উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের আরও ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের আরও জোরাল ভূমিকা আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, উন্নয়নে আন্তর্জাতিক এই দাতা সংস্থাটিকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে মনে করে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে তারা আরও বেশি এগিয়ে আসবে বলে আশা করছেন তিনি।
বিশ্ব দারিদ্য বিমোচন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই আশার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের আরও সহযোগিতা চাইলেন এমন পরিস্থিতিতে যখন পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে সংস্থাটির সঙ্গে টানাপড়েন চলছে। সরকারের গত মেয়াদে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক। তবে সরকার এই অভিযোগ কখনও মেনে নেয়নি এবং এক পর্যায়ে বিশ্বব্যাংক থেকে টাকা না নিয়ে নিজ অর্থে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে।
কেবল বিশ্বব্যাংক নয়, আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের আশা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং তা অর্জনে সক্ষম হবো।’
প্রধানমন্ত্রী যখন এই বক্তব্য রাখছিলেন তখন অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সফররত বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমও। দারিদ্র্যবিমোচনে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্য দেখতে গত রবিবার বিকালে তিনি দেশে এসেছেন। সফরের দ্বিতীয় দিন সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা আরও বাড়ানোর আশ্বাস দেন বিশ্বব্যাংক প্রধান। পাশাপাশি পুষ্টির উন্নয়নে এক বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশ্বব্যাংক প্রধান। বিশেষ করে সংক্রামক ব্যাধি মোকাবেলা এবং নারীর ক্ষমতায়নের দিক থেকে বাংলাদেশে বিশ্বের সেরা প্রকল্পগুলো চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এরপর কিম যোগ দেন বিশ্ব দারিদ্য বিমোচন দিবসের অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইকেট টেকনোলজি পার্কসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হতদারিদ্র্য শূন্যের কোটায় নামিতে আনতে নতুন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি অর্জনেও সরকার কাজ করছে। নির্ধারিত সময় ২০৩০ সালের আগেই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলেও আশা করছেন তিনি। জানান, এই লক্ষ্য পূরণে উচ্চ ক্ষমতার একটি বিশেষ কমিটি বাস্তবায়ন কার্যক্রম তদারকি করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। এখানকার মানুষ অত্যন্ত সাহসী ও পরিশ্রমী। একটি উন্নত দেশ গঠনে আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ী। মাথাপিছু আয়ের বিবেচনায় এরই মধ্যে আমরা নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। শিগগির স্বল্প আয়ের দেশের তালিকা থেকে আমরা বের হয়ে আসবো। আর ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবো ইনশাআল্লাহ।’
অপুষ্টিজনিত সমস্যা সমাধানেও সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই কার্যক্রম আমরা আরও প্রসারিত করতে চাই।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির তাগিদ দিয়ে দেয়া ভাষণে জলবায়ু তহবিল থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়ার হতাশার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই তহবিল গঠনের খবরে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো খুশি হয়েছিল। কিন্তু এই তহবিল থেকে আশানুরুপ সাফল্য মেলেনি। এই অবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় সরকার নিজ অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উন্নয়নের ক্ষেত্রে সারা বিশ্ব আজ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আমরা জঙ্গি দমনে সক্ষম হয়েছি। সমাজকে পুরোপুরি জঙ্গিবাদমুক্ত করতে ভবিষ্যতে এই কার্যক্রমকে আরও শানিত করা হবে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা।বিস্তারিত পড়ুন
আইসিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন, ধারণ করা যাবে বিচার প্রক্রিয়ার অডিও-ভিডিও
‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনবিস্তারিত পড়ুন