ইউপির প্রার্থী হতে যা লাগবে
শীত শেষে বসন্তের আগমন ও ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে পূজা উৎসবকে সঙ্গী করে ইউপি নির্বাচনের আগাম প্রচারের নেমেছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে প্রতীক না পাওয়ার আগে কোন ধরনের প্রচারণা চালানোর বিধান নেই। এরপরও থেমে নেই প্রার্থীদের প্রচারণা।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি সর্বশেষ দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় জমে উঠে নির্বাচনটি। এবার প্রধান দু’দলের লড়াই হচ্ছে তৃণমূলের ইউপি নির্বাচনেও।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় সরকারে সবচেয়ে জমজমাট ভোট হয় ইউপিতে। স্বল্প ভোটে সদস্য পদের লড়াইয়ে প্রতিটি বাড়িতে চলে হিসাব-নিকাশ, যাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হয় হাড্ডাহাড্ডি। এবার দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান ভোট থাকায় জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া থাকবে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে।
স্থানীয় সরকারের দলভিত্তিক পৌর নির্বাচনে ২০টি দল অংশ নিয়েছে, ইউপিতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে। ইসিতে নিবন্ধিত রয়েছে ৪০টি দল।
দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম-স্বাক্ষর ও পদবী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিটার্নিং অফিসারকে ও ইসিতে জমা দেওয়ার জন্যে নিবন্ধিত ৪০টি দলের চেয়ারম্যান/মহাসচিবকে তফসিলের পরই গত বৃহস্পতিবার রাতে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান ইসির সহকারি সচিব আশফাকুর রহমান।
এদিকে দেশজুড়ে ইউপি নির্বাচনের প্রথমধাপে ৭৫২ ইউপির তফসিল ঘোষণা করায় সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায়ও নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ সচিব সামসুল আলম বলেন, “১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের আগাম প্রচার সামগ্রী সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ উদ্যোগে সরিয়ে বা মুছে ফেলতে হবে। তা না হলে মনোনয়ন দাখিল করলে বা প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তা থেকে জেলা প্রশাসক পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে বলে জানান উপ সচিব সামসুল আলম।
“যারা বা যাদের পক্ষে দেয়াল লিখন, পোস্টার ইত্যাদি লাগানো হয়েছে এবং নববর্ষ-ঈদ-ধর্মীয় বা অন্য কোনো উপলক্ষ্যে প্রচারণার আঙ্গিকে কার্যাক্রম নেওয়া হয়েছে তা ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিজ দায়িত্বে মুছে বা তুলে ফেলতে হবে। এরপর কারো পোস্টার, দেয়াল লিখন বা আগাম প্রচার সামগ্রী পাওয়া গেলে ছবি তুলে রাখতে হবে এবং মনোনয়নপত্র দাখিল করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
সংসদ, সিটি, পৌর, উপজেলায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে থাকলেও ইউপিতে এ বিধান নেই।
এক্ষেত্রে বিধিলঙ্ঘনের জন্য প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের দণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দলকেও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হতে যা লাগবে:-
ইসির উপ সচিব সামসুল আলম জানান, অন্য নির্বাচনের মতো ইউপিতে হলফনামা ও টিআইএন নম্বর দেওয়ার বিষয়ে প্রার্থীদের যেমন বাধ্যবাধকতা নেই, তেমনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতেও নেই কোনো শর্তারোপ।
তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে দলীয় প্রত্যয়ন লাগবে। ঋণ খেলাপি, সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ৫ বছর পার না হলে, ইউপি ঠিকাদার হলে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হবে বাছাইয়ে।
প্রস্তাবক-সমর্থকের স্বাক্ষর লাগবে মনোনয়নপত্রে, তারা একই পদের অন্য মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর দিতে পারবে না; এক ব্যক্তি একাধিক নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবে না।
চেয়ারম্যান পদে জামানত ৫ হাজার টাকা ও সদস্য পদে এক হাজার টাকা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য ছবিছাড়া সিডি পাবেন প্রার্থীরা ৫শ’ টাকা দিয়ে।
চেয়ারম্যান পদে ৫ লাখ টাকা ও সদস্য পদে এক লাখ টাকা ব্যয়ের সুযোগ রয়েছে। এর বাইরে চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত খরচ ৫০ হাজার টাকা ও সদস্য ১০ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারবেন।অবশ্য চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ব্যয় রিটার্ন জমা দিতে হলেও সদস্যদের তা দিতে হবে না।তফসিল ঘোষণার পরই প্রার্থীরা চাইলে রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার বিধান রয়েছে।
ইসির সহকারি সচিব আশফাকুর রহমান বলেন, গত কাল শুক্রবার ঢাকা থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় ইউপি’র মনোনয়নপত্র পাঠানো হয়েছে প্রেস থেকে। আজ শনিবার পৌঁছে যাবে প্রতিটি জায়গায়। প্রার্থীরা চাইলে শনিবার থেকেই তা সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবে।”
জানতে চাইলে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ সচিব সামসুল আলম বলেন, প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা ও সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এখন কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। রিটার্নিং অফিসার স্থানীয়ভাবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠুভাবে কাজ সম্পন্ন করবেন।
তিনি জানান, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও সার্বিক কাজে রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন, পুলিশের সহায়তা নেবে। রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্টদেরও ইসিকে সহযোগিতা করতে হবে।
ইউপিতে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা তিনটি ইউপি’র দায়িত্বে থাকবেন। উপজেলার বাকি ইউপিগুলোয় সরকারের অন্য সংস্থার উপজেলা কর্মকর্তারা দায়িত্ব বন্টন করবে।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন দাখিলের আগে বৈঠক করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ে মনোনয়নপত্র পূরণ থেকে বিধি প্রতিপালনের বিষয়ে ধারণা, অপরাধের দণ্ড ও সহযোগিতা চাইতে এ বৈঠক করতে হবে। এতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ইউএনও, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ওসি ও রিটার্নিং অফিসারদের উপস্থিত রাখার নির্দেশনাও দিয়েছে ইসি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকালে ইসি ঘোষিত ৭৫২ ইউপি’র ভোট হবে ২২ মার্চ। ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের। ২ মার্চ পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় রয়েছে বৈধ প্রার্থীদের।৩ মার্চ প্রতীক পেয়েই প্রচারণায় যেতে পারবেন পার্থীরা।২২ মার্চ ভোট।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন