‘আমি ওর পা জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করার পরও ছাদ থেকে লাথি মেরে ফেলে দেয়’
সাতক্ষীরা : আমার আব্বা ছোটকালেই আমাকে বিয়ে দেয়। এরপর বাপের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়ে স্বামীকে দিয়েছি। তাতেও হয়নি তার। আরো তিন লক্ষ টাকা দাবি করে। আমাকে ঘরে আটকে রেখে পিটিয়েছে।
ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। হাতের শিরা কেটে দিয়েছে। আমি পা জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করার পরও সে ক্ষ্যান্ত না হয়ে বাড়ির ছাদ থেকে আমাকে লাথি মের নিচে ফেলে দেয়। উপর থেকে পড়ে বেঁচে গেলেও আমার বুকের পাজর ও মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। আমি বাঁচতে চাই।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই নির্মম ঘটনার বর্ণনা দেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মোত্তালেবের মেয়ে আরফিন আরা খাতুন (৩২)।
নির্যাতনকারী স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও দেবরের বিচার চেয়ে নির্যাতনের বর্ণনা দেন হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধ পিতার কাঁধে ভর করে আসা আরফিন আরা খাতুন।
আজ দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্যে আরফিন আরা খাতুন বলেন, গত ২০০৯ সালের পয়লা মে একই উপজেলার ভাদিয়ালি গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে মিঠুন রানার সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মিঠুন রানা তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
তিনি বলেন, বিয়ের প্রথম দুই বছরে কয়েক দফায় তাকে চার লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। এরপরও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন বন্ধ হয়নি। শুধুমাত্র আমার সুখের জন্য শ্বশুরের কোনো ভিটা না থাকায় বাবা তিন কাঠা জমি কিনে তাতে বাড়ি করে দিয়েছেন।
আরফিন বলেন, আসবাবপত্রগুলোও বাবার বাড়ির ছোট বড়-গাছ বিক্রি করে এনেছি। এর কিছুদিন পরই স্বমী মিঠুন রানা বিদেশ যাওয়ার কথা বলে ব্যাংক থেকে লোনের কথা বলে। তার কথায় রাজি হলে বাড়ি মঠগেজ দিতে হবে বলে ওই জমি আমার কাছ থেকে কৌশলে দলিল করে নেয়। পরে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, পরে মিঠুনের বিদেশ যাওয়ার জন্য ফের শ্বশুর-শাশুড়ি ও দেবর ফের তিন লাখ টাকা যৌতুক দবি করে। বাবা আর টাকা দিতে রাজি হয়নি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমি যৌতুক আইন ও হেবা দলিল বাতিলের জন্য আদালতে মামলা করি। সে মামলায় স্বামীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
নির্যাতিত আরফিন বলেন, নারী নির্যাতনের মামলা করায় গত ১৪ এপ্রিল মিঠুন আমাকে কোর্টের মাধ্যমে এক তরফা তালাক দেয়। গত ২১ এপ্রিল আমি আমার পিতার দেয়া বাড়িতে গেলে স্বামী-শ্বশুরসহ অন্যরা আমাকে ঘরে আটকে রেখে বেদম মারধর করে। ছুরি দিয়ে মাথা ও হাতে আঘাত করেছে। একদিন ছাদ থেকে ফেলে দেয়। এতে আমার পাজর ও মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে দিয়েছে। আমি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় গত ২৪ এপ্রিল কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করি। পুলিশ অজ্ঞাত কারণে আসামিদের ধরছে না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও দেবরের শাস্তির দাবি জানান।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরাবিস্তারিত পড়ুন
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও গ্রামবাসী একত্রে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
কোটি টাকার স্বর্ণসহ ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৯ পিছ স্বর্ণের বারসহবিস্তারিত পড়ুন