আল কায়েদা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানের গ্যারিসন শহরে অ্যাবোটাবাদে আমেরিকান কমান্ডো অভিযানে নিহত হবার ঘটনা নিয়ে যেন গল্পের আর শেষ নেই। দিন যত যাচ্ছে গল্পের ডালপালা ততো বাড়ছে।

এবার সেই ডালপালাকে আরো বিস্তৃত করলেন ওসামা বিন লাদেনের স্ত্রী। হত্যার পর লাদেনের মৃতদেহ সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার মার্কিন তথ্যকে একেবারেই গুজব বললেন ইয়েমেনি বংশোদ্ভুত স্ত্রী আমাল সাদ্দাহ। এমন নতুন তথ্য দিয়ে তিনি বলেলেন আগের প্রচারিত ঘটনাগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

স্বামী ওসামা বিন লাদেনের লাশ নিয়ে যেতে পারেনি বলে দাবি করেন সাদ্দাহ। অ্যাবোটাবাদেই লাদেনের লাশ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বলে উল্লেখ করেন। এ নিয়ে নতুন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন আমাল সাদ্দাহ। ফলে এ ধরনের তথ্যে বিশ্বব্যাপী নতুর করে হৈ চৈ পড়ে গেছে। আমাল সাদ্দাহ সম্প্রতি সৌদি আরবের ‘উকাজ’ নামে একটি পত্রিকার সাক্ষাৎকারে বোমা ফাটানোর মতো এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেন।

ওই পত্রিকাকে আমাল বলেন, ‌‘শায়েখকে হত্যা মিশনের সময় আমি সঙ্গেই ছিলাম। আমরা দেখলাম হঠাৎ করে হেলিকপ্টার থেকে অ্যাবোটাবাদের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে সৈন্যরা। চারপাশ থেকে গুলি আসছে। শায়েখ তখন অস্ত্র হাতে নিলেন এবং দরজার পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মোকাবিলা করছিলেন। কিন্তু তরা সংখ্যায় ছিল অনেক। যার কারণে একা কুলিয়ে উঠতে পারেননি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি শায়েখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটা গুলি এসে শায়েখের মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে পড়ে যান এবং মুহূর্তেই শহিদ হন। এটা আল্লাহ পাকের বড় রহমত ছিল। শায়েখের মৃত্যু হয়েছে খুব অল্প সময়ে এবং কোনো কষ্টই হয়নি। সৈন্যরা ঘরে ঢুকেই দেখে তিনি শহীদ হয়ে গেছেন।

তারা শায়েখের লাশ খুব দ্রুত হেলিকপ্টারে উঠায়। সৈন্যরাও হেলিকপ্টারে উঠে এবং দ্রুত হেলিকপ্টার ছেড়ে দেয়। কিন্তু হেলিকপ্টারটি সামান্য উপরে উঠতেই ভয়ঙ্কর বিষ্ফোরণের শিকার হয়। এতে হেলিকপ্টারে থাকা সব সৈন্যই নিহত হয়। শায়েখের লাশ মাটিতে মিশে যায়। সেখানে কেবল হেলিকপ্টারের ছোট ছোট কিছু টুকরো পাওয়া যায়।’

নিহতের পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সব বক্তব্যই মিথ্যা ছিল ‍উল্লেখ করে আমাল বলেন, ‘বিন লাদেনকে নিয়ে যে ইচ্ছা ছিল ওবামার সেটাও পূরণ হয়নি। ওবামা ও হোয়াইট হাউজ চেয়েছিলেন, শায়েখের লাশ আমেরিকায় নিয়ে যাবেন এবং লাশ সামনে রেখে বিশ্বকে দেখাবেন তিনি সফল। কিন্তু আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ হতে দেননি। আল্লাহ তার লাশকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন যাতে লাশ নিয়ে কেউ কিছু করতে না পারে।’

আমাল সাদ্দাহ জোর দিয়েই দাবি করে বলেন, ‘ওসামার লাশ সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়ার যে ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে তা পুরোটাই মিথ্যা। যা অকল্পনীয়। তার লাশ আমেরিকায় নিয়ে যেতে না পেরেই এসব গুজব ছড়িয়েছে। আসলে আল্লাহ ওসামা বিন লাদেনকে মৃত্যুর আগে এবং পরে দুই অবস্থায়ই শত্রুর কাছ থেকে হেফাজত করেছেন। এ জন্য তিনি মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন।’