ইউপি নির্বাচনঃ নৌকার হাল জেএমবি নেতার হাতে
রাজশাহীর বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেলেন সেই জেএমবি নেতা আলমগীর সরকার। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জেএমবির শীর্ষ নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাইয়ের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। তার বাড়িতে জেএমবির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের ভিডিও চিত্র রয়েছে। যা গণমাধ্যমেও এসেছে।
আলমগীর সরকার শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পান।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার তহিদুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। যাদের মধ্যে আলমগীর সরকার নৌকা প্রতীক, আবদুস সালাম আনারস, নাসির উদ্দিন লাঙ্গল, জিতেন্দ্র নাথ হাতুড়ি, আবদুর রাজ্জাক মোটরসাইকেল ও মুকুল হোসেন চশমা প্রতীক পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের চিঠি থাকায় তাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ৭ মে চতুর্থ দফায় বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর দুইদিন আগে ৫ মে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আবদুস সালাম। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন আলমগীর সরকার। জেএমবি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আবদুস সালামের মনোনয়ন বাতিল করে আওয়ামী লীগ।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর স্থগিত ওই ১৬টি ইউনিয়নে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩১ অক্টোবর নির্বাচন। নতুন তফসিলে নির্বাচনের জন্য মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্র থেকে বাগমারার এই ১৬ ইউনিয়নের জন্য দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের কাছে চিঠি ইস্যু করে। গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তন করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আলমগীর সরকারকে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান-উল হক মাসুদ জানান, স্থগিত হওয়া নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আবদুস সালাম, ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাস আলী মোল্লা ও আলমগীর সরকার দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সে বার দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন আবদুস সালাম। কিন্তু এবার তাকে বাদ দিয়ে আলমগীর সরকার দলীয় মনোনয়ন পান। গত ৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের চিঠি ইস্যু করা হয়। দলের সভানেত্রীর স্বাক্ষরিত ১৬টি চিঠি জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তিনি গ্রহণ করেন। ওই সময় আলমগীর সেখানে উপস্থিত থাকায় তার কাছে চিঠিটি হস্তান্তর করা হয়। অন্যদের বাগমারায় গিয়ে দলের প্রার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে এবার তিনটিতে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন হয়। গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে আবদুস সালামের পরিবর্তে আলমগীর সরকার, হামিরকুৎসায় আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে ছাবিনুন নাহার ও যোগীপাড়ায় সোহাগ হোসেনের পরিবর্তে মোস্তফা কামালকে এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এবার দলীয় মনোনয়নের জন্য জেলার কাছে কোনো তালিকা চাওয়া হয়নি। কেন্দ্র থেকে সরাসরি দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
আসাদ আরও বলেন, আলমগীর সরকারের বাড়িতে ২০০৪ সালে জেএমবি নেতাদের বৈঠক হতো, তা সবাই জানে। তার ভিডিও চিত্র আছে। এ জন্য স্থগিত হওয়া ওই নির্বাচনে তার নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। কিন্তু কীভাবে এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন তা জানা নেই। তবে আলমগীর সরকারের দলীয় মনোনয়ন বাতিলের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রে সুপারিশ করা হয়েছিল। এরপরও তার মনোনয়ন কেন বাতিল হয়নি সেটিও জানা নেই বলে জানান আসাদ।
উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেব বলেন, আলমগীর সরকার প্রথমে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকায় তাকে না দিয়ে ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনের নাম পাঠানো হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন
স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন