বুধবার, জুন ২৬, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

এক রোমাঞ্চকর অসমাপ্ত ভ্রমণ গল্প

মো: লিখন শেখ: সুযোগ পেলেই ঘোরাঘুরি। আর তা যদি হয় দীর্ঘ, তাহলে আর পায় কে? সেরকমই এক মোক্ষম সুযোগে চলে গিয়েছিলাম সুন্দরবনের গহিনে। প্রথমে বাসে চেপে ঢাকা-রায়েন্দা। এরপর শরণখোলা রেঞ্জের স্টেশন অফিস। আগেভাগেই রায়েন্দা নিবাসী ট্যুর গাইড সাইফুল ইসলাম শাহীন বনে প্রবেশের যাবতীয় সরকারি নিয়মাবলী অনেকটাই সেরে রেখেছিলেন।

ফলে স্বল্পসময়ের মধ্যেই সুন্দরবন প্রবেশের অনুমতি মিলে যায়। ১৮ জনের জন্য প্রায় ৫০ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বোটে চড়ে শুরুতেই চলে গেলাম তেরাবেকা ফাঁড়িতে। নামের সঙ্গে তেরাবেকার স্থাপনাগুলোর যেন মিল রয়েছে। সেখানে কিছুটা সময় চলল ফটোশুট। এরপর বলেশ্বর নদীর নির্মল হাওয়া। বোট চলতে চলতে বগি স্টেশন পাশ কাটিয়ে সুপতি খালে ঢুকে।

বোটে বসেই খালের দু’পাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্যে চোখ আটকায়। আরও দেখি বাঘ, কুমির আর বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে জেলেদের মাছ ধরার কঠোর মেহনত। সেই সঙ্গে ইলিশের শেষ নিশ্বাস ত্যাগের লম্ফঝম্ফ। দেখতে দেখতে ভ্রমণ অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারী হতে থাকে। মধ্য দুপুর গড়িয়ে বোট কচিখালী অভয়ারণ্যের ভেতরে বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে এগোতে থাকে।

একটা সময় খালের দু’পাশে সুন্দরী আর কেওড়া গাছের ফাঁকে চোখ পড়তেই বিস্ময়ে সবাই অবাক। হরিণের পাল আপনমনে ঘুরে বেড়ায়। কোনো কোনো গাছতলায় নির্ভীক মায়াবী নয়নে শিংওয়ালা হরিণীর একাকী দাঁড়িয়ে থাকার দুর্লভ দৃশ্য।

গাছে গাছে সাদা বকের ঝাঁক আর মদনটাক পাখির অবাধ বিচরণ আমাদের নির্বাক করে। অসাধারণ সব মুহূর্ত কাটে সুপতি খালের ভেতর গোলপাতার হাওয়ায়। সত্যি বলতে, সুন্দরবনের আসল সৌন্দর্য খালের ভেতর দিয়ে ঘুরলেই দেখা সম্ভব।

যেতে যেতে বেলা প্রায় সাড়ে তিনটা। বোট গিয়ে থামে বঙ্গোপসাগরের কুলঘেঁষা ডিমের চরে।

বাঘ আর বৃষ্টিতে ভেজার ভয়ে দু-চারজন বাদে আর সবাই নেমে যাই চরে। চার নম্বর আবহাওয়া সংকেতের কারণে এলোমেলো বাতাসের সঙ্গে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। প্রতিকূল প্রকৃতি অনুকূল ভেবেই হেঁটে হেঁটে ডিমের চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখি।

সুন্দরবনে বাঘ মামার শিকার ধরার পজিশন নেয়ার সুবিধাজনক স্থান ছনের বাগানেও ঢুকে পড়ি। ছন বাগানে তখন একটি গানের লিরিক মনে পড়ে যায়, পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না। আমরা হয়তো তেমনি এক পাগল। ইচ্ছামতো বাঘের ঘরে ছবি তুলে পক্ষীর চরের দিকে আগাতে থাকি। ডিমের চরের একপাশে ঘন বন, আরেক পাশে উত্তাল সাগর। উন্মাদ ঢেউ আছড়ে পড়ে যুগল পায়ে।

হাঁটতে হাঁটতে পক্ষীর চর। জায়গাটা কেমন যেন ভৌতিক। মরা গাছের গোড়াগুলো যেন একেকটা ফসিল। তবে শত শত গাঙচিল আর বকের ওড়াউড়ির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য বাঘের ভয় আর ভ্রমণ ক্লান্তি দূর করে দিবে নিমিষেই।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পাগলা হাওয়ার মাত্রাও বাড়তে থাকে। তাই আর দেরি না করে বোটে উঠে পড়ি। ছিঁড়া কটকা পেরুতে পেরুতে রাত নেমে এল। তাই বড় কটকার এক সুবিধাজনক খালে সারেং নোঙর ফেলল। আজকের রাতটা কাটবে এখানেই।

পরদিন সকালে বড় হোমরা হয়ে বেতমোর নদীতে ভাসলাম। ভাসতে ভাসতে জোয়ারে খেজুরা ভারানী হয়ে শেলা নদীর বুকে জেগে থাকা নামহীন এক চরে বোট বাঁধল, যা আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বনবিভাগের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। তিনিসহ আমরা চরটিতে নামলাম।

তার ভাষ্যমতে, পর্যটক হিসেবে দে-ছুট-এর ভ্রমণ বন্ধুরাই নাকি প্রথম অবতরণ করল। স্বাভাবিকভাবেই মনের মাঝে বেশ উত্তেজনা। চরের পরিবেশ নীরব, নিস্তব্ধ। পাতা ঝরার শব্দ পর্যন্ত শোনা যায়। সুন্দরী, কেওড়া, বাইন ও খলশি ইত্যাদি গাছসহ গোলপাতার গাছে ভরা। মাটি ফুঁড়ে দণ্ডায়মান শ্বাসমূল। এ চরের শ্বাসমূলগুলো কিছুটা ভিন্ন রকম, যা দৃষ্টি কেড়ে নেয় সহজেই। চঞ্চলা হরিণের দল ছুটে বেড়ায়।

চরটির চারপাশ নয়নাভিরাম নৈসর্গিক সৌন্দর্যে টইটুম্বুর, যা যে কোনো নিরস মনের মানুষকেও পুলকিত করবে। ভ্রমণে করে তুলবে আগ্রহী। এ রকম একটি চরের নাম থাকবে না- তা কী করে হয়। কিন্তু কেন কী কারণে এখনও পর্যন্ত এ চরের নাম কিংবা পর্যটকদের পা পড়েনি- তা বুঝে আসেনি। তাই কালাম সাহেবের অনুরোধে দে-ছুট-এর পক্ষ থেকে চরটির নাম দেয়া হল সুনসান চর।

সুন্দরবনে সুনসান চরের অবস্থান কুকিল মনি ক্যাম্পের পূর্বে আর টিয়ার চর থেকে উত্তরে। সুনসান চরটির প্রতি সরকার দৃষ্টি দিলে নিশ্চিত সুন্দরবন ভ্রমণ পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গায় পরিণত হবে। এরপর রওনা দেই কুকিল মনি ক্যাম্পের দিকে। যেতে যেতে টেলিটকে চলে আসে নেটওয়ার্ক। সুন্দরবনের ওপর দিয়েই নাকি বিকাল ৫টায় প্রথম আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড়।

অথচ আমরা কিন্তু সেই বনের গভীরেই দিব্যি খাইদাই ঘুরি। তবুও তো বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই আর দেরি না করে সারেং বোট ঘুরিয়ে ছুটি রায়েন্দা। বিকাল যখন পাঁচটা তখনও আমরা ফিরতি পথে নদীতে ভাসি।

সাংবাদিক ও লেখক মার্ক টোয়েন বলেছেন, ‘আজ থেকে বিশ বছর পর আপনি এ ভেবে হতাশ হবেন, আপনার পক্ষে যা করা সম্ভব ছিল তা করতে পারেননি। তাই নিরাপদ আবাস ছেড়ে বেরিয়ে পড়ুন। আবিষ্কারের জন্য যাত্রা করুন, স্বপ্ন দেখুন আর শেষমেশ আবিষ্কার করুন।

’ অথচ এবার ভ্রমণসঙ্গী বেশি হওয়ার কারণে দুর্যোগের ভয়ে দে-ছুট-এর স্বভাববিরুদ্ধ ভ্রমণের সময় কমিয়ে নিরাপদ আবাসের পথ ধরতে হল, যা সব মিলিয়ে স্মৃতির ভাণ্ডারে অসমাপ্ত এক রোমাঞ্চকর দুঃখজনক ভ্রমণ গল্প হিসেবেই গেঁথে থাকবে।

যাবেন কীভাবে : ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বাগেরহাট শরণখোলার রায়েন্দা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে।

থাকা-খাওয়া ও অনুমোদন : রায়েন্দা থেকে বোট/ভেসেল ও থাকা-খাওয়া এবং সুন্দরবন প্রবেশের জন্য সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম আগেই সম্পাদন করার জন্য রুপসী রায়েন্দা হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজমের পরিচালক শহীদুল ইসলাম সোহাগের সহযোগিতা নিতে পারেন। এছাড়াও গুগল সার্চে আরও অনেক সুন্দরবনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নাম মিলে যাবে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?

গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন

বাবা দিবসে কাজলের মেয়ে শৈশবের ছবি পোস্ট করলেন

বলিউড অভিনেতা অজয় ​​দেবগন এবং কাজলের কন্যা নাইসা দেবগন সেইবিস্তারিত পড়ুন

চলে গেলেন অভিনেত্রী সীমানা

অভিনেত্রী সীমানার দীর্ঘ লড়াই শেষ। ফিরল না জ্ঞান। মাত্র ৩৯বিস্তারিত পড়ুন

  • শাকিবের সঙ্গে আমার বিয়ের সম্ভাবনা থাকতেই পারে: মিষ্টি জান্নাত
  • এবার পরিবারের পছন্দে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন শাকিব খান
  • বুবলী আগে থেকেই বিবাহিত, সেখানে একটি মেয়েও আছে: সুরুজ বাঙালি
  • এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা
  • অভিনেতা ওয়ালিউল হক রুমি মারা গেছেন
  • পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন
  • শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষের জায়গা নেই: বুবলী
  • সিনেমা মুক্তি দিতে হল না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
  • বিশাখাপত্তনমে কয়েকদিন
  • সংগীত শিল্পী খালিদ আর নেই
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য