আসিফ নজরুল: সাকিবের প্রতি মানুষের ক্ষোভ অযৌক্তিক নয়

জনগণের প্রতিবাদ ও ক্ষোভের মুখে দেশে ফিরে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলা হচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। তবে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে তার অবস্থানের কারণে এ বিষয়টি অযৌক্তিক বলে মনে করেন না অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ক্রীড়া জগতের একের পর এক তারকা তাতে সমর্থন দিলেও সে সময় চুপ ছিলেন সাকিব আল হাসান। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে দেশজুড়ে গণহত্যা চললেও সরকারের পক্ষেই অবস্থান ছিল সাকিবের। ফলে তার প্রতি ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মায়। যার প্রভাবেই দেশে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলে বিদায় নেওয়া হচ্ছে না এই অলরাউন্ডারের।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে কথা বলেন ড. আসিফ নজরুল। দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আসিফ নজরুল বলেন, “সাকিব আমাকে কয়েকবার ফোন দিয়েছিল। আমি বলেছি, উপদেষ্টা আসিফের সঙ্গে কথা বলতে, যেহেতু এটি আমার বিষয় নয়।”
আইন উপদেষ্টা বলেন, “সাকিবের মতো ক্রিকেটার বাংলাদেশের ইতিহাসে আর আসেনি। সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি হতে পারত। কিন্তু যখন আন্দোলন চলছে, মানুষ মরছে, ঘরে ঘরে কান্না, ক্ষোভ-কষ্ট- সাকিব তখন পোস্ট দিলো যে, সে কোথাও আনন্দ করছে। এটা কি সম্ভব একজন মানুষের পক্ষে?”
তবে তার জুয়া ও নানা উশৃঙ্খল আচরণের জন্য শেখ হাসিনার সরকার দায়ী বলে মনে করেন ড. নজরুল। তিনি বলেন, “(শেখ হাসিনা সরকারের আমলে) এমন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি করা হয়েছে, যেখানে শেখ হাসিনার প্রতি অনুগত থাকলে আপনি যা ইচ্ছা করতে পারেন; আপনার শাস্তি হবে না। এটা অনেক মানুষকে বিভ্রান্ত করে, তাকেও করেছে।”
সাকিবের প্রতি বর্তমানে দেশের মানুষের যে প্রতিক্রিয়া, তাতে তিনি ব্যথিত হলেও জনগণের অনুভূতিকে মোটেও অযৌক্তিক বলে মনে হয় না বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তার কথায়, “মায়া লাগে। কিন্তু তার প্রতি মানুষ যে ক্ষোভ দেখায়, সেটি একটুও অযৌক্তিক লাগে না।”
উল্লেখ্য, ভারত সফর চলাকালে সংবাদ সম্মেলন করে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা জানিয়ে দেন সাকিব। সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে দেশে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে বিদায় নিতে চান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে জরিমানার মুখেও পড়তে হয়েছে এই অলরাউন্ডারকে। ফলে তার দেশে ফেরা নিয়ে জটিলতা ছিলই। গত রবিবার সাকিবকে দেশে ফেরাতে সব রকম নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া। এমনকি বুধবার মিরপুর টেস্টের জন্য তাকে নিয়েই স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি।
কিন্তু পরের দিনই ঘটনা বিপরীত দিকে মোড় নেয়। ১৭ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারের অবসান করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের পথে ছিলেন সাকিব। মাঝে দুবাইয়ে তার যাত্রাবিরতির সময় বদলে যায় দৃশ্যপট। সেখান থেকে সাকিব নিজেই জানান, আপাতত দেশে ফেরা হচ্ছে না তার। নিরাপত্তার কথা ভেবেই সংশ্লিষ্টরা তাকে এমন পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ফলে নিজ ভূমি থেকে টেস্টে বিদায় নেওয়া আর হয়ে উঠল না দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটারের। ভারতের বিপক্ষে কানপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট হয়ে থাকল সাকিবের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি গণ অধিকার পরিষদের
জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছেবিস্তারিত পড়ুন

নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া
গণ অধিকার পরিষদের আহত সভাপতি নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেনবিস্তারিত পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি ক্যাথলিক স্কুলে জানালা দিয়েবিস্তারিত পড়ুন