ইসলামী সম্মেলনে ট্রাম্পের অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্য কী?
আন্তর্জাতিক ইসলামিক সম্মেলনে যোগ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে ‘মুসলিম বিদ্বেষী’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ট্রাম্পের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে হোয়াইট হাউজ ছাড়াও বহু বিশ্লেষক বলছেন, মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ঠোকাঠুকির সম্পর্ক ঠিক করতে এই সফরে যেতে তিনি রাজি হয়েছেন। আবার অনেকে মনে করছেন, নিজ প্রশাসনের অবস্থান শক্ত রাখতে এই সফরে যাচ্ছেন তিনি।
এই সম্মেলন উপলক্ষে তৈরি ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই সফর বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক প্রতিশ্রুতিগুলোকে নবায়ন করবে এবং বর্তমানের দৃঢ় ব্যবসায়িক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বন্ধনগুলোকে আরও দৃঢ় করবে।
তবে যতই গালভরা মধুর উদ্দেশ্যের কথা বলা হোক, সৌদি বাদশাহ সালমানের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার সময়ই ট্রাম্পপক্ষীয় ব্যক্তিরা বলেছিলেন, ট্রাম্পের এই সফরের উদ্দেশ্য- তার বর্তমান ইসলামবিরোধী ভাবমূর্তি পাল্টে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিকঠাক করা।
এ ছাড়া এতদিন ধরে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্রসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কিছুতেই পেরে উঠছিল না যুক্তরাষ্ট্র। আরব বিশ্বকে ‘ম্যানেজ’ করার মধ্য দিয়ে ইরানের সঙ্গে কঠোর হওয়া এবং সব দিক থেকে ইরানকে একঘরে করার চেষ্টা করাও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় রয়েছে বলে মনে করছেন আবদুল রহমান আল-রশিদসহ আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পর্যবেক্ষকরা। যদিও হোয়াইট হাউজ এ ব্যাপারে সরাসরি কিছুই বলেনি।
এ কারণে নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে প্রকাশ্যে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কথা বলা এবং ইসলামভীতি ছড়ানোর অভিযোগে বিতর্কিত হওয়া ট্রাম্পকে আন্তর্জাতিক ইসলামিক সম্মেলনে খোদ সৌদি বাদশাহ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। শুধু তাই নয়, তার জন্য লাল-গালিচাসহ বিভিন্নভাবে রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও নির্বাচনী প্রচারণায় রুশ হস্তক্ষেপ, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও রাশিয়ার সঙ্গে গোপন সম্পর্ক, রুশ সম্পৃক্ততার বিষয়টি তদন্ত করতে এগিয়ে আসা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের প্রধান জেমস কোমিকে ভিন্ন অভিযোগে বরখাস্ত করা, এর আগে রুশ কূটনীতিকের সঙ্গে যোগাযোগের জেরে ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ- সব মিলিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কাজ শুরু করতে না করতেই একের পর এক কেলেঙ্কারি আর বিতর্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
এর মধ্যে ট্রাম্পের ইসলামিক সম্মেলনে যোগ দেওয়াটা ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান অবস্থার জন্য একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা। তবে ট্রাম্প কখন কোন বিষয়ে কী আচরণ করবেন, তা কেউই বলতে পারে না। একই সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে তার মনোযোগ থাকে খুব কম। শুধু তাই নয়, দেশের বাইরে থাকতে তিনি খুবই অস্বস্তিবোধ করেন। তাই এই সফর ‘ভালো’র বদলে নতুন কোনো ‘খারাপ’ নিয়ে আসে কিনা- এ নিয়েও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এক সপ্তাহেরও বেশি লম্বা এ বিদেশ সফরে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে সৌদি আরব এবং পরে ইসরায়েল, ভ্যাটিকান, বেলজিয়াম এবং সিসিলি ভ্রমণ করবেন। ডেইলি ইন্টিলিজেন্সার-এর মতে, ইসলাম, ইহুদিবাদ ও খ্রিস্ট ধর্মের তীর্থস্থান বলে পরিচিত দেশগুলোতে একই সফরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে হোয়াইট হাউজ দেখাতে চেয়েছে, নতুন মার্কিন সরকার ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তিনটি ধর্মকেই একত্রিত করছে।
পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইসলাম ও পোপকে আক্রমণ করে দেয়া বক্তব্যের ক্ষতে মলম লাগানোও এই সফরের উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্মেলনের আয়োজক মুসলিমদের কাছে পবিত্রতম দেশ সৌদি আরব সম্পর্কেই এক সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, এই দেশের জনগণ আমেরিকানদের ঘৃণা করে, অথচ দেশটির ‘আমেরিকান সুরক্ষার আবরণ ছাড়া কোনো অস্তিত্বই থাকত না’।
ন্যাশনাল কাউন্সিল অন ইউএস-আরব রিলেশনস এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জন ডিউক অ্যান্থনি বলছেন, এর মাধ্যমে ইসলাম নিয়ে ট্রাম্প তার নির্বাচনী কট্টর অবস্থান থেকে সরে আসছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন