উদ্বোধনের অপেক্ষায় এশিয়ার বৃহত্তম কারাগার
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নতুন করে নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। রাজধানীর নাজিমুদ্দিন সড়ক থেকে শিগগিরই বন্দিদেরকে কেরানীগঞ্জে নতুন এই কারাগারে স্থানান্তর করা হবে। নবনির্মিত কারাগার আগামী ১৫ নভেম্বর উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কারাগার উদ্বোধন করার জন্য সম্মতিও দিয়েছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বন্দিদেরকে উদ্বোধনের দিনই এশিয়ার বৃহত্তম ও আন্তর্জাতিক মানের এই কারাগারে নেওয়া শুরু হবে।
কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা যায়, নতুন এ কারাগার আন্তর্জাতিক মানের। অপরাধীদের জন্য থাকছে আলাদা করে ভবন ও সেল। ফলে কারাগারে দুর্ধর্ষ খুনির সঙ্গে ছিঁচকে চোর কিংবা ছিনতাইকারীর সম্পর্ক আর তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকছে না।
প্রকল্প ফাইল অনুযায়ী জানা যায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তরের ব্যাপারে প্রথম ১৯৮০ সালের দিকে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেটি আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আর বাস্তবায়ন হয়নি। মাঝখানে পেরিয়ে গেছে ৩৫টি বছর। সবশেষ ২০০৬ সালে একনেকে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১১ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বলা হয় আদেশে। কিন্তু পরে তিন দফায় প্রকল্প মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৭ সাল পর্যন্ত। ২০০৭ সালে মাটি ভরাট শুরু হলেও ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রথমে ব্যয় ৩১৭ কোটির কিছু বেশি ধরা হলেও পরে ব্যয় বাড়িয়ে ৪০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা করা হয়।
কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে ১৯৪ দশমিক ৪১ একর জমির ওপর তৈরি হচ্ছে নতুন এ কারাগার। এর মধ্যে ৩১ একর জমিতে বন্দিদের জন্য ভবনের (পুরুষ-১) নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন। আর বাকী জমিতে কারারক্ষীদের থাকার ভবন ও বাউন্ডারি এরিয়া রয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জ।’
কেরানীগঞ্জে কারাগার নির্মাণের স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এর ৮টি ভবনের মধ্যে ৫টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অপর তিনটির মধ্যে একটির ৪০ ভাগ, একটির ৩০ ভাগ ও আরেকটির ২০ ভাগ কাজ বাকি আছে। কারাভ্যন্তরের অন্য সব কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া সেল ভবন, শ্রেণিভিত্তিক বন্দিদের ভবন, কিশোর অপরাধীদের ভবন, মানসিক ভারসাম্য প্রতিবন্ধী আসামি ভবনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
কারাগারটিতে সাত থেকে আট হাজার বন্দি থাকতে পারবে। এর বেশিও থাকতে পারে। যদিও এর ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৫ হাজার। বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি ধারণ ক্ষমতা কাগজে-কলমে ২ হাজার ৮২৬ জন থাকলেও বন্দি সংখ্যা সাত হাজারের বেশি। মাঝে-মধ্যে সেটাও ছাড়িয়ে যায়।
নতুন কারাগারে প্রত্যেক ভবনের নিচতলায় একটি করে ডাইনিং হল থাকবে। প্রতিটি ভবনের পাশেই রয়েছে একটি করে রান্নাঘর, একটি পাম্প হাউস ও ২০টি করে টয়লেট। এছাড়া প্রতিটি কক্ষের সঙ্গে একটি করে টয়লেট ও হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
কারাগারটিতে প্রতিটি সেল ভবনের ধারণ ক্ষমতা হবে একশ জনের। এর বেশিও থাকতে পারবে। কারণ, প্রতিটি ভবনে ১১২টি করে কক্ষ রয়েছে। কারা অভ্যন্তরের দক্ষিণে সেল ভবনের সামনে সীমানা প্রাচীরের কাছাকাছি করা হয়েছে ফাঁসির মঞ্চ। ভবনের পাশে গুদাম, ময়দার কল, ধোপাখানা, লন্ড্রি ও সেলুনের ঘর। সীমানা প্রাচীরের বাইরে চার কোনায় চারটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। যার উচ্চতা ৪০ ফুট।
কারাগারের বাইরে দর্শণার্থীদের ঘর, কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের জন্য আলাদা ভবন, অফিসার্স ক্লাব, স্টাফ ক্লাব, স্কুল, মসজিদ ও মিলনায়তন নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দিন জানান, ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে নতুন কারাগার উদ্বোধনের সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। তার আগে সব কাজ শেষ করতে জোর তৎপরতা চলছে।
তিনি জানান, এ কারাগারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হলো চতুর্দিকে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকবে। সীমানা প্রাচীরের ভেতরে আরো একটি ছোট প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। যার ভেতরে ও বাইরে কারারক্ষীরা পাহারা দেবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন