উৎসবে সুস্থ থাকার সাত পরামর্শ
চলছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা। আর আগামী দুদিন ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস। এই দিনগুলোতে ঢাকা শহরে মানুষের ঢল নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি বা ধানমণ্ডির রবীন্দ্রসরোবরে। তবে এই উৎসব-আনন্দের দিন স্বাস্থ্যের প্রতিও কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে। নয়তো সব আনন্দই মাটি হয়ে যাবে।
সুস্থভাবে উৎসবে বা মেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য কোন বিষয়গুলো মেনে চলবেন, তা নিয়েই আজকের পরামর্শ।
১. শ্বাসকষ্ট নয় : শীতে বাতাসে থাকে প্রচুর ধূলিকণা, ফুলের পরাগরেণু। এগুলো কিন্তু বেশ ক্ষতিকর। জনসমাগম হয় যেসব জায়গায়, সেখানেও কিন্তু বেশ ধুলোবালি থাকে। শ্বাসকষ্ট, যেমন—হাঁপানি, সিওপিডি আক্রান্তদের জন্য এসব জায়গায় যেতে বাধা নেই। তবে সাবধান থাকতে হবে। কারণ, বাতাসের এ ধুলোবালি, পরাগরেণু শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এগুলোর কারণে শ্বাসনালি সংকুচিত হয়। তাই এ সময় বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরবেন। বাসায় ফেরার পর কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে নাক-মুখ ভালো করে পরিষ্কার করুন। যদি দেখেন শ্বাসকষ্ট বেশি হচ্ছে, তাহলে ইনহেলার নিন।
২. পেটের পীড়া থেকে সাবধান : গ্রামের মেলায় আমরা বাতাসা, মিঠাই, জিলাপি কিনে খেয়েছি ছোটবেলায়। আর এখন মেলায় খাই চটপটি, ফুচকা। তবে এসব খেতে হবে সাবধানে। খাবেন তাতে বাধা নেই! কিন্তু খাওয়ার পর পেটের পীড়া নিয়ে ঘরে ফিরতে যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডের জীবাণু বাইরের খাবারে বেশি থাকে। তাই মেলায় ঘুরছেন ভালো কথা, জিহ্বার রাসটা টেনে ধরলে ক্ষতি কী?
৩. পায়ে ব্যথা কত জ্বালা : একটানা হাঁটলে মাংসপেশিতে ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয়। এগুলো ব্যথার অনুভূতি তৈরি করে। ফলে সারা দিন হেঁটে বাসায় ফিরে পা টনটনে যন্ত্রণা নিয়ে আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়। এ জন্য ব্যবস্থা নিতে পারেন। একটানা বেশিক্ষণ না হেঁটে বিশ্রাম নিন কিছু সময়ের জন্য। এ সময় পায়ের কিছু ব্যায়াম সারতে পারেন। যেমন : হাঁটু ভাঁজ দেওয়া এবং সোজা করা—পায়ের পাতা দিয়ে যেভাবে সেলাই মেশিন চালানো হয় এমনটা। বইমেলায় গেলে একদিনে সম্পূর্ণটা না ঘুরে, দুই/তিন দিনে ভাগ করে ঘুরতে পারেন।
৪. পা ফোলার সমস্যা : সাধারণত মেয়েদের এ সমস্যা বেশি হয়। বিশেষত, বয়স্ক নারীদের বেশি হতে পারে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে পায়ে পানি জমতে পারে। এটা নিয়ে দুচিন্তায় ঘোরার আনন্দই মাটি হয়ে যায়। দুশ্চিন্তা করবেন না। এটা স্বাভাবিক, হতেই পারে। ভয়ের কিছু নেই। আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যাবে। তবে রাতে শোয়ার সময় কয়েক দিন পা বালিশে রেখে একটু উঁচু করে ঘুমালেই হবে। পাশাপাশি পায়ের ব্যায়ামগুলো করতে পারেন।
৫. কফ-কাশি-থুতু থেকে দূরে থাকুন : অনেক রোগবালাই কিন্তু এগুলোর মাধ্যমে ছড়ায়। এমনকি যক্ষ্মাও হতে পারে। তাই নিজে মেনে চলুন হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার। যেখানে সেখানে থুতু, কফ না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। অন্য কেউ যেখানে সেখানে ফেলতে গেলে শিখিয়ে দিন শিষ্টাচার। কাশি এলে মুখ হাত দিয়ে কাশুন। হাতে রুমাল থাকলে না হলে টিস্যু চাপা দিয়ে কাশি দিতে পারেন। এতে অন্যরা যেমন রোগমুক্ত থাকবে, তেমনি আপনিও। ও হ্যাঁ, মাস্ক পরতে কিন্তু ভুলবেন না।
৬. পানি পানে নেই বাধা : মেলায় কিছুক্ষণ হাঁটার পরই শীত যায় পালিয়ে। অনেকে শীতের পোশাক পরে থাকায় ঘামতে থাকেন। এতে শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এটা প্রতিরোধে প্রচুর পানি পান করুন। তবে বোতলজাত পানি ছাড়া পান করবেন না। এতে ডায়রিয়া, টাইফয়েড ও আমাশয় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় মেলায় যাওয়ার সময় বোতলে করে পানি ভরে নিয়ে গেলে। যদি বেশি ঘাম হয়, তাহলে প্রয়োজনে স্যালাইন পান করতে পারেন। শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। কারণ, শিশুদের কিন্তু পানিস্বল্পতা বেশি হয়।
৭. ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা সাবধান : প্রচণ্ড ভিড়, সারা দিন হাঁটাহাঁটিতে ডায়াবেটিস আক্রান্তরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের রক্তে সুগার কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। যদি ডায়াবেটিস আক্রান্ত কেউ হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, শরীরে বেশি ঘাম হয়, মাথা ঘোরে, মেজাজ খিটখিটে হয়, জ্ঞান হারানোর মতো মনে হয়, তাহলে বুঝবেন আপনি হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই দেরি না করে মিষ্টি চকলেট মুখে পুরে দিন। ভিড় এড়িয়ে চলুন। এতেও সুস্থ বোধ না করলে বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন