সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

ইচ্ছা অনিচ্ছায় চলছে নিয়োগ-বদলি

স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাধারণভাবে অনুসরণযোগ্য নীতি বা রীতি পালনের বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। উল্টো ক্রমান্বয়ে তা প্রকট হয়েছে। সচিবালয় তথা কেন্দ্রীয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তা নিয়োগ-বদলির নিয়ামক হচ্ছে কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের শর্ত এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে। কোন কর্মকর্তা কতদিন কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগে থাকবেন বা থাকবেন না কিংবা কাকে বদলি করে কোথায় নিয়োগ (পোস্টিং) দেয়া হবে সেটি নির্ভর করে শুধু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার উপর। সাধারণভাবে অনুসরণযোগ্য নীতির কথা বলা হলেও কার্যত সেটি স্বল্পমাত্রায় নিরীহদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে থাকে। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাধারণভাবে অনুসরণযোগ্য নীতি বা রীতি পালনের বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। উল্টো ক্রমান্বয়ে তা প্রকট হয়েছে। গত ৯ নভেম্বর অবশ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের জন্য প্রযোজ্য একটি নীতিমালা জারি করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রের ক্ষেত্রে নীতিমালায় কোন স্তরের কর্মকর্তা এক পদে কতদিন থাকতে পারবেন বা একই মন্ত্রণালয়ে কতদিন থাকবেন সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা নেই।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবি কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী গত রবিবার নিজ দপ্তরে বলেন, সচিবালয়ের ভেতরে কর্মকর্তাদের নিয়োগ-বদলির তেমন নীতিমালা ছিল না। এবার একটি সমন্বিত নীতিমালা করা হয়েছে। তবে নিয়োগ-বদলির ক্ষেত্রে একটি সাধারণ রীতিতো অনুসরণ করাই হয়ে থাকে। তিনি বলেন, সাধারণভাবে তিন বছরের বেশি কাউকে (ব্যতিক্রম বাদে) একই মন্ত্রণালয় বা বিভাগে বা একই পদে রাখা হয় না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশেষায়িত কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে একেকজন কর্মকর্তার সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত রাখার নজির রয়েছে। অনেকেই তাই ওইসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কাজ করার সুযোগ পান না। আর মাঠ প্রশাসনের ক্ষেত্রে চিত্রটা কিছু ভিন্ন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমপি, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সাগরেদদের বিরাগভাজন হলে, নীতিমালার শর্তে যাই থাকুক না কেন, সেটি অনুসরণের উপায় থাকে না। অকারণে যখন তখন বদলির খড়গ নেমে আসে। আবার অনেকে এমন পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে বছরের পর বছর মাঠেই কাটিয়ে দিতে পারেন। আবার উভয়পক্ষের (বদলিকারক ও বদলিযোগ্য) মধ্যে সমঝোতা থাকলে ইচ্ছা পূরণে নীতিমালা বাধা হয় না।

কেন্দ্রীয় প্রশাসনে যা প্রকট: মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রী যদি কোনো কর্মকর্তাকে নিজ মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জন্য পছন্দ করেন সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের পছন্দের মিল হলে তো ভাল-না হলে ক্ষমতাসীন দলের আদর্শিক ভাবনার বিপক্ষের কর্মকর্তা (চাহিত কর্মকর্তাকে) চিহ্নিত করে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধ উপেক্ষা করা হয়। আবার ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। কিছুক্ষেত্রে সরকারের আদর্শিক ভাবনার বিপরীত চিন্তার কর্মকর্তার জন্যও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে তদ্বির আসে। সে ক্ষেত্রেও তদ্বির উপেক্ষিত হয়। দীর্ঘদিন কোনো মন্ত্রণালয়ে থাকা কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিতে বললেও কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ই মূলত সর্বজনীন নীতিমালা (যা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) করার দায়িত্বে। কিন্তু খোদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, এখানেই বড় গলদ। সর্বোচ্চ ১০ এবং সর্বনিম্ন সাড়ে তিন বছর পর্যন্ত একেক জন কর্মকর্তা সেখানে আছেন। এই মন্ত্রণালয়ে ছয়জন অতিরিক্ত সচিব আছেন। সর্বোচ্চ সময় ৭ বছর ১০ মাস ২০ দিন থেকে শুরু করে নিম্নে ৩ বছর ৩ মাস ৯ দিন পর্যন্ত একেকজন কর্মকর্তা নিয়োজিত আছেন।

ওই একই মন্ত্রণালয়ে ৮ জন যুগ্ম সচিব আছেন। সর্বোচ্চ ১০ বছর ৬ মাস ২৩ দিন এবং নিম্নে আছেন ৩ বছর ১৭ দিন। ৮ জন উপসচিবের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ বছর ৬ মাস ১৪ দিন আর নিম্নে তিন বছর দুই মাস ৫ দিন ধরে একেকজন কর্মকর্তা নিয়োজিত আছেন। ৮ জন সিনিয়র সহকারী সচিবের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ বছর ৬ মাস ১৪ দিন এবং নিম্নে ৩ বছর ১ মাস ৭ দিন আছেন।

এছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও একাধিক কর্মকর্তা ১০ থেকে নিচে চার বছরের বেশি সময় ধরে কর্মকর্তা নিয়োজিত আছেন। এসব কর্মকর্তাকে বদলি না করার ঘটনা যেমন আছে তেমনি চাইলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বদলি করা হয় না।

একাধিক মন্ত্রণালয় থেকে খোদ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বারবার তাগিদ দিয়েও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে রাজি করানো যায় না-কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করার জন্য। আবার কাউকে পছন্দ করে চাইলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পদখালি নেই, ক্ষমতাসীন দলের আদর্শিক চিন্তার বিপরীত, দক্ষতা-সক্ষমতার প্রশ্ন তুলে মন্ত্রীদের পছন্দ উপেক্ষা করে। অথচ বিপরীত আদর্শের বলে পরিচিত অসংখ্য কর্মকর্তাকে এখন স্পর্শকাতর পদে নিয়োজিত রাখা হয়েছে। যা নিয়ে প্রায়শই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলে পরিচিতি পাওয়া কর্মকর্তারা বিস্ময় প্রকাশ করে থাকেন। এ চিত্র যে শুধু সচিবালয়ে তাই নয়, মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদেও তারা রয়েছেন। আর এমনটি হওয়ার মূল কারণই ইচ্ছা-অনিচ্ছা। এটিকেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার প্রয়োগ।

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী একাধিক কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, এখন যারা নিয়োগ-বদলি পদোন্নতির মূল দায়িত্বে আছেন বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে একইসঙ্গে তারা না পাওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। এখনকার নীতিনির্ধারক অনেককেই ঢাকার বাইরে সংযুক্ত থেকে সামাজিক অপমান সহ্য করেছেন। আর এখন যখন তারা কর্তৃপক্ষ তখন সেই দুঃখের সঙ্গীদের তারা ভুলে নিজ নিজ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তারা বলছেন, ভাল পদে কাজ করার সুযোগ দেয়া না হলে তারা সক্ষমতা অর্জন করবেন কীভাবে। ১০ বছর যদি এক ব্যক্তি নিচ থেকে উপর পর্যন্ত একই মন্ত্রণালয়ের পদ দখল করে রাখেন বা রাখার সুযোগ দেয়া হয় সে ক্ষেত্রে নতুন কেউ সেখানে যাবেন কি করে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বলছেন, সকলকে ঘুরে ফিরে বিভিন্ন পদে কাজ করার সুযোগ দেয়ার ইচ্ছা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রশাসনের জন্য জারি করা নীতিমালা কার্যকর করা গেলে এসব সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে।

নতুন নীতিমালা: বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদায়ন নীতিমালাটি গত ৯ নভেম্বর জারি করা হয়েছে। মাঠ ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পদায়নের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও নীতিমালায় যেসব পদের শ্রেণি বিন্যাস দেখানো হয়েছে সেখানে সচিবালয়ে মাঝারি বা সর্বোচ্চ পদের উল্লেখ নেই। নীতিমালায় শুধু সহকারী কমিশনার (শিক্ষানবিশ), সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সিনিয়র সহকারী সচিব) পদের উল্লেখ আছে।

সহকারী কমিশনার হিসাবে নবনিয়োগকৃতরা নিজ বিভাগে নিযুক্তি পাবেন না, শিক্ষানবিশকালে বদলি না করার কথা বলা হলেও অনিবার্য কারণের কথা বলে বিভাগের কোনো জেলায় নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। চাকরির ছয় বছর পূর্ণ হওয়ার পর কাউকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদে নিয়োগের যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে। এ পদের কর্মকাল হবে দুই বছর। যদিও এখন এ পদে চার-পাঁচ বছর পর্যন্ত রাখার সংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়।

সহকারী কমিশনার ও ইউএনও হিসাবে ৮ বছর চাকরির পর কাউকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিয়োগের বিধান আছে নীতিমালায়। ২০০৬ সালের ১ জুলাই বা তারপরে চাকরিতে যোগ দেয়া কর্মকর্তাদের কেউ মাঠ পর্যায়ে ৫ বছর কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন না করলে তাকে মন্ত্রণালয় বা প্রেষণে নিয়োগ করা যাবে না।

সূত্র: ইত্তেফাক

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না

গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন

জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে ‍সুবিধা পাওয়া যাবে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন

ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন

  • শাকিব: আমার ক্যারিয়ারের সব বিগ হিট সিনেমা ঈদ ছাড়াই এসেছে
  • এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান ৬১.১% মানুষ, সংস্কার শেষে ৬৫.৯%
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুপক্ষের সংঘর্ষ
  • ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ১০ মৃত্যু
  • জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করার পরামর্শ কমিশনের
  • দেশের সংকটে যে সমাধান দেখছেন তারেক রহমান
  • যে কারণে প্রতিমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ‘হেফাজতের আপত্তির মুখে’ নারায়ণগঞ্জে লালন মেলা বন্ধ
  • স্বর্ণের দামে ফের বড় লাফ, এগোচ্ছে নতুন রেকর্ডের দিকে
  • টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
  • রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
  • যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা