আমেরিকা শান্ত না হলে বিশ্ব হবে অস্থির
অভিবাসী প্রত্যাহার, মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য, চীন ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ট্রাম্প যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন তা বাস্তবায়ন হলে আমেরিকা অস্থিতিশীল হতে পারে। বললেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আরটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ইলেক্টোরাল ভোটিং সিস্টেম বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত প্রধান্য পায় না। তাই এ বিষয়টি পরিবর্তন করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে।
তিনি বলেন, আমেরিকার স্থিতিশীলতা বিশ্বের সব দেশের জন্যই দরকার। কারণ আমেরিকা যদি স্থিতিশীল না হয় তাহলে বিশ্বজুড়ে শুরু হবে অস্থিতিশীলতা। সেজন্য আমেরিকার স্থিতিশীলতা আমাদের প্রত্যেকের কাম্য।
আব্দুল মোমেন আরো বলেন, ট্রাম্পের বিতর্কিত বক্তব্য অনেকের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প নিয়ে আমাদের থেকে বেশি ভয় ইউরোপিয়ানদের। কারণ ট্রাম্প বলেছেন ইউরোপিয়ানদের দায়িত্ব তিনি নেবেন না। আর সে কারণে ন্যাটো দেশগুলোতে খরচ অনেক বেড়ে যাবে এবং তাদের প্রতিরক্ষার বিষয়টি অসুবিধাজনক অবস্থায় পড়বে।
ট্রাম্প একই সাথে রাশিয়ার সঙ্গে সর্ম্পক ভালো করার কথাও বলেছেন। অথচ রাশিয়া-আমেরিকার দ্বন্দ্ব ঐতিহাসিক। এ অবস্থায় আমেরিকানরা কীভাবে এ বিষয়টি গ্রহণ করবেন তাও ভাবার বিষয়।
অন্যদিকে ট্রাম্প চীন থেকে পণ্য আনা বন্ধের কথাও বলেছেন। যদি পণ্য আনতে হয় তাহলে অন্তত ৪৫ শতাংশ কর দিতে হবে। রিপাবলিকান দল সবসময় ফ্রি ট্রেডে বিশ্বাস করে। সে জায়গায় তিনি ৪৫ শতাংশ করের কথা বলেছেন।
এমনকি আমেরিকার পাশের দেশ মেক্সিকো থেকে যত পণ্য আসবে সেগুলোতে ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলোর ফলে আমেরিকার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে।
এসব কারণে আমেরিকার জিডিপি নিম্নমুখী হবে এবং আমেরিকার ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারাবে। তবে তিনি ব্যবসায়ীদের আয়কর ৩৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার কথা বলেছেন। শুধু আয়কর কমলে যে ব্যবসায়ীরা বিনোয়োগ করবেন তা ভুল। পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলে তারা বিনোয়োগ করবেন না।
আব্দুল মোমেন বলেন, আমেরিকাতে নানা সম্প্রাদায়ের মানুষের বসবাস। তাদেরকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য আমেরিকার পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। যার ফলে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। আর মন্দা দেখা দিলেই মানুষ চাকরি হারাবে। এর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
আমেরিকা সবসময় অন্যদেশগুলোকে পরামর্শ, উপদেশ দিয়ে থাকে। ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় সে ক্ষেত্রটি সীমিত হয়ে আসতে পারে। কারণ ট্রাম্পের নানা বক্তব্যে আমেরিকা নিজেই বেশ অসুবিধায় পড়বে। তাদের গ্রহণযোগ্যতা অনেক কমে যাবে।
তিনি বলেন, দুনিয়াকে শুধু অস্ত্র দিয়ে প্রতিহত করা যায় না। আমেরিকার সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তার আইনের শাসন। আর সেটি যদি অবহেলিত হয় তাহলে আমেরিকা তার শক্তি হারাবে। আমেরিকা সবসময় অন্যদের সমস্যা সমাধানে মাথা ঘামায়। কিন্তু বর্তমানে আমেরিকা নিজেই সঙ্কটের মধ্যে আছে।
আব্দুল মোমেন বলেন, আমেরিকার সবচেয়ে বড় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া। নির্বাচনের ফলাফলে এ রাজ্যবাসী খুবই অসুন্তুষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদাও হতে চায় তারা। তাছাড়া দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। এ বিষয়গুলো যদি ট্রাম্প শক্ত হাতে দমন করতে না পারেন তাহলে আমেরিকায় সঙ্কট সৃষ্টি হবে। দেশ আরো বেশি বিভাজিত হবে।
নির্বাচনী প্রচারাভিযানে ট্রাম্প বলেছিলেন, দায়িত্ব হাতে নেবার প্রথম দিনই তিনি ১০ লাখ অভিবাসীকে দেশছাড়া করবেন। আমেরিকায় ১ কোটি ২০ লাখ অবৈধ অভিবাসী আছেন, এদের মাঝে বাংলাদেশি খুবই কম। সেক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে অন্যদের। আমিরেকার আইন বেশ শক্তিশালী, যার ফলে আমেরিকা সরকার অভিবাসীদের প্রতি নমনীয় থাকবেন। কিন্তু ট্রাম্প যে বিভাজন শুরু করেছেন তার ফলে শ্বেতাঙ্গরা (সাদা চামড়া) অন্যদের হেনেস্থা করবে।
যেসব বাংলাদেশি আমেরিকায় আছেন তাদের অধিকাংশই নাগরিকত্ব পেয়েছেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা তেমন সমস্যায় পড়বেন না বলে মনে করেন ড. আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, আসছে দিনগুলোতে আমেরিকা কী সঙ্কটময় পরিস্থিতির দিকে যাবে তা সময়ই বলে দেবে।
https://youtu.be/cY7QKhJF8YA
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন