এই গণগ্রেপ্তার চরম ধৃষ্টতার শামিল : রিজভী
জঙ্গি দমন অভিযানের নামে সারা দেশ থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সম্প্রতি উচ্চ আদালতে ৫৪ ধারা বিষয়ক যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এই অভিযানে সেটিকেও উপেক্ষা করা হচ্ছে। এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আদালতের প্রতি অবমাননা ও চরম ধৃষ্টতার শামিল। এই ধরনের গণগ্রেপ্তারে ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গুপ্তহত্যা ঠেকাতে যৌথ অভিযানের ঘোষণার শুরু থেকে সারা দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ শ’র অধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযোগ উঠেছে, জঙ্গিবিরোধী অভিযান বলা হলেও সারা দেশ থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই অভিযানে মাদকসেবীদের মতো কিছু সামাজিক অপরাধী থাকলেও ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এই অভিযানে সাধারণ মানুষ ও বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ ভোটারবিহীন পুলিশনির্ভর সরকার ঈদের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বখশিশ হিসেবে গ্রেপ্তার বাণিজ্যের সুযোগ করে দিচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী নাকি হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট হিসেবে সব তথ্য পেয়ে থাকেন। তাই যদি হয়, তাহলে উনার প্রেস কনফারেন্সের একদিন পরই পাবনায় আশ্রমের সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে কী করে কুপিয়ে হত্যা করল দুর্বৃত্তরা? আসলে প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত জঙ্গিবাদকে দমন করতে চান না। মূলত বিরোধী দল দমনই তাদের আসল উদ্দেশ্য।
সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে কিংবা নিরাপদ জোনেও একের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব হত্যাকাণ্ডের একজন আসামিকেও ধরতে সক্ষম হয়নি। অপরদিকে বিনা বিচারে তদন্ত ছাড়াই মানুষকে গ্রেপ্তার করে কথিত ক্রসফায়ারে হত্যা করা হচ্ছে। তারা যদি জঙ্গি হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মূল হোতাদের খুঁজে বের না করে কথিত ক্রসফায়ারের নামে হত্যা রহস্যজনক।
তিনি বলেন, বর্তমানে জঙ্গি দমনের নামে দেশব্যাপী যে গণগ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলছে তাতে পুরো ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রহস্যজনক বলে জনগণ মনে করে। জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, এর অন্তরালে সরকারের বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মানসিক গঠনটাই হাঙ্গামা আর হানাহানিপ্রবণ। লাশ, রক্তপাত আর প্রতিশোধের আস্ফালন প্রদর্শন করা ছাড়া তার রাজনৈতিক চিন্তাধারায় আর অন্য কিছুই স্থান পায় না। জঙ্গিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণকারীদের গুরুত্ব না দিয়ে এবং তদন্ত ছাড়াই তিনি কী করে এই সমস্ত প্রাণবিনাশী ঘটনায় বিরোধী দলকে অভিযুক্ত করলেন?
তিনি আরো বলেন, ভোটারবিহীন সরকার তার রাষ্ট্রপরিচালনায় সকল দিক থেকে ব্যর্থ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে কবরের গর্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গণস্তরে শেখ হাসিনার ক্ষমতার ভরাপুকুর শুকিয়ে গিয়ে এখন শুধু তলানিটুকু পড়ে আছে। তাই নিঃশেষিত ক্ষমতায় দিশা হারিয়ে ফেলে উন্মত্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। এক বিশেষ ধরনের হাসিনা-মার্কা নির্দয় দুঃশাসনের শাসন চালাতে গিয়ে তিনি এখন জনসমর্থন হারিয়ে প্রকৃত জনসমর্থিত রাজনৈতিক ক্ষমতার ক্ষীণ ছায়ামাত্র।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন