এখনো মিয়ানমারের হাতে নায়েক রাজ্জাক
মিয়ানমারের বিজিপির হাতে অপহৃত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আবদুর রাজ্জাককে দ্রুত ফেরত আনার ব্যাপারে আশ্বাস মেলেনি। মিয়ানমারের দাবি, দেশটির জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছেন নায়েক রাজ্জাক। তবে তাঁকে দ্রুত ফিরিয়ে দিতে গতকাল শনিবার মিয়ানমারকে আবারও অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান গত রাতে ফোনে জানান, গতকাল বিকেলে মিয়ানমারের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। তিনি নায়েক রাজ্জাককে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
এদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যেকোনো সময় আবদুর রাজ্জাককে ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদী। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন, ওই বিজিবি সদস্য সুস্থ আছেন এবং তাঁকে উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে। বিজিবি তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছে। তারা যেকোনো সময় তাঁকে ছেড়ে দেবে। তবে এখনো ছাড়েনি, এটি সত্য। তিনি আশা করেন, দু-এক দিনের মধ্যে যেকোনো সময় এর মীমাংসা হবে।
আবদুর রাজ্জাক রইগ্যাদং পুলিশ ক্যাম্পের হেফাজতে নিরাপদে আছেন বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। তবে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে গতকালও দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়নি।
জানতে চাইলে বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকালও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু বিজিপি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনো অনুমতি পায়নি বলে জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সুফিউর রহমান মিয়ানমারের নতুন পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সে দেশের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডোতে দেখা করেন। এ সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, নায়েক রাজ্জাক মিয়ানমারের জলসীমার প্রায় এক নৌ-মাইল ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছেন। কাজেই অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর তাঁকে বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তাঁকে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত করার অনুরোধ জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
মিয়ানমারের কাছ থেকে কতটা সাড়া পাওয়া গেছে—জানতে চাইলে সুফিউর রহমান বলেন, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব বিষয়টি নিয়ে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। খুব স্পষ্ট করে কোনো আশ্বাস দেননি।
তবে আবদুর রাজ্জাককে হাতকড়া পরিয়ে বসিয়ে রাখার ছবি প্রকাশের ব্যাপারে মিয়ানমারের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তীব্র প্রতিবাদ জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে বাংলাদেশ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। সীমান্তের অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছবি প্রকাশ হলে তা নেতিবাচক মনোভাব উসকে দেয়। মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব এ সময় জানান, রাজ্জাককে ধরার পর স্থানীয়ভাবে ছবিটি প্রচার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
বিজিবি সূত্র বলছে, মিয়ানমারের জলসীমায় রাজ্জাকের অনুপ্রবেশের অভিযোগ ঠিক নয়। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, গত বুধবার ভোরে বিজিবির ছয় সদস্যের একটি দল নায়েক আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে নাফ নদীতে টহল দিচ্ছিল। তারা বাংলাদেশের জলসীমায় মাদক চোরাচালান সন্দেহে দুটি নৌকায় তল্লাশি করছিল। এ সময় মিয়ানমারের রইগ্যাদং ক্যাম্পের বিজিপির সদস্যরা একটি ট্রলারে করে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে বিজিপির সদস্যদের বহনকারী ট্রলারটি বিজিবির টহল নৌযানের কাছে এসে থামে। বিজিপির ট্রলারটিকে বাংলাদেশের জলসীমা ছেড়ে যেতে বলা হলে তারা নায়েক রাজ্জাককে জোর করে ট্রলারে তুলে নেয়। বিজিবির অন্য সদস্যরা এতে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে সিপাহি বিপ্লব কুমার গুলিবিদ্ধ হন। পরে বিজিপির ট্রলারটি রাজ্জাককে নিয়ে মিয়ানমারের দিকে চলে যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন