আলসারের যন্ত্রণায় মুক্তি পেতে করণীয়

পেটের ভেতরে হওয়া ঘা বা আলসারের সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। রোগটির কারণ হিসেবে প্রথমেই অসচেতনতাকে দায়ী করা হয়। সচেতন থাকলে এই রোগ অনেকখানি প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়া বর্তমানে এই রোগের সফল চিকিৎসা সম্ভব। তবে রোগটি দ্রুত সারিয়ে না তোলা হলে রোগীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
পেটের দেয়ালে হওয়া ঘায়ের সঙ্গে খাবারের মধ্যে থাকা মসলা, তরল ইত্যাদির সংস্পর্শ হলে বা অ্যাসিডিটি হলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা হতে থাকে এবং পেট জ্বালা করতে থাকে যা সহ্য করা খুব কষ্টের। পেটের আলসার হওয়ার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।
১। কম পানি ও অপর্যাপ্ত ফলমূল খেলে
২। অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার খেলে
৩। দীর্ঘদিন ধরে খাবার খেতে অনিয়ম করা
৪। জীবাণুর আক্রমণ, যেমন হেলিকোব্যাকটার পাইলরি দিয়ে সংক্রমিত হলে এবং
৫। অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করলে আলসারের আশঙ্কা বেশি থাকে।
আলসার হলে এর কিছু লক্ষণ টের পাবেন।
১। এই রোগের সবচেয়ে প্রথম লক্ষণ হল তীব্র ব্যথা।
২। নাভী থেকে শুরু করে বুকের হাড় পর্যন্ত এই ব্যথা অনুভূত হতে থাকে।
৩। ব্যথা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে।
৪। পাকস্থলী খালি থাকলে ব্যথা আরও বেশি অনুভূত হয়।
৫। খাবার খেলে বা অ্যাসিডের ওষুধ খাওয়ার ফলে সাময়িকভাবে ব্যথার উপশম হয়।
৬। ব্যথা কিছুদিন বন্ধ থেকে আবার কয়েক সপ্তাহের জন্য ফিরে আসতে পারে।
৭। লাল অথবা কালো রঙয়ের রক্ত বমি হতে পারে।
৮। পায়খানার সাথে গাঢ় রঙয়ের রক্ত যাওয়া অথবা পায়খানার রঙ কালো অথবা আলকাতরার রঙয়ের মতো হওয়া।
৯। বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া।
১০। হঠাৎ করে শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
১১। খাবারে রুচির পরিবর্তন হওয়া।
ডাক্তারি পরামর্শে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে হতে পারে। আলসার ধরা পড়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো যায়। বস্তুত, আলসার সারানোর নানা উপায় রয়েছে। আলসার সেরে যাওয়ার পর ঠিকমতো ডায়েট চার্ট মেনে চলাও সবার অবশ্য কর্তব্য। সেক্ষেত্রে-
১। টক দই কম ফ্যাটের ডেয়ারি প্রোডাক্ট, বিশেষ করে দই আলসার সারাতে অসাধারণ কাজ করে।
২। মধু এমন একটি অ্যান্টিসেপটিক যা জ্বালা-পোড়া বা ঘা সারাতে লড়াই করে। মধু খেলে আলসার আর বাড়ে না। বরং ধীরে ধীরে কমবে।
৩। অলিভ অয়েল ও সূর্যমুখী তেল পেটের আলসারকে দূরে রাখার ভালো কাজ করে।
৪। বাধাকপিতে থাকে এস-মেথিলমেথিওনাইন যা আলসারের সঙ্গে লড়াই করে তা সারাতে সাহায্য করে।
৫। বাধাকপির মতো ফুলকপিও পেটের পক্ষে উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে অত্যধিক পরিমাণে সালফোরাফেন যা পেটের আলসার সারাতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও ফাইবার পেটের সুরক্ষা করে।
৬। অঙ্কুরিত ছোলা বা ডাল খেলে পেটের মধ্যে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নির্মুল হয়। পেট ভালো থাকে।
৭। নাসপাতিতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আলসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে বেশি পরিমাণে ফাইবার হজমে সাহায্য করে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন

জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন