এমপি আনার হত্যা: আরও কয়েকজনের নাম মিলেছে, গ্রেপ্তারে মাঠে গোয়েন্দারা
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় নতুন করে আরও কয়েকজনের নাম পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে কাজ করছেন গোয়েন্দারা। এরইমধ্যে আনার হত্যার ঘটনায় সাতজনকে দেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ জানিয়েছেন, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সর্বশেষ দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালত তাদেরকে ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেই রিমান্ডের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল জানায়- তাদেরকে ভারতে যাওয়ার জন্য আক্তারুজ্জামান শাহীন পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দেন। ঢাকার বসুন্ধরায় শাহীনের বাসায় থেকে ফয়সালকে হৃদরোগের রোগী ও মোস্তাফিজকে কিডনি রোগীর ভুয়া কাগজপত্র, ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ভারতের ভিসা করানো হয়। যতদিন পর্যন্ত তাদের ভিসা হয়নি ততদিন তারা শাহীনের ঢাকার বাসায় ছিলেন।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘ভিসা হওয়ার পর আক্তারুজ্জামান শাহীন ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে; যাতে তারা রেলযোগে ভারতে চলে যান। ভারতে গিয়ে তারা ১০ এপ্রিল কলকাতার সঞ্জিবা গার্ডেনে প্রবেশ করেন। ১৩ মে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসা থেকে বেরিয়ে লাল গাড়িতে করে এমপি আনারকে সঞ্জিবা গার্ডেনে নিয়ে আসেন ফয়সাল। এরপর শাহীনের পিএস পিন্টুর কাছে থেকে অচেতন করার জন্য ক্লোরোফর্ম ও চাপাতি নিয়ে আসার দায়িত্ব পালন করেন মোস্তাফিজ, ফয়সাল ও জিহাদ।’
মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হারুন আরও জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ড শেষে যখন সবাই চলে যায় তখন সর্বশেষ মোস্তাফিজ ও ফয়সাল সঞ্জিবা গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। সেখানেও শাহীনের সঙ্গে তাদের কথা হয়। শাহীন তাদের নির্দেশ দেয়, ফ্ল্যাটটিতে যেন কোনো চুল এবং রক্তের দাগ না থাকে; সবকিছু গুছিয়ে ঠিকঠাকভাবে রাখতে বলা হয়। এরপর ১৯ মে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশে আসার টিকিটও শাহীন কেটে দেন। বাংলাদেশে এসেও শাহীনের ঢাকার বাসার তিনতলায় ওঠেন মোস্তাফিজ ও ফয়সাল।
আনার হত্যাকাণ্ডের ঘাতক আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া যখন ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হন তখন শাহীনের দেওয়া ৩০ হাজার টাকা নিয়ে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেন জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এরপর তারা পরিকল্পনা করে দুর্গম পাহাড়ে কোনো মন্দিরে গিয়ে হিন্দু সেজে সেখানে লুকিয়ে থাকবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ের পাতাল কালীমন্দিরে হিন্দুদের ধুতি পড়ে মাকালী পূজা শুরু করে এবং নাম পরিবর্তন করে ফেলে।’
আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে মোট সাতজন গ্রেপ্তার আছেন। সাতজনের মধ্যে ছয়জন আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আরও যাদের নাম এসেছে তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। শিগগির তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবির এই ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা।
গত ১২ মে ভারত গিয়ে নিখোঁজ হন এমপি আনার। এর নয় দিন পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে তাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়েছে। পরে এই ঘটনায় সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা জানান, আনারকে খুন করে তার মরদেহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত মরদেহের কোনো হদিস মেলেনি। আনার নিখোঁজের ঘটনায় ২২ মে তার মেয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন