষণ। কান্না ও অভিমান পর্ব শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াৎ আইভী পরস্পরের দিকে এগিয়ে যান।
বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, শামীম ওসমান ৪০ মিনিট ধরে বক্তব্য দেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কটূক্তি করা ছাড়াও আইভী আমার মায়ের কবর নিয়েও বাজে মন্তব্য করেছেন। সেগুলো আমি মুখবুজে সহ্য করে নিয়েছি। কিন্তু তিনি যখন আপনাকে উদ্দেশ করে বিরূপ মন্তব্য করেন তখন আমি স্থির থাকতে পারি না। কারণ আমি আসলে হাসিনা লীগ করি। শামীম ওসমানের বক্তব্য শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, তুমি মোট ৪১ মিনিট কথা বলেছ। তোমার দীর্ঘ বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তুমি জেনে রাখ, আমি নীলকণ্ঠ। নীলকণ্ঠর মতোই বিষ পান করেও তা হজম করতে পারি। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী তার কপালের ওপর থেকে চুল সরিয়ে ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে বলেন, আমার কপালের এ জায়গাটায় এখনও সেলাইয়ের দাগ আছে। কিন্তু তোমরা জান না এ সেলাইয়ের দাগ যার কারণে পড়েছিল তাকেও আমি বর্তমান মন্ত্রিসভায় রেখেছি। কারণ আমি ব্যক্তিগত লাভের জন্য রাজনীতি করি না। আমি দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। যেটা করেছিলেন আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রধানমন্ত্রী এমন আবেগঘন বক্তব্যের সময় গণভবনের বড় বৈঠকখানাজুড়ে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। উপস্থিত নেতাকর্মীদের কয়েকজনকে কাঁদতে দেখা যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন