ও বন্ধু আমার…
বন্ধুত্ব শব্দটিতে কোনো বাধা নেই। না আছে বয়সের বাধা না আছে কোনো গণ্ডি। খুব ছোট বয়স থেকেই আমাদের মাঝে এক না বলা সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। আর তা হচ্ছে বন্ধুত্ব। এর জালে আমরা কখন জড়িয়ে যাই তা আমরা নিজেই জানি না। তবে প্রত্যেকেই চায় এমন মিষ্টি মধুর জালে নিজেকে জড়াতে। জীবনের পথে হাঁটতে যার হাত না হলেই নয় তা হচ্ছে বন্ধু। আপনার সবচেয়ে খারাপ সময়ে আর কেউ পাশে না দাঁড়ালেও বন্ধু ঠিকই দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। তাকে চারিদিকের ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে গাছের মত আগলে রাখে।
বন্ধুত্বের কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। দেশ, জাতি অনুযায়ী বন্ধুত্বে ব্যতিক্রম থাকলেও তাকে কোনো যন্ত্র দিয়ে মাপা যায় না। তাকে আটকেও রাখা যায় না। মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে বন্ধু অন্যতম। তাইতো তাকে জুড়ে পুরো একটি দিন আনন্দ উৎসবে মেতে থাকা হয়। আর সেই দিনটি হচ্ছে আগস্ট মাসের দ্বিতীয় রোববার। আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস। সেই দিনটিই আজ।
বন্ধুত্বের সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো লিঙ্গ নেই। একজন ছেলেই যে কেবল একজন ছেলের বন্ধু হতে পারে কিংবা একজন মেয়েই যে কেবল একজন মেয়ের ভালো বন্ধু হতে পারে তা কখনো কোথাও বলা হয়নি। বন্ধুত্ব সম্পুর্ণ মানসিক একটা সম্পর্ক। একই ক্লাসে পড়া সবার সাথে এ জন্যই বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। প্রকৃতপক্ষে যাদের মানসিকতার সাথে অপর মানুষটির মানসিকতা মিলে যায় তারাই হয়ে ওঠে বন্ধু। তাদের মধ্য গড়ে ওঠে এক অনাবিল সম্পর্ক। আবার শুধু একজনের সাথেও দেখা যায় খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠছে। তাকে তার সারাদিনের একটা অংশ দিয়ে দিতেও গায়ে লাগছে না। তার সাথে ঘুরতে বেড়াতে আপনি সবচেয়ে বেশি স্বাছন্দ্যবোধ করছেন এর মানে তার সাথে আপনার মানসিক মিল সবচেয়ে বেশি আর এভাবেই আমাদের মাঝে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।
কখনো দেখা যায় মনের কথাগুলো পরিবারের কারো সাথেও ভাগাভাগি করা যাচ্ছে না। তখন শেষ সম্বল হয়ে থাকে সেই বন্ধু। আবার মাঝে মাঝে এই বন্ধুদের মাঝে সৃষ্টি হয় অনেক বড় ঝগড়া। অল্প কিছুদিনের মনোমালিন্য এর পর আগের চেয়েও মিষ্টি সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তবে বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু বুঝেশুনে আগানো ভালো। যদি আপনি খারাপ সঙ্গের সঙ্গি হয়ে যান তবে আপনাকে এর ফলাফল ভোগ করতে হবে সারাজীবন। একজন খারাপ বন্ধু শত্রুর থেকেও খারাপ। আপনার জীবনের ধারা বদলে যেতে পারে এই বন্ধুর জন্য। তাই বন্ধু নির্বাচনের সময় একটু সজাগ থাকুন।
মূলত বন্ধু নামক এই শব্দের সাথে আমাদের প্রথম পরিচয় হয় স্কুলে। শহরে এবং গ্রামের ক্ষেত্রে যদিও চিত্রটা অনেকখানি ভিন্ন। একজন গ্রামে বেড়ে ওঠা ছেলে বা মেয়ে বন্ধু পেয়ে যায় খুব অল্প বয়সেই। পুতুল বিয়ে, খোলা আকাশে ঘুড়ি ওড়ানো, নদীতে সাতার কাটা এভাবেই বেড়ে ওঠে তাদের শৈশব। বন্ধুত্বের অর্থটাও তাই তাদের কাছে কিছুটা ভিন্ন। খুব অল্পতেই এদের মধ্যকার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ভাঙ্গে না। অনেকদূর পর্যন্ত যায় এই সম্পর্ক। অনেক বছর পর দেখা হলেও তাদের মাঝে কাজ করে সেই ছোট বেলার আমেজ। শহুরে জীবনে বন্ধুত্ব ভিন্ন। বাসা বাড়িতে বন্দি যেন সেই খোলা আকাশ। তাই তাদের মাঝের সেই বন্ধনটা আসতেও সময় নেয় অনেক। তবে স্কুল থেকে শুরু হওয়া বেশির ভাগ বন্ধুত্বই যায় বহুদূর। আর একবার মনেপ্রাণে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বতে থাকে না কোনো খাঁদ।
ফলে আপনি যেই পরিবারেরই হোন না কেন বন্ধুত্বের বেলায় তা মূখ্য নয়। মনের মিলের মূল্যই এখানে সবচেয়ে বেশি। তাইতো আগে একে অন্যকে না দেখেই শুধু পত্রমিতালি দিয়ে বা পেনফ্রেন্ড হয়েও তাদের মাঝে গড়ে ওঠতো এক অটুট বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের কোনো বয়স নেই। এজন্য চাই একজন সঠিক মনের বন্ধুত্বের সন্ধান। যুগে যুগে বন্ধুত্ব বেঁচে থাকুক সবার মাঝে অনাবিল আনন্দ হয়ে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন