এটিএম কার্ড জালিয়াতি বনাম রিজার্ভের টাকা উধাও
বিশ্বের সাথে প্রযুক্তির প্রোগ্রামিং সমান তালে খুব দ্রুত গতিতে চলছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতার হার, আর কে কত বেশি আপডেট। তার সবটুকু প্রভাব পড়ছে প্রযুক্তি ব্যবহারকারী সেক্টরে। যার ফলে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশে। তারপরে আবার চলছে ব্যাংকের এটিএমকার্ড জালিয়াতি, সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে টাকা চুরির রমারমা বাণিজ্য। বলতে গেলে দেখা যাচ্ছে দেখার কেউই নেই। মিলছে না টাকা ফিরত পাওয়ার কোন গতি।
সম্প্রতি দেখা গেছে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় এক বিদেশি নাগরিকসহ কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সত্যতাও বেরিয়ে আসে। জড়িত আছে বড় বড় ব্যাংক কর্মকর্তারা। আবার বেরিয়ে আসছে বড় ব্যবসায়ীমহল ও সরকারির পুলিশ বাহিনীর বড় কর্তারাও। নিজের একটু সুবিধা নিতে দেশের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলছে তারা। তবে বিদেশি নাগরিকের দেয়া বিভিন্ন তথ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে ব্যাংকিং খাতেও। এ ঘটনার রেশ শেষ হতে না হতেই রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির মত আরও একটি বড় ধরনের ঘটনা ঘটলো। যা কিনা বাংলাদেশ ব্যাংকিং সেক্টরে সবচেয়ে বড় ঘটনা।
রিজার্ভের টাকা চুরির দায়ভার কার?
রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভ থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে ১০ কোটি মার্কিন ডলার চুরি হয়ে যায়। একমাস পর গণমাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এ জালিয়াতির তথ্য প্রকাশিত হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার (৭ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এর সত্যতা নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংক একাউন্ট থেকে এ টাকা হ্যাকাররা নিয়ে যায় বলে দাবি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
একই দিন ফেরারেল রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, তাদের ব্যাংক থেকে এভাবে টাকা চুরির কোনো সুযোগ নেই। ওই ব্যাংকে থাকা একাউন্ট হ্যাকড হয়নি বলেও দাবি করে তারা। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বক্তব্যে বড় ধরনের গড়মিল লক্ষ্য করা যায়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার একদিন পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত পেতে প্রয়োজনে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এ অর্থ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো দোষ নেই।’
বিপুল অঙ্গের এই টাকা কোথা থেকে চুরি হয়েছে- সে সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি। তবে চুরি যাওয়া টাকার একাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া ২শ’ কোটি টাকা ইতোমধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে ফিলিপাইনের ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ইনকোয়েরে’র গত ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ১০ কোটি ডলার মানি লন্ডারিং হয়েছে। ওই খবরে আরও বলা হয়, দেশটির মাকাতি শহরে অবস্থিত রিজার্ভ কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের একটি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসে। চীনা হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সেখানকার কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এ অর্থ হাতিয়ে নেয়। হ্যাকার দল এ অর্থ প্রথমে ফিলিপাইনে পাচার করে। সেখান থেকে চুরি হওয়া অর্থের এক অংশ পাচার করা হয় শ্রীলঙ্কায়। ওই অর্থ ফিলিপাইনে স্থানান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত হলে সেখানে দুই কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়। তারা ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুদিনে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মানিলন্ডারিং ইউনিট বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চুরির ঘটনা তদন্তে কাজ করছে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল। পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিশ্বব্যাংকের দেয়া গাইড লাইন অনুসরণ করে এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
এই চুরিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সন্দেহভাজনদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এসব হ্যাকাররা অনেক বেশি আপডেটেড। স্থানীয় কারও সহযোগিতা ছাড়াই প্রোগ্রামিং করে এ ধরনের চুরি করতে পারে।’
দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকের রিজার্ভ ফান্ডের টাকা চুরি যাওয়ায় শঙ্কিত অনেকে। প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও। একই সঙ্গে এ চুরির দায় নিয়েও। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে টাকা চুরির দায় এখন কার ওপর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যে প্রক্রিয়ায় রিজার্ভের টাকা নিয়ে উধাও হ্যাকারা
আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত সুইফট অধিক নিরাপদ। এ প্রক্রিয়াটিতে রয়েছে নিরাপত্তার কয়েকটি ধাপ। সুইফটে বার্তা পাঠানোর প্রক্রিয়াটি কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়। বার্তা প্রেরণকারীর বার্তাগুলো এনক্রিপ্টেড কোড আকারে প্রাপকের কাছে পৌঁছে। প্রেরক এবং প্রাপক যদি একই ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার না করে তবে এই বার্তা ডিকোড করে বুঝার কোনো প্রকার উপায় নেই। অর্থাৎ কেউ যদি এই সফটওয়্যারটি সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকে এবং সেই মোতাবেক নিজেও সে সফটয়্যারটি ব্যবহার না করে তবে বার্তাটিকে ডিকোড করে বুঝা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্রে জানা যায়, সুইফটের যে সিস্টেমটি হ্যাক করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বার্তা পাঠানো হয়েছে তা করার জন্য পুরো সিস্টেমের দখল নিতে হয়েছে হ্যাকারদের। তারা এখানকার পাসওয়ার্ডসহ সব পদ্ধতি চুরি করে অন্য একটি স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা যখন এই সিস্টেমে লেনদেনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তার ধাপ মেইনটেইন করে প্রক্রিয়াটি শুরু করেছেন, তখন কোনো কারণে প্রক্রিয়াটি সচল ছিল কিন্তু ওই কর্মকর্তা ফিজিক্যালি সিস্টেমে সক্রিয় ছিলেন না, সেই সুযোগটাই নিয়েছে হ্যাকাররা। তারা সিস্টেমে সহজেই লগইন করে প্রক্রিয়াটিতে ঢুকেছে এবং বার্তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে। রিজার্ভ ব্যাংকের অটোমেটেড ক্লিয়ারিংয়ে ৫টি লেনদেন সম্পন্নও হয়ে যায়। হ্যাকাররা নিয়ে যায় ১০১ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮০০ কোটি টাকা)। কিন্তু যখন রিজার্ভ ব্যাংকের চোখে পড়েছে টাকাগুলো কোনো ব্যক্তি অ্যাকাউন্টে ঢুকছে, তখন তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায়। বাংলাদেশ স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এ কাজটি হওয়ায় দু’দিনের ছুটির ফাঁকে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে এখান থেকে কোনো জবাব দেয়া হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, লেনদেন প্রক্রিয়াটি এমনভাবে সম্পন্ন হয়েছে যেভাবে সব লেনদেন সম্পন্ন হয়। তবে জানা যায়, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এ কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি হ্যাকারদের কবলে পড়ে। তখন তারা ফেডারেল রিজার্ভ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এবং অনেক তথ্য চুরি করে। ২০১৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ফেডারেল রিজার্ভ স্বীকার করেছে তাদের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে এবং কিছু হ্যাকারদের হাতে চলে গেছে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ হ্যাকাররা তখন সে দেশটির ৪ হাজার কর্মকর্তার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেছিল ব্যাংকটি থেকে।’
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনার দায় সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ফেডারেল রিজার্ভ বলছে, এই ঘটনার নেপথ্যে ব্যাংকিং ভাষায় কোনো তথ্য হ্যাকিং হয়নি, প্রচলিত নিয়মকানুন মেনেই লেনদেন হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের নিউইয়র্ক শাখায় থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর, গোপন পাসওয়ার্ড ও বার্তা পাঠানোর সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে প্রচলিত নিয়ম মেনে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনার আলোকেই লেনদেন হয়েছে। তারপরও ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ডলার পাঠানোর নির্দেশনার কারণে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সন্দেহ হলে তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি বার্তা পাঠায়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এতে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ‘এখনতো ফেড বারবার আমাদের সঙ্গে বসতে চাচ্ছে। কারণ আমরা তাদের বলেছি, ৭৮০ মিলিয়নের ক্লিয়ারেন্স অর্ডার তোমরা ব্লক করতে পারলে ১০১ মিলিয়নের ৫টা লেনদেন কেন ব্লক করনি। এখানে তোমরা দায় এড়াতে পার না।’
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিচালনা ব্যবস্থা সম্পর্কে হ্যাকারদের খুব স্বচ্ছ ধারণা ছিল বলে মনে করছেন সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে এমন লোকেরা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হ্যাকাররা ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কারও কারও ওপর নজরদারির মধ্য দিয়ে এই ধারণা অর্জন করে থাকতে পারে। ব্যাংকিং খাতের এক বিশ্লেষকের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, অর্থ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ওপর কঠোর নজরদারিও জারি রাখতে হয়েছে হ্যাকারদের, যেন তারা ব্যাংকিং প্রক্রিয়াটা পুরোপুরি বুঝে নিতে পারে।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিলিং রুম (যে কক্ষ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করা হয়) থেকেই বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করা হয়। আর এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ ও ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টের অধীনে পরিচালিত হয়। ডিলিং রুমে এ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে তিনটি বিভাগ কাজ করে। এর মধ্যে ফ্রন্ট অফিস বার্তা তৈরি করে, মিডল অফিস বার্তাটি পাঠায় এবং ব্যাক অফিস বার্তার আলোকে লেনদেন ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা তদারকি করে। ফ্রন্ট ও মিডল অফিসের তিনজন কর্মকর্তার কার্যক্রমের প্রয়োজন পড়ে লেনদেনের বার্তা পাঠাতে। যে কোনো লেনদেনের আদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায় থেকে অনুমোদিত হলে ডিলিং রুমের একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে একটি বার্তা তৈরি করেন। আরেকজন কর্মকর্তা ওই বার্তাটি ঠিকমতো হয়েছে কি না তা যাচাই করেন। অন্য এক কর্মকর্তা বার্তাটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠান। এসব লেনদেন ঠিকমতো হচ্ছে কি না এবং লেনদেনের পর অ্যাকাউন্টে কী পরিমাণ অর্থ থাকল সেগুলো তদারকি করে ব্যাক অফিস। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের অধীন। তবে হ্যাকারা যে টাকা চুরি করেছে এর মধ্যে ২০ মিলিয়ন উদ্ধারের দাবি করলেও এখনো ৮১ মিলিয়ন রয়েছে হ্যকারদের হাতে।
এফবিআই’র সহযোগিতা চাইছে বাংলাদেশ ব্যাংক
চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সহযোগিতা চাইছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে পাঠানো হয় বলে জানা যায়।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে সহযোগিতা চেয়ে এফবিআইকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এদিকে ফিলিপাইনের এ ছয়জনের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব ছয় মাসের জন্য জব্দ করার নির্দেশনা দিয়েছে দেশটির আদালত। তাদের অ্যান্টি মানিলন্ডারিং কাউন্সিল এ বিষয়ে তদন্ত করছে।
১০ কোটি ডলার ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই!
এদিকে হ্যাকড হওয়া টাকার মধ্যে ১০ কেটি ডলার ফেরত পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেল এমন তথ্য দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা হ্যাকড হয়েছে ব্যাংকের ‘সুইফট কোড’ ও ‘সিস্টেম’ ব্যবহার করেই৷ হ্যাকাররা যেভাবেই হোক বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ঢুকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সিস্টেমে পেমেন্ট অ্যাডভাইজ পাঠায়। বলা বাহুল্য, এটি একটি সয়ংক্রিয় ব্যবস্থা৷ হ্যাকাররা ফিলিপাইন্সের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পরিশোধের জন্য মোট ৩০টি অ্যাডভাইজ পাঠিয়েছিল বলে জানা গেছে৷ এর মধ্যে পাঁচটি অ্যাডভাইজে মোট ১০ কোটি ডলার (১০০ মিলিয়ন) হ্যাকারদের হাতে চলে যায়৷
অ্যাডভাইজগুলো ব্যক্তিগত হিসেবে অর্থ দেয়া হওয়ায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সন্দেহ হয়৷ সাধারণত কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর করে না৷ তাই এই সন্দেহ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায় যে, তাদের পক্ষ থেকে অর্থ স্থানান্তরের জন্য কোনো অ্যাডভাইজ পাঠানো হয়নি৷
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল দাবি করেন, ‘‘টাকা হ্যাকড হওয়ার এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো দোষ নেই৷ বরং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কেরই কোনো গোলমাল হয়েছে৷” ফেডারেল রিজার্ভ অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করে৷ তারা জানায় যে, এতে তাদের কোনো দায়িত্ব নেই৷ তাছাড়া এটা হতেই পারে না৷..বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন