এটি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

‘হামাদের স্কুলটা ভাঙ্গা। যখন তুফান আহে স্কুলঘর লড়ে। তখন হামরা সবাই মিলে ঘরটাকে ধরে রাখি। হামার বেজান ডর লাগে।’ এই কথাগুলো বলল ছনখলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী অঞ্জলি।
এখনও রয়েছে ছন ও বাঁশের তৈরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত ছনের তৈরি এই ছনখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। টিনের দেয়াল, ছনের তৈরি ছাদ ও সিমেন্টের কাগজ ও বাঁশ দিয়ে বানানো হয়েছে ক্লাস রুমের ভিতরের পার্টিশন। গোয়াল ঘরের মত জরাজীর্ণ ভাঙ্গা ঘরে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
চৈত্রের ঝড়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে প্রতিদিন ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। বৈশাখ মাস শুরুর আগে ও চৈত্র মাসের শেষের দিকে ঋতু বৈচিত্রের প্রভাবে ঝড় তুফান ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তাই আকাশে কালো মেঘ আর দমকা হাওয়া দেখলেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ ফুটে উঠে।
ঐ স্কুলে অধ্যায়নরত ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী যমুনা মুন্ডা, বিভব দেব, সজিব মিয়া ও রিমা মুন্ডা জানায়, ক্লাস চলাকালীন ঝড় তুফান আসলে ভয়ে তারা কান্না করে।
আগামী প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশকে সুন্দর সম্মৃদ্ধ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২১ রূপকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার বহুমূখী পরিকল্পনা করছে। অথচ যাদের জন্য ভিশন-২১ রূপকল্প সেই কোমলমতি শিশুদেরই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ভিতরে সাতগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত এই ছনখলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এই বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হলেও শিক্ষক গেজেট এখনও হয়নি। যার ফলে ঐ স্কুলের শিক্ষিকারা এখনও সরকারি বেতনের আওতাভূক্ত হননি।
জানা যায়, বাগান অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের সামান্য সম্মানী প্রদান করেন। নামেমাত্র এই সম্মানী নিয়েই র্দীঘ ৭ বছর যাবত ঐ স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষিকারা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতগাঁও চা বাগান ছনখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ২০১১ সালে ১ম সমাপনী পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে। গত ২ বছর যাবত সমাপনী পরীক্ষায় এ স্কুলের পাসের হার ১০০ ভাগ।
এলাকাবাসী মনে করেন, এ স্কুলে চা শ্রমিকদের শিশুরা লেখাপড়া করে তাই স্কুলটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে কেউ নজর দেন না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অমিতা দেব জানান, প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ১২৩ জন ছাত্রছাত্রী আছে এ স্কুলে। ২ শিফটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। ১ম শিফট সকাল ৯টা থেকে ১২ পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক থেকে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত ও ২য় শিফটে বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হয়। তাদের পাঠদানের জন্য আছেন ৪ জন শিক্ষিকা।
তিনি বলেন, আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক মেধাবী। গত ২ বছর যাবত সমাপনী পরীক্ষায় আমাদের স্কুলের পাসের হার ১০০ ভাগ। শুধুমাত্র অবকাঠামোগত সমস্যাটাই আমাদের প্রধান সমস্যা। বিশেষ করে ঝড় বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব সমস্যায় পড়তে হয়। ঝড় আসলে স্কুল ঘরে থাকার পরিবেশ থাকে না। বাচ্চারা ভয়ে কান্না করে।
তিনি আরো জানান- গত ফেব্রুয়ারি মাসে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এসে স্কুলটি পরিদর্শন করে গেছেন। তবে স্কুল ঘরটি ভালোভাবে সংস্কার হবার আভাস এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন বলেন, এ স্কুলের আগেই কোনো অবকাঠামো ছিল না। এ স্কুলগুলি ৩য় পর্যায়ে সরকারিকরণ হয়েছে এবং শিক্ষক গেজেট হয় নাই, তাই এগুলির অবকাঠামোগত উন্নয়ন আস্তে আস্তে হবে।
তিনি জানান, শিক্ষক গেজেট হওয়ার সাথে সাথে স্কুলের বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করা হতে পারে বলে আশ্বাস দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি গণ অধিকার পরিষদের
জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছেবিস্তারিত পড়ুন

নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া
গণ অধিকার পরিষদের আহত সভাপতি নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেনবিস্তারিত পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি ক্যাথলিক স্কুলে জানালা দিয়েবিস্তারিত পড়ুন