আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাঈদীকে মুক্ত করার দাবি জানিয়ে এবার যা বলছে জামায়াত
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সরকার পরিকল্পিতভাবে বন্দী করে রেখেছে এমন মন্তব্য করে তাকে মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
মাওলানা সাঈদী কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন না বা জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি যে নির্দোষ সে ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধের একজন সাব-সেক্টর কমান্ডারসহ পিরোজপুরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তি যথাযথভাবে সাক্ষী দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে নিহত বিশাবালীর ভাই সুখরঞ্জনবালী আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষী দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিতান্তই দুঃখের বিষয় যে তিনি সাক্ষী দেয়ার জন্য আদালতে যাওয়ার পথে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তাকে অন্যায় ও নির্মমভাবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়।
‘সেই মামলায় বিপুল সংখ্যক লোকের সাক্ষী গ্রহণ করা হলেও রহস্যজনক কারণে নিহত বিশাবালীর পরিবারের কোনো সদস্যেরই সাক্ষী গ্রহণ করা হয়নি। এ ঘটনা থেকে দেশবাসীর সামনে সুস্পষ্ট হয় যে বিশাবালীর ভাই সুখরঞ্জন বালীকে যদি আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষী প্রদানের সুযোগ দেয়া হত তাহলে প্রকৃত রহস্য ও সত্য জাতির সামনে উন্মোচিত হয়ে যেত।’
অবিলম্বে মুক্তি প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা আশা করি রিভিউ আবেদনের শুনানিতে আল্লামা সাঈদী ন্যায় বিচার পাবেন এবং তিনি আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি লাভ করে জনগণের মধ্যে ফিরে আসবেন। তিনি যেন ন্যায় বিচার পান তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়ার আহ্বান জানান জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা।
এদিকে সাঈদীকে নিয়ে জামায়াতের এমন অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। জামায়াতের এমন বিবৃতিকে সুষ্পষ্টভাবে আদালত অবমাননা বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুরিন আফরোজ। তিনি বলেন, ‘তারা এটা বলতেই পারে না। সরকার আটকে রেখেছে, এটা তারা কি করে বলে? একটি দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার বিচার হয়েছে। এই বিচারে নিজেকে আত্মপক্ষ সমর্থনে তারা নিজেরাও লড়েছে। তারপরও তারা এ কথা কী করে বলে?’।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুরে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, জোর করে ধর্মান্তকরণের আটটি অভিযোগে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে দুইটি অভিযোগে যেহেতু মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, সে জন্য বাকি আটটি অভিযোগে কোনো দণ্ড দেয়া হয়নি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন সাঈদী। রাষ্ট্রপক্ষও আপিল করে যেসব অভিযোগে তার সাজা ঘোষণা হয়নি, সেগুলোতে সাজা দিতে।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনসহ পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই দুই আপিলের রায় ঘোষণা করে। এর মধ্যে যে দুটি অভিযোগে সাঈদীর ফাঁসি হয়েছিল, তার মধ্যে ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার দায় থেকে তাকে খালাস দেয়া হয় এবং বিসাবালী হত্যায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ ছাড়া ধর্ষণ, লুট, নির্যাতন ও জোর করে ধর্মান্তকরণের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয় তার।
উল্লেখ্য, মাওলানা সাঈদীর রিভিউ আবেদনের শুনানি সুপ্রীম কোর্টের কার্যতালিকায় রয়েছে এবং রিভিউ শুনানি আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। বিশাবালী নামক জনৈক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড এবং আপিলে সুপ্রীম কোর্ট আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন