এমপি রানার ভাইয়ের নির্দেশেই দুই যুবলীগ কর্মীকে হত্যা
টাঙ্গাইলে জেলা যুবদলের সভাপতি খন্দকার আহমেদুল হক শাতিলকে হত্যা করতে না পারায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানার ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকনের নির্দেশে দুই যুবলীগ কর্মীকে খুন করে লাশ গুম করা হয়।
এমপি রানার সহযোগী যুবলীগ নেতা ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মোর্শেদ তার দল নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।
ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে যুবলীগের দুই কর্মী হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়।
গ্রেফতারকৃত এই দুই আসামির মধ্যে শাহাদত হোসেন সাধু (৪৫) বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে গত শনিবার খন্দকার জাহিদুল ইসলাম (৩৮) টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
তাদের দুজনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুপম কান্তি দাশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি অশোক কুমার সিংহ যুগান্তরকে বলেন, এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে দুজনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আদালত সূত্র জানায়, জাহিদুল ও শাহাদত জবানবন্দিতে বলেছেন- ‘মামুন ও শামীম হত্যার কিছুদিন আগে এমপি রানার ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন তার অফিসে মোর্শেদ, স্বপন, জাহিদ, সবুজসহ কয়েকজনকে ডেকে নেন। জাহিদুর তাদের পাঁচ লাখ টাকা ও একটি রিভলবার দিয়ে বেতকা কলেজগেট এলাকার জেলা যুবদলের সভাপতি খন্দকার আহমেদুল হক শাতিলকে হত্যার ব্যবস্থা করতে বলেন। একই সঙ্গে হত্যার কাজে প্রয়োজনীয় আরো টাকা ও অস্ত্র মোর্শেদকে জোগান দিতে বলেন।’
জবানবন্দিতে তারা বলেন, ‘জাহিদুরের কাছ থেকে মোর্শেদ দায়িত্ব পেয়ে মামুন ও শামীমকে ডেকে আনেন শাতিলকে হত্যার জন্য। এই হত্যার জন্য দুটি মোটরসাইকেল, সাত লাখ টাকা ও দুটি রিভলবার (একটি জাহিদুরের দেয়া) মামুন ও শামীমকে দেন। কিন্তু তারা হত্যা না করায় পরবর্তিতে তাদের দুজনকেই মোর্শেদের অফিসে ডেকে এনে হত্যা করে লাশ বাসাইলের নথখোলায় নিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৬ জুলাই সকালে সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ শামীম (২৮) ও মামুন মিয়া (২৫) বাড়ি থেকে টাঙ্গাইল শহরের উদ্দেশ্যে বের হন। তারপর তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে নিখোঁজ শামীমের মা আছিয়া খাতুন বাদী হয়ে পরদিন ১৭ জুলাই টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
নিহত দুজনের পারিবারিক সূত্র জানায়, নিখোঁজ মামুনের বাবা আবদুল আজিজ বাদী হয়ে প্রায় এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
মামলায় মোর্শেদসহ তার দলের ১৩ জনকে আসামি করা হয়। সদর থানা পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি রেকর্ড করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দেয়া হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টাঙ্গাইলে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ঝলককে বাড়ি থেকে ডেকেবিস্তারিত পড়ুন
তীব্র যানজটঃ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি, খানা খন্দক আর ভাঙ্গাচোরা ব্রিজেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ ট্রেন বন্ধ !
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় পৌলি নদীর ওপরের রেলসেতুর একাংশের মাটি বন্যারবিস্তারিত পড়ুন