আরো অপেক্ষা লালু সরদারের
সাত বছর ধরে শেষ হচ্ছে না প্রৌঢ় শামসুর হক ওরফে লালু সরকারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার বিচারকাজ। বাদী আদালতে এসে সাক্ষ্য না দেওয়ায় বারবার ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁকে।
বয়স ৮০ পেরিয়েছে আগেই। নিজের পায়ের ওপর ভর করে হাঁটার শক্তিটুকু পর্যন্ত নেই। লাঠি আর স্ত্রী নূরনাহারের কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটাচলা করেন তিনি। শ্বাসকষ্ট ও বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন তিনি।
গতকাল রোববার দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায় হুমকির একটি মামলায় ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিবুল হকের আদালতে হাজিরা দিতে আসেন লালু সরকার।
মামলাটি ঢাকা মহানগর হাকিম হাসিবুল হকের আদালতে বিচারাধীন। লালু সরকারের বিরুদ্ধে যখন মামলা দায়ের হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল ৭২ বছর। তাঁর বিরুদ্ধে বাদী আহাম্মদ চৌধুরী ২০০৯ সালের ২১ মার্চ হুমকির অভিযোগ এনে উত্তরা মডেল থানায় একটি জিডি করেন।
জিডিতে বাদী উল্লেখ করেন, ‘বাদী ও তাঁর অংশীদার আবদুল হাওলাদার এবং সিরাজ মিয়া উত্তরা থানাধীন আবদুল্লাহপুরে জমিতে মূল মালিক হযরত আলী, আফফাজ আলী, শহর আলী, ওমর আলীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রি করা আমমোক্তারনামার দলিলের মাধ্যমে পেয়ে মালিক হিসেবে ভোগ-দখল করতে থাকেন। এ অবস্থায় লালু সর্দার ও তাঁর স্ত্রী নূরনাহারকে কেয়ারটেকার হিসেবে দেখাশোনা করতে দেন।’ বাদী পরে ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে আসামি লালু সরদারসহ অন্য আসামিরা বাধা সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ করা হয়।
এ জিডির পর উত্তরা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াকুব আলী ঘটনার সত্য পেয়েছেন মর্মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে একটি মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেন।
পুলিশের কাছ থেকে এ প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ২০০৯ সালের মে মাসে আসামি শামসুল হকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আসামি শামসুল হক আদালত থেকে জামিন নেন।
জামিন আবেদনে শামসুলের আইনজীবী উল্লেখ করেন, মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আসামি বয়স্ক ও শ্বাসকষ্টের রোগী। শুধু আসামিকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এ মামলা করা হয়েছে।
পরে লালু সরদার বিভিন্ন সময়ে আদালতে হাজিরা দিয়ে সময়ের আবেদন করেছেন। প্রায় সাত বছর আদালতে নিয়মিত হাজির দেন সরদার। সর্বশেষ গত বছরের ২০ আগস্ট তিনি অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির হতে না পারায় ঢাকা মহানগর হাকিম হাসিবুল হক তাঁর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আইনজীবী নিরূপম চক্রবর্তীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন সরদার। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে, হাজিরা দেওয়ার পর সর্দারকে আদালতের বারান্দায় অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
আসামি শামসুল হক অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে এনটিভি অনলাইনকে জানান, বাদী মিথ্যা অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তিনি তাঁর জায়গায় কেয়ারটেকার হিসেবে থাকতেন। হঠাৎ তাঁকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বললে শামসুল হক কিছুদিন সময় চান। বাদী আসামিকে এক ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে বললে বাদী কাকুতি-মিনুতি করে একটু সময় চান।
লালু সরদার বলেন, বাদী ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাদী মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে খালি ঘুরাচ্ছেন। অসুস্থ অবস্থায় আদালতে আসতে অনেক কষ্ট হয়। সাততলায় ওঠা-নামা করতে পারি না বাবা। মাথা ঘুরাইয়া পইড়্যা গেছি। কেউ ধরবারও নাই। গরিবের কোনোখানে জায়গা নাই বাবা।’
বাদীর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন