‘আমি এই পুরুস্কারে খুশি নই,আমি চাই তারা এই কফি চাষকে ছড়িয়ে দিক’
শীত প্রধান প্রতিটি দেশেই কফির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশেও এই কফির চাহিদা কম নয়। চায়ের তুলনায় দাম একটু বেশি হলেও শহর কিংবা গ্রাম সর্বত্রই জায়গা দখল করে নিচ্ছে কফি। আমাদের দেশের কফির প্রয়োজনীয় চাহিদার সবটুকোই আমদানী নির্ভর। বেশ কয়েকে বছর আগে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় কফি চাষ সম্পসারণের উদ্যেগ নিলেও বাজার ব্যবস্থানা,কারিগরি জ্ঞাণ ও প্রযুক্তির অভাবে তা নীভু নীভু প্রদীপের মতো করে জ্বলছে।
এই সমস্যার কথাগুলো ভাল করেই অবগত আছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের কফি প্রেমিক একামত তালুকদার নামের এক কৃষক। অনেকটা জেনে বুঝেই বাণিজ্যিক কফি চাষের পথে এগিয়ে চলছেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন ভূঞাপুরের মাটিতেই অন্যান্য ফলজ বাগানের পাশাপাশি গড়ে উঠবে কফি বাগানের।
শুরুর কথা, এখন থেকে বছর পাঁচেক আগে মধুপুরের একটি গ্রামে বেড়াতে যান একামত তালুকদার। সেই বাড়ির কর্তা তাকে চায়ের পরিবর্তে নিজ গাছের উৎপাদিত কফি পান করান। কফির স্বাদে তাকে মুগ্ধ করে। আর এই বিষয়টি তাকে কৌতুহলী করে তুলে। কিছুটা অবিশ্বাস থেকেই তিনি কফি গাছটি দেখতে চান। কারণ হিসেবে বলেন, আমি জানতাম আমাদের দেশে কফি চাষ হয়না, আর কফি গাছ আর ফলটিই বা না জানি কেমন!
গাছটি দেখার পর তাকে ফুল গাছের মতোই মনে হলো। এর একটি গাছ আমার বাড়িতে থাকলে মন্দ হয়না। লোভ করে চেয়ে বসলেন একটি চারা। ওই বাড়িতে আর কোন চারা না থাকায় শেষমেশ গাছে কলম দিয়ে দুটি চারা এনে নিজ বাড়ির উঠোনে লাগলেন। লাগানোর দই বছরের মাথায় গাছ থেকে এক কেজির মতো ফল পেলেন। কিন্তু এই ফল প্রক্রিয়ার বিষয়টি জানা নেই তার। স্থানীয় কৃষি অফসও তাকে সহযোগিতা করতে পারেনি।
সেখানেই থেমে যাননি একামত তালুকদার, তিনি দ্বারস্থ হন পাশের ২৬শা গ্রামের ডাঃ শাহ্জাহানের । তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িযে দেন। এবং তাকে পরামর্শ দেন ইন্টারনেটের সহযোগিতা নিতে। ডাঃ শাহ্জাহানের পরামর্শ ও ইন্টানেটের সহায়তা নিয়ে তিনি তার মতো করে কফি ফল সংগ্রহ ও তা থেকে খুব সহজেই কফি পাউডার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।তিনি বলেন, গাছ থেকে পাকা ফল পাড়ার পর তা ভাল করে রোদে শুকিয়ে মুড়ি ভাজার মতো করে ফলগুলো ভেজে নিয়ে তা দিয়ে পাউডার তৈরি করলে দোকানের কেনা যেকোন কফির চেয়ে অনেকি বেশি ফ্লেভার পাওয়া যায়।
স্বপ্নের কথা, তনি বলেন, তিনটি গাছে ফল ধরে। সেখান থেকে প্রায় ৬কেজির মতো কফি ফল পাই। আগামী বছর আরো বেশ কিছু গাছে ফলন শুরু হবে। তিনটি গাছ থেকে যা ফল পাই তা থেকে নিজেদের খাবার জন্য কিছু ফল রেখে বাকি ফল দিয়ে চারা তৈরি করি। এ পযর্ন্ত তিনশ কফির চারা মানুষের মাঝে বিতরণ করেছি। আমার আশেপাশের সব বাড়িতেই কফি গাছ পাবেন। বেশির ভাগ গাছেই ফল ধরেছে। বর্তমানে আমি বাণিজ্যিক ভাবে কফি চাষ করার লক্ষে ৫শ গাছের চারা দিয়ে একটি প্লট করবো। তাছাড়া আমার ইচ্ছে হচ্ছে আগামী দুই বা তিন বছরের মধ্যে আরো ২হাজার চারা বিনা মূল্যে বিতরণ করার।
তিনি আরো সময়ের কন্থসরকে বলেন, আমি আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল মানুষ নই। গত পাচ বছর ধরে উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে বিশেষ পুরস্কার দেয়। কিন্তু আমি এই পুরুস্কারে খুশি নই। আমি চাই তারা এই কফি চাষকে ছড়িয়ে দিক। বছর তিনেক আগে মহসিন সাহেব নামের এক ইউএনও ছিলেন তিনি এতোদিনে ভূঞাপুরে থাকলে তাঁর সহযোগিতা ও আন্তরিকতায়এই এলাকার প্রতিটি বাড়িতে অন্তত একটি করে কফি গাছ থাকতো। বিক্রি না হউক দোকান থেকে আর কিনে খেতে হতো না। তিনি আমার গাছের উৎপাদিত কফি খেয়ে অনেক তারিফ করেছিলেন। এখনো সময় পেলে কফি চাষের খোঁজ নেন তিনি। তাছাড়া প্রতিদিনই অনেক লোক জন আমার কফি গাছ দেখতে আসে। কফি গাছের জন্য মানুষ আমাকে দেখতে আসে। টাকা দিয়ে কি হবে ! এই প্রাপ্তিতেই আমি ধণ্য।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন