ওয়ালশের যে রেকর্ড ভাঙা প্রায় অসম্ভব!
কোর্টনি ওয়ালশ। বাংলাদেশের বোলিং কোচ এখন। এই দেশের ইতিহাসে হাই প্রোফাইল কোচদের অন্যতম একজন। মাশরাফি বিন মর্তুজাদের নিয়ে ব্যস্ত। ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা ফাস্ট বোলারদের একজন এই জ্যামাইকান। প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক পেরিয়েছিলেন। ৫১৯ উইকেটের বিশ্ব রেকর্ড নিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন। ২০০১ সালে খেলা ছেড়েছেন। এরপর গ্রেট ওয়ালশকে ছাড়িয়ে গেছেন আরো চার বোলার। টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ডে এখন পঞ্চম এই ক্যারিবিয়ান। কিন্তু এমন এক রেকর্ড আছে ওয়ালশের যা হয়তো কোনোদিন ভাঙতে পারবেন না কোনো ক্রিকেটার! আপাত দৃষ্টিতে প্রায় অসম্ভবই মনে হয় তা।
ওয়ালশের ব্যাটিং দেখা ছিল খুব উপভোগের ব্যাপার। ৬ ফুট সাড়ে ৫ ইঞ্চি উচ্চতার ব্যাটসম্যান এগারোতেই থাকতেন বেশিরভাগ ম্যাচে। হাসতে হাসতে আসতেন ব্যাট করতে। ব্যাটটাকে আয়ত্বে রাখা তার জন্য ছিল খুব কঠিন কাজের মতো। একেকটা বল খেলতেন। ঠেকিয়ে বা ছেড়ে দিয়ে বেঁচে যেতে পারলে ওয়ালশের খুশি দেখে কে! আর রান আসলে তো কথাই নেই! সবাই জানতেন, ওয়ালশের ব্যাটিংয়ে আসা মানে কয়েক বলের ব্যাপার মাত্র। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ফুরলো বলে। ওয়ালশ নিজেও তা খুব ভালো জানতেন বলেই অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানের হাতে স্ট্রাইক তুলে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা থাকতে তার। কখনো ভাগ্য ভালো থাকতো। কখনো থাকতো না। এইভাবেই ১৩২ টেস্টের ১৮৫ ইনিংসে ব্যাট করেছেন। ৯৩৬ রান করেছিলেন ৭.৫৪ গড়ে। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩৬। এবং অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ক্যারিয়ারে ১৯টি ছক্কা ও ৭৭টি চার মেরেছেন ওয়ালশ। আরো অবিশ্বাস্য হলো ৬১ ইনিংসে তার অপরাজিত থেকে যাওয়া।
কিন্তু রেকর্ডটা কি? রেকর্ডটা হলো টেস্টের শোয়াশো বছরের বেশি সময়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার শূণ্য বা ডাক মারার অতি অশ্চর্য্য রেকর্ডটা ওয়ালশের। আজ থেকে দেড় দশক আগে অবসরে গেছেন। কিন্তু তার রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে এমন শঙ্কা সেই ভাবে কখনো জাগেনি। ৪৩ বার কোনো রান না করেই হাসতে হাসতে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন ওয়ালশ। ব্যাটিংটা তো তার কাজ ছিল না। নিজের কাজ বোলিংয়ে ছিলেন মাস্টার।
তবে নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার ক্রিস মার্টিন হয়তো শ’ খানেক টেস্ট খেলতে পারলে ওয়ালশকে ছাড়িয়ে যেতে পারতেন! সবচেয়ে বেশিবার শূণ্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডে ওয়ালশের পরেই তার অবস্থান। ৭১ টেস্টে ৩৬ বার ডাক মেরেছেন। পারসেন্টেজের হিসেবে অবশ্য ওয়ালশের চেয়ে এগিয়ে এই কিইুই! তার পরের জায়গা দুটি দুই অস্ট্রেলিয়ান গ্রেটের। সাবেক ফাস্ট বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা ৩৫ ও লেগ-স্পিনার শেন ওয়ার্ন ৩৪ বার এই কীর্তি গড়েছেন। টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৮০০ উইকেট শিকারী মুত্তিয়া মুরালিধরনের ব্যাটিং দেখাও কম মজার বিষয় ছিল না। ১৩৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারে শূণ্য হাতে বিদায় নেওয়ার ঘটনা এই লঙ্কান ঘটিয়েছিলেন ৩৩ বার। তিনি পঞ্চম স্থানে।
শুরুতে বলা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালি দিনের শেষ যোদ্ধাদের একজন ওয়ালশের এই রেকর্ড হয়তো কোনোদিন কেউ ভাঙতে পারবেন না। কেন? ভেবে দেখুন। এই রেকর্ডে বোলারদের আধিপত্য। প্রথম ১২জনই বোলার। তার মানে রেকর্ডটা ভাঙতে হলে তাকে কোনো বোলারই হতে হবে। কিন্তু এখন এটা টি-টোয়েন্টির যুগ। অর্থকরী ক্যারিয়ার গড়তে টেস্টকে আগেভাগে বিদায় বলে দেওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়েছে। ভবিষ্যতে হয়তো সেই প্রবণতা আরো বাড়বে। তাহলে? ৫৩ বছরের ওয়ালশ হয়তো এই রেকর্ড নিয়েই একদিন চলে যাবেন চির অজানায়। অবশ্য সেটা শেষ কথা না। ক্রিকেট তো মহান অনিশ্চয়তারও খেলা। নাকি!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন