আরব হারিয়ে আইএসের দৃষ্টি এখন পশ্চিমে
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কাছে একের পর এক যুদ্ধে হেরে সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) খিলাফত হারানোর কথা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। জিহাদের জন্য ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের দৃষ্টি এখন পশ্চিমের দিকে।
আইএস ছেড়ে আসা বিদেশি যোদ্ধারা এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের দাবি, আইএস জঙ্গিরা ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কা শহরে প্রচণ্ড আক্রমণের শিকার হচ্ছে। তারা এই দুটি শহরের দখল ধরে রাখতে পারবে না। তাই এখন তারা ইউরোপে সন্ত্রাসী হামলায় নিবেদিতদের নিয়োগ দিচ্ছে।
সম্প্রতি আইএস ত্যাগ করে তুরস্কে পালিয়ে আসা দুই বেলজিয়ান মুসলিমের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আইএস তার সেরা যোদ্ধাদের হত্যা করেছে এবং বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নিয়মিতভাবে তারা তাদের দখলকৃত ভূখণ্ডগুলো হারাচ্ছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অভিযানে যুদ্ধের সরঞ্জাম ধ্বংস এই জঙ্গি দলকে হালকা অস্ত্র, আত্মঘাতী গাড়িবোমা এবং আইইডির (উদ্ভাবিত বিস্ফোরক দ্রব্য) ওপর নির্ভরশীল করে তুলছে।
বেলজিয়ামের রাচিড (২৭) সিরিয়ায় যাওয়ার আগে একজন যন্ত্রবিদ ছিলেন। তিনি বলেন, ‘যখন দায়েশ (আইএস) ইরাকে যায় এবং ইরাকি সেনাবাহিনীর সামরিক ট্যাংক ও চার চাকার ভারী যান ‘হামভি’ নিজেদের দখলে নেয়। এটি একটি বড় সাফল্য। কারণ এগুলো দিয়ে তারা খুব দ্রুত অগ্রসর হতে পেরেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যখন বোমা হামলা শুরু করল, তখন এসব সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়ে যায়।’
রাচিড বলেন, ‘এখন আইএস নেতারা ‘রিবাত’ সম্পর্কে কথা বলেন, যার মানে ভূখণ্ড রক্ষা, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া নয়। এটি একটি ভিন্ন ধরনের যুদ্ধ। দায়েশের ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র আছে। এমনকি তারা এগুলো নিজেই তৈরি করেছে। কিন্তু কতগুলো বিমান ভূপাতিত করতে পেরেছে? খুবই কম। এগুলো দিয়ে আধুনিক বিমান ভূপাতিত করা সহজ নয়।’
‘তারা (আইএস জঙ্গিরা) এখনো খুব ভালো বোমা ও আত্মঘাতী গাড়িবোমা প্রস্তুতকারী। কারণ তারা সত্যিই শত্রুদের ভয় দেখাতে সক্ষম। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যখন বিমান হামলা শুরু করে, তখন শত্রুদের ধ্বংস করার আগেই এসব গাড়ি উড়ে যায়। এখন এগুলো আর কার্যকর না এবং আত্মঘাতী হামলাকারীর সংখ্যাও কমে গেছে।’ রাচিড যোগ করেন। তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু ইউরোপে হামলা চালানোর জন্য আত্মঘাতী হামলাকারী প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এসব আত্মঘাতী হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি হবে। সুতরাং আইএস নেতারা বলছেন, এখন কোথায় লড়াই করা উচিত। আইএসের অনেক যোদ্ধা মনে করছেন, মসুল ও রাক্কা দখল করে রাখা সম্ভব নয়। তাই এই লড়াই ইউরোপের দিকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
ইউরোপে বেলজিয়ামকে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের ঘাঁটি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস ও বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে হামলার জন্য সিরিয়া থেকে ফিরে আসা আইএস জঙ্গিদের দায়ী করা হচ্ছে। রাচিড এবং বেলজিয়ান সহচর ইয়াসিন দাবি করেছেন, তাঁরা এই হামলাগুলোর ব্যাপারে কিছু জানেন না এবং কারা এই হামলা চালিয়ে তা জানা খুব কঠিন।
ইয়াসিন বলেন, ‘কী করছে, এ নিয়ে আলোচনার জন্য তারা (আইএস জঙ্গি) একটি মজলিস (সভা) করেছে। অবশ্য তারা কী করবে, এ ব্যাপারে তারা যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখর আমরা ওই কক্ষে ছিলাম না। ইয়াসিন আরো জোর দিয়ে বলেন, ‘আপনি অবশ্যই জানেন, শেখের (আইএস-প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি) প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারীদের মাধ্যমে ইউরোপ ও আমেরিকায় অনেক হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন