ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘মহানুভবতার দেয়াল’
সমাজে মূলত মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্যগ্রস্ত মানুষের সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষরা কৃষিজীবী। কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অভাব অনটনের মধ্য দিয়েই চলে জীবন-জীবিকা। এসব দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের কষ্ট করে পড়ালেখা করতে হয়। অনেক পরিবারের ছেলে-মেয়েরা এক বেলা কাজ করে স্কুলে যায়। আবার স্কুল থেকে ফিরে এসে কাজ করে। এসব পরিবারে সন্তানরা ভালো পোশাক পরে স্কুলে যেতে পারে না। তাদের সাধ থাকলেও পোশাক কিনার জন্য সাধ্য থাকে না । ফলে পুরনো ও ছেঁড়া জামা-কাপড় পরে এসব শিশুদের স্কুলে যেতে হয়।
এ চিন্ত চেতনা থেকে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম গরীব শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করেছেন ‘মহানুভবতার দেয়াল’। যেখানে লিখা আছে-‘যা তোমার প্রয়োজন নেই-তা এখানে রাখ, তোমার যা প্রয়োজন তা এখান থেকে নাও’। অর্থ্যাৎ আমাদের অনেক পরিবারের সন্তানদের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পোশাক কিনে দিই। তাদের এ বাড়তি পোশাকগুলো অব্যবহৃত থাকে। কিন্তু যেসব গরীব পরিবারের সন্তানদের জন্য যেটুকু প্রয়োজন অভিভাবকদের তাও মেটাতে পারে না। এ নিয়মটি তাদের জন্য চালু হলে। এখানে সমানভাবে সব শিশুদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন সচেতনমহল।
মঙ্গলবার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের সিরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ প্রথা চালু করা হয়েছে। এ সময় উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সহকারী প্রকৌশলী মতিউর রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে পশ্চিমে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মহানুভবতার দেয়ালে কয়েকটি হ্যাঙ্গার ঝুলানো আছে। হ্যাঙ্গারগুলোতে ঝুলছে শিক্ষার্থীদের দেয়া বিভিন্ন আকারে জামা, প্যান্ট, গেঞ্জি, পায়জামা, ফ্রক ও কামিজ। যেসব শিক্ষার্থীরা তাদের ভালো পোশাক কেনার সামর্থ নেই মূলত তারাই এসব পোশাক নিচ্ছে। গরীব শিক্ষর্থীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাদের প্রয়োজন অনুসারে দেয়াল থেকে পোশাক সংগ্রহ করছে। অনেকে আবার মহানুভবতার দেয়ালে তাদের অপ্রয়োজনীয় পোশাক ঝুলিয়ে রাখছে। এমন দেয়াল তৈরি হওয়ায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে মহানুভবতা জাগ্রত হবে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, মহানুভবতার দেয়াল হওয়ার আমাদের জন্য খুবই সুবিধা হয়েছে। আমরা এতোদিন ভালো পোশাক পরে স্কুলে আসতে পারতাম না। দেয়াল থেকে ভালো পোশাক নিয়ে স্কুলে এসেছি। খুব ভালো লাগছে পোশাক পেয়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবেরা খাতুন বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী গরীব। তারা এক পোশাক পরে স্কুলে আসে আবার বাড়িতেও ব্যবহার করে। ফলে সহজেই ময়লা হয়ে যায়। এখন থেকে স্কুল ড্রেস পরে স্কুলে আসবে এবং পুরনো পোশাক তারা বাড়িতে ব্যবহার করবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম বলেন, মূলত গরিব শিশুদের জন্য ‘মহানুভবতার দেয়াল’ চালু করা হয়েছে। এসব শিশুরা অনেক সময় ছেঁড়া পোশাক পরে তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা করে। ছেঁড়া পোশাকে তাদের খারাপ লাগে। এখন তারা এই লজ্জা থেকে বের হতে পারবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ‘মহানুভবতার দেয়াল’ তৈরি করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন