আসামিরা প্রকাশ্যে, পুলিশ বলছে আত্মগোপনে
জেলার দেলদুয়ার উপজেলার পাছ এলাসিন গ্রামের কৃষক মজনু হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। দীর্ঘ আড়াই মাস পরও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও রয়েছে অধরা। আসামিদের সঙ্গে সখ্যতার কারণে পুলিশ সম্পূরক এজাহার নিচ্ছে না বলে বাদীর অভিযোগ। এমনকি আসামিদের বাড়িঘর ক্রোক করার বিষয়েও পুলিশ আদালতে কোনো আবেদন করেনি।
সরেজমিনে জানা গেছে, টাঙ্গাইল শহর থেকে নাগরপুর সড়কে ১৪ কি.মি দূরে দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের পাছ এলাসিন গ্রামের মো. মজনু মিয়ার (৫০) সঙ্গে বাড়ির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশী মো. সাগর মিয়ার বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জের ধরে গত ১৮ জুলাই প্রতিবেশি মো. সাগর মিয়া (৬০), মো. এরশাদ (২৮), মো. রাসেদ (২৬) ও মো. মনিরুল ইসলাম (২২) পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী বাড়িতে গিয়ে মজনু মিয়া ও তার স্ত্রী মোছা. খাদিজা বেগমকে মারপিট করে।
উল্লেখিত ব্যক্তিদের রড ও লাঠির আঘাতে মজনু মিয়া রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্ত্রী খাদিজার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়। মজনু মিয়াকে প্রথমে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেয়া হয়। শরীরের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা নেয়ার পথে মজনু মিয়ার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দীর্ঘ ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে গত ২৮ জুলাই মজনু মিয়া পরাজিত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সাভার মডেল থানার এসআই এমদাদুল হক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ঘটনার পরদিন (১৯ জুলাই) মজনু মিয়ার স্ত্রী মোছা. খাদিজা বেগম বাদী হয়ে দেলদুয়ার থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ২৯ জুলাই ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।
মামলার বাদী খাদিজা বেগম দাবি করেন, পুলিশ মামলার এজাহার তাদের ইচ্ছেমত লিখে তার স্বাক্ষর নিয়ে এফআইআর করেছে। তার বর্ণনা মতে এজাহার লেখা হয় নাই। তিনি সম্পূরক এজাহার দিতে চান। কিন্তু আসামিদের সঙ্গে সখ্যতা থাকার কারণে পুলিশ তা নিচ্ছে না। বাদী ময়নাতদন্তের রিপোর্টের একটি কপি দেলদুয়ার থানা পুলিশকে এনে দিলেও তারা ক্রোকি পরওয়ানা চাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে, সম্পূরক এজাহার না নিলেও মামলার কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আসামিরা দেলদুয়ার উপজেলায়ই ঘোরাফেরা করলেও দীর্ঘ আড়াই মাসে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকার্ত মোশারফ হোসেন জানান, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে ঢাকা, সাভার, গাজিপুরসহ সন্দেহজনক স্থানে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে, খোঁজ পাওয়ামাত্রই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ক্রোকি পরোয়ানার জন্য ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রয়োজন, সেটা আসেনি বলে জানান ওসি।
তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ নিয়মানুযায়ী ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাঠাবে তা করা হয়নি।
অপরদিকে, মজনু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে একট্টা এলাকাবাসী। সাংবাদিক আসার সংবাদে মুহূর্তেই একত্রিত হন শতাধিক লোক। তারা মজনু হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
এলাকাবাসীর পক্ষে মো. শওকত আলী ও মো. ওমর আলী জানান, প্রায় এক বছর আগে মজনুর অনুপস্থিতিতে প্রথম স্ত্রী লাইলী বেগমকে প্রতিবেশী দুর্বৃত্তরা গলাটিপে হত্যা করে রান্না ঘরের আড়ার (ধর্ণার) সঙ্গে ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা হয়।
গ্রামবাসী জানায়, ওই ঘটনাটি গ্রাম্য সালিশে সুরাহা না করে আইনের মাধ্যমে সমাধান করা হলে দুর্বৃত্তরা অত্যন্ত সহজ-সরল কৃষক মজনুকে হত্যা করতে সাহসী হতো না। গ্রামবাসী মজনু হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন