রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

হোসনি দালানে বোমা হামলা

আহতদের মধ্যে সুন্নিই বেশি, বোমা মারলো কারা?

ছয় বছর বয়সী শিশু মেহেদী হাসান শরীরের যন্ত্রণায় কাতর। পাশেই ব্যান্ডেজে মোড়ানো তার মা রিনাও। বারবার কুকড়ে উঠছে হাসান। আর নিরবে চোখের পানি ঝড়ছে মায়ের।

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। রিনা কেঁদে বলেন, ‘আমরা সুন্নি। আমার তিন বোনের কোনো ছেলে নাই। তাই বোনদের ছেলে সন্তানের আশায় মিছিলে যাওয়া মানত ছিল। সবাই মিলে যাই। অনেক সুন্নি এভাবে মিছিলে যায়। আমার মনে হয় শিয়াদের চেয়ে মিছিলে সুন্নি বেশি থাকে। কেন, কারা আমার বাচ্চারে বোমা মারবে?’

আজিমপুরের নিউ পল্টন এলাকায় স্বামী ইউনূসের সঙ্গে থাকেন রিনা। তাদের ছেলে হাসান আজিমপুর লেডিস ক্লাব স্কুলে সবেমাত্র নার্সারিতে পড়ছে। এমন বয়সে নাশকতায় পড়ে ছেলের জীবন ও ভষিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় আহত মা। এরই সঙ্গে হামলা নিয়ে মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। এই প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান, ‘কারা বোমা মারছে, জানা গেছে? ধরা পড়ছে?’ এমন প্রশ্ন আহত সবার মুখেই। তারা বলছেন, গত ৪০০ বছর ধরে শিয়া-সুন্নি সম্প্রদায় মিলেই হোসনি দালন থেকে তাজিয়া মিছিল বের করে আসছে। আয়োজন শিয়া সম্প্রদায় করলেও মিছিলে বেশিরভাগই সুন্নি থাকেন। বোমা বিস্ফোরণে আহতদের বেশিরভাগই সুন্নি। নিহত শিশু সাঞ্জুও সুন্নি সম্প্রদায়ের।

হাসপাতালে ঘুরে জানা গেছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ১৬জনের মধ্যে লালবাগারে পোস্তা এলাকার লেইস-ফিতা বিক্রেতা জামাল হকের অবস্থায়ই বেশি শঙ্কায়। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। জামালের ছেলে মো. রিপন কেঁদে বলেন, ‘আমারাও সুন্নি। মহররমে কিছু অতিরিক্ত আয়ের আশায় তিনি গিয়েছিলেন হোসনি দালান এলাকায়।এখানে কোনো মুসলমান বোমা মারতে পারে এটা আমার বিশ্বাস হয়না।’ রিপন জানান, সোমবার তার বাবার মাথা থেকে বোমার স্প্লিন্টার বের করা হয়েছে।

১০ বছরের শিশু সোহান পুরান ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। আসছে ডিসেম্বর মাসে সমাপনী পরীক্ষা। পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে। শুধু সমাপনী-ই নয়; জীবনের আগত গন্ডি পেরিয়ে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার- এমন আশায় প্রহর গুণতেন তার পরিবারও। এখন তাকে বাঁচানোই সবার প্রার্থনা। এমন শঙ্কা জানালেন মা পারভিন আক্তার। তারাও সুন্নি। মানত ছিল-তাই বাবা মো. সেলিমের হাত ধরে আশুরার মিছিলে যোগ দিতে পাঠানো হয় সোহানকে।’ কেঁদে বলেন পারভিন। ‘২ ব্যাগ রক্ত দিছি। আরো চার ব্যাগ লাগবে। পেটে অপারেশন করে স্প্লিন্টার বাইর করতে হবে। আপনারা আমার বাচ্চার জন্য দোয়া কইরেন।’- মায়ের দুই চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। বোমায় সোহানের বাবা সেলিমও আহত হয়েছেন। তার বা হাতের কনুই বোমার স্পিন্টারে ঝলসে গেছে। তবুও নিজেকে নিয়ে চিন্তিত নন তিনি।

দেড় বছরের কায়েস মায়ের কোলে চড়ে গিয়েছিল তাজিয়া মিছিলে। এখন তার ঠিকানা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিছানা। কায়েসের মা হালিমা বেগমও আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ভাই মানত ছিল তাই এই বাচ্চাডা নিয়া আসছিলাম। এত বড় বিপদ জানলে আইতাম না।’

২০৬ নং ওয়ার্ডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে সাত বছরের শিশু স্নেহা। তাকে ঘিরে বসে আছেন বাবা রাশেদ, মা সুমি আক্তারসহ আত্মীয়-স্বজনরা। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলেই নিহত সাজ্জাদ হোসেন সাঞ্জুর ভাতিজি স্নেহা। তারা সবাই সুন্নি। সাঞ্জুকে হারিয়ে স্নেহাকে নিয়ে আতঙ্কে আছেন পরিবারের সদস্যরা। না জানি সানজুর মতো স্নেহাকেও না ফেরার দেশে চলে যেতে হয়! স্নেহার বাবা রাশেদ বলেন, ওই দিন রাতে তিনি নিজে, স্ত্রী সুমি, ছোট ভাই সাঞ্জু, ভাগিনা রাজন, শ্বাশুরি আয়শা, দুই সন্তান স্নেহা ও শিহাবকে নিয়ে তাজিয়া মিছিলে যান। একমাত্র ছেলে শিহাবের বয়স যখন আড়াই বছর। তখনও সে কথা বলতে পারতো না। ছেলে যদি কথা বলতে পারে তাহলে তাকে বেস্তা বানিয়ে তাজিয়া মিছিলে অংশগ্রহণ করার মানত ছিল। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাজিয়া মিছিলে যান রাশেদ। কিন্তু শখের এই মিছিল-ই যেন কাল হলো। ভাই সানজুকে হারাতে হলো, পরিবারের চারজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে- সানোয়ার হোসেন, জনি, নূর হোসেন, রুনা বেগম, মনির হোসেন, কামাল হোসেন, ইকরামুল হোসেন, রাকিব ও রাসেলের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। এদের মধ্যে রাকিব ও সোহানের অবস্থাও গুরুতর।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৪৯ মিনিটে রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালানের ইমামবাড়া চত্বরে পরপর তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সাজ্জাদ হোসেন সাঞ্জু নামে এক শিশু নিহত এবং শতাধিক আহত হয়।বাংলামেইল

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী

কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায়  ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।  মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন

এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন এমডি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী

এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগ দিয়েছেন সাবেকবিস্তারিত পড়ুন

কক্সবাজারে পাহাড় ধসে প্রাণ গেল মসজিদের মোয়াজ্জেম ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর

কক্সবাজারে পাহাড় ধসে মারা গেলেন মসজিদের এক মুয়াজ্জিন এবং তারবিস্তারিত পড়ুন

  • গুরুতর অসুস্থ কে এম সফিউল্লাহ
  • সৌদি আরবে হজ পালনের সময় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু
  • ঈদযাত্রায় মহাসড়কে  চলছে ধীরগতিতে গাড়ি
  • রাজধানীর পান্হপথে ৮০ কোটি টাকার খাসজমি উদ্ধার
  • বুয়েট পাচ্ছে ১০০ কোটি টাকার ন্যানো ল্যাব  
  • বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এক বাসার রান্নাঘরে বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ ৪
  • বাজেট হয় কাগজে কলমে, প্রতিফলন নেই সমাজে
  • রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
  • ভেঙে যাচ্ছে সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকা
  • ঢাকার প্রাকৃতিক জলাশয় রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে: বিভাগীয় কমিশনার
  • রাজধানীতে পিস্তল লোড-ডাউনলোডের সময় অস্ত্রের দোকানের কর্মচারী গুলিবিদ্ধ
  • গাজীপুরে ট্রাকের পেছনে পিকআপের ধাক্কায় নিহত ২