আশুলিয়ায় নিহত জঙ্গির পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি
সাভারের আশুলিয়ায় জঙ্গি অভিযানে নিহত জেএমবির মূল অর্থযোগানদাতা আব্দুর রহমানের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম। অভিযানের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও নিশ্চিত করে নিহত জঙ্গির পরিচয় জানাতে পারেনি নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রই।
শনিবার ছয় ঘণ্টা জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষে রাত সাড়ে ৯টায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সংবাদ সম্মেলনে নিহত জঙ্গির একাধিক নাম ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন। এসময় তিনি আইনুল হক নাম ব্যবহার করে ওই জেএমবি নেতা গত ছয় মাস আগে বাসা ভাড়া নেন বলেও জানান। এছাড়া এনামুল হক, নাজমুল ইসলাম ও সরওয়ার হোসেনসহ একাধিক নাম ব্যবহারের কথা জানান।
এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর জঙ্গি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আশুলিয়া থানায় নিহত জঙ্গির স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রুমিকে প্রধান করে অস্ত্র ও সন্ত্রাস দমন আইনে বাদী হয়ে দুইটি মামলা দায়ের করেন র্যাব-৪ এর ডিএডি হুমায়ন কবীর। অপমৃত্যুর মামলাটি দায়ের করেন র্যাব-৪ এর সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল আহাদ। মামলার এজাহারেও নিহত জঙ্গির নাম আব্দুর রহমান ওরফে আইনুল হক উল্লেখ রয়েছে বলে জানানা আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আকবর আলী।
এর আগে নিহত আব্দুর রহমানের গর্ভবর্তী স্ত্রী ও তার তিন সন্তানকে নিজেদের হেফাজতে রাখে র্যাব-৪। এসময় রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী শাহনাজ তার স্বামী আব্দুর রহমান, নাজমুল ইসলাম ও সরওয়ার হোসেন এই তিনটি নামের কথা তাকে জানিয়েছেন এমন তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৪ এর স্কোয়াড কমান্ডার উনু মং।
অপরদিকে গত শনিবার থেকেই আজ পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রমতে, আব্দুর রহমান ওরফে আইনুল হক সাতক্ষীরা জেলার তুশখালী এলাকার আবদুল্লাহর ছেলে বলে জানা গেছে। তার স্ত্রী শাহানাজ আক্তারের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ এলাকার চান্দুরিয়া গ্রাম।
তবে গতকাল দেশের প্রথম সারির একটি পত্রিকার অনলাইনে ‘সাতক্ষীরায় নিহত জঙ্গি আব্দুর রহমানের খোঁজ মেলেনি’ এমন শিরোনামে সংবাদ প্রচারিত হয়। এরপর আজ সকালে ঢাকা জেলার আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোতেও নিহত জঙ্গি আব্দুর রহমান সাতক্ষীরা জেলার তুশখালী এলাকার আবদুল্লাহর ছেলে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এদিকে নিহত জঙ্গির পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া গৃহবধূ সম্পা জানান, আব্দুর রহমান নামের ওই ‘জঙ্গি’ একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে রহমানের স্ত্রী শাহনাজ তাকে জানিয়েছেন। তবে কখনই তারা দরজা খুলতেন না এমনকি কারো সাথে মিশতেনও না। চলাফেরা ছিল সাধারণ। বাসায় তেমন কোনো মালামাল ছিল না। মাঝে মাঝে গৃহবধূ শাহনাজ বোরকা ও হিজাব পরে কাঁচাবাজার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে বাইরে যেতেন। ছেলে তাহমিদ ও জাওয়াদকে শাহানাজ নিজেই পড়াতেন। আর বড় মেয়েটি একটি আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতো। তবে কোন মাদ্রাসায় তা জানেন না তিনি। আবদুর রহমান সব সময় শার্ট প্যান্ট পরতেন।
এছাড়াও বাড়ির সামনের মুদি ও ওষুধ দোকানি শাহিন ও জয়নাল আবেদীন জানান, নিহত রহমান, স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে কখনোই তাদের দোকানে কেনাকাটা করতে আসতো না। তাই তাদের তারা চেনেন না।
নিহত ওই জঙ্গি নেতার সামনের মৃধা ভিলার বাড়ির কেয়ারটেকার মিনা আক্তার জানান, গত ১২ বছর ধরে তিনি এই এলাকায় আছেন তবে নিহত আব্দুর রহমান ও তার পরিবারের কাউকেই তিনি দেখেননি।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার জঙ্গি অর্থদাতা এক জেএমবি নেতা আশুলিয়ার বসুন্ধরা এলাকায় মৃধা ভিলার পঞ্চম তলায় সপরিবারে গত ছয় মাস যাবৎ অবস্থান করছে এমন সংবাদে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে লাফিয়ে পড়ে আহত হন জঙ্গি আব্দুর রহমান। পরে রাতে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে আব্দুর রহমানের ফ্ল্যাট তল্লাশি করে নগদ ৩০ লাখ টাকা, অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, জিহাদি বইসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন