হোসেনী দালানে বোমা বিস্ফোরণ
‘এএসআই হত্যা ও বোমা হামলা একই সূত্রে গাঁথা’
হোসেনী দালানের পাশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ চক্রকে দায়ী করলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার সকালে বোমা বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে এসে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, স্বাধীনতাবিরোধী চক্ররাই এ বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। পুলিশের এএসআই হত্যাকাণ্ড আর এই বোমা বিস্ফোরণ একই সূত্রে গাঁথা।’
এএসআই ইব্রাহিম হত্যাকাণ্ডে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাবতলীতে এএসআই ইব্রাহিমের হত্যার ঘটনায় আটক মাসুদ রানার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বোমা ও ককটেল উদ্ধার করেছে। ওই বোমার সঙ্গে হোসেনী দালানে বিস্ফোরিত বোমার মিল রয়েছে। এতে মনে হয় একই চক্র এ নাশকতা ঘটিয়েছে।’
শহীদুল হক বলেন, ‘আটক মাসুদ স্বীকার করেছে যে, নাশকতার জন্য তারা বগুড়ায় বৈঠক ও পরিকল্পনা করে। তারা হত্যা ও নাশকতা চালানোর জন্য বিভিন্ন গ্রুপকে দায়িত্ব দিয়েছিল। যাদের একটি গ্রুপ এএসআইকে হত্যা করেছে, আরেকটি গ্রুপ হোসেনী দালানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এগুলো সার্বিক নাশকতার পরিকল্পনার অংশ।’
বোমা হামলায় জেএমবির কোনো সম্পৃক্তা রয়েছে কি না— জানতে চাইলে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘এএসআইকে যারা হত্যা করেছে আমরা বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত আমরা জেএমবির সংশ্লিষ্টতা পাইনি। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’
পূজা ও আশুরাকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশেল পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, তাহলে এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদুল হক বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা মিছিলের মধ্যে ছদ্মবেশে প্রবেশ করে। সেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক ছিল। প্রত্যেককে তো তল্লাশি করা সম্ভব নয়। কারণ অনেকে মিছিলসহ এখানে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা ফাঁকে বা কৌশলে হোসেনী দালান এলাকায় প্রবেশ করেছে। আসলে কে ভক্ত বা দুষ্কৃতকারী, সহজে চেনা যায়নি।’
আইজিপি বলেন, ‘তারা যে বড় ধরনের নাশকতার প্রস্তুতি নিয়েছিল তা আমরা জানতে পেরেছিলাম। আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে সেটা তারা করতে পারেনি।’
খুব শীঘ্রই দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে জনগণের সামনে আনা হবে বলেও জানান আইজিপি।
যুদ্ধাপরাধীদের রায়কে কেন্দ্র করে এ ধরনের নাশকতা করা হচ্ছে কি না— জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, ‘এটা তদন্ত করে বলা যাবে। তবে এএসআইকে হত্যাকারীরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না। তারা যুদ্ধপরাধী সংগঠনের সদস্য।’
এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ও যুদ্ধাপরাধী কারা আপনারা সেটা জানেন।’
বিস্ফোরকগুলো গ্রেনেড ছিল কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এগুলো গ্রেনেড নয়, হোমমেড বিস্ফোরক।’
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে, যে সারাদিন হোসেনী দালান এলাকায় ঘোরাফেরা করেছিল। তার গতিবিধ সন্দেহজনক ছিল।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো জায়গায় লোকজন জড়ো হলে তাদের যেন দেহ তল্লাশি করা হয়, পুলিশকে সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় শুক্রবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে হোসেনী দালান চত্বরে পরপর তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। ওই ঘটনায় এক যুবক নিহত হন। আহত হন শতাধিক। তাদের ঢাকা মেডিকেল ও মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহতরা হলেন- রিনা খাতুন (৩৮), তার ভাই সানোয়ার হোসেন (৬৩), রনি (২৫), নুর হোসেন (৫৫), আয়েশা আক্তার (৫০), জামাল হোসেন (৫০) আইসিউতে, রুনা বেগম (৩০), সোহান (১১), মনির হোসেন (৩৬), হালিমা আক্তার (২০) ও কামাল হোসেন (২২)।
এ ছাড়া আবদুর রহিম (৩০), নাঈম হোসেন (৩৫), লাবনী আকতার (১৪), আয়েশা আকতার (১২), সালাউদ্দিন (৪৫), তুহিন (১২), সুদীপ (২১), মাহবুবুর রহমান (২৬), রাকিব হোসেন (২৬) ও আয়াত উদ্দিন (২৬) চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
এদিকে, মিটফোর্ড হাসপাতালে আহত ৩১ জনকে নেওয়া হয় বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদুর রহমান জানান। তাদের অনেকেই মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বলে চকবাজার থানার ওসি জানিয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন