কওমি মাদ্রাসা নিয়ে বিরূপ মন্তব্যে প্রতিবাদ করি: প্রধানমন্ত্রী
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই শিক্ষা নিয়ে অনেককে বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা যায়। আমার সামনে কেউ এটা করলে আমি প্রতিবাদ করি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার শুরুটাই হয়েছে কওমি মাদ্রাসা দিয়ে। এটা না হলে কেউ শিক্ষিত হতে পারতাম না।’ এ সময় তিনি ব্রিটিশিবিরোধী আন্দোলনে কওমি মাদ্রাসার অবদানের কথা স্মরণ করেন।
মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আলেমদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কওমি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতির ঘোষণা দিতে এই অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়। আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে তিন শতাধিক আলেম এতে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী আলেমরা তার দাওয়াত কবুল করে গণভবনে আসায় তাদের কৃতজ্ঞতা জানান। আলেমদের এই আগমনে গণভবন ধন্য বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতার পরপর বঙ্গবন্ধু মাদ্রাসা শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। মাদ্রাসার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। তিনিই প্রথমে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড করেন।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধুও কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন। মুসলমানদের শিক্ষিত হওয়ার পেছনে কওমি মাদ্রাসার অবদান অনেক বলে মনে করতেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার ১৪ লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাদের কোনো স্বীকৃতি নেই। আমরা ক্ষমতায় এসেই তাদের স্বীকৃতির উদ্যোগ গ্রহণ করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মীয় শিক্ষা না হলে শিক্ষাই পূর্ণাঙ্গ হয় না। কওমি মাদ্রাসাই মূল শিক্ষা। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা স্বীকৃতির ব্যবস্থা করছি।’ প্রধানমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়া হয়েছে এই স্বীকৃতি বাস্তবায়নের জন্য।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার অনেকগুলো বোর্ড আছে। সবার দাবি-দাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়েই আমি স্বীকৃতি দিচ্ছি। এই স্বীকৃতি বাস্তবায়নে আলেমদের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। এই কমিটিই নির্ধারণ করবে কীভাবে বাস্তবায়ন হবে স্বীকৃতি।’ এই স্বীকৃতি নিয়ে কারও ছোটখাট আপত্তি থাকতে পারে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ধীরে ধীরে তা আমরা দূর করবো ইনশাআল্লাহ।
বঙ্গবন্ধুর পরিবার ঐতিহ্যগতভাবেই ধার্মিক জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনার আমার পরিবারের ইতিহাস জানেন। ধার্মিকতা আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। তবে অন্যের ধর্মের প্রতি আমরা বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। এটা আমাদের ধর্মও বলেছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার দেশের সব জেলা ও উপজেলায় একটি করে মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার করে দেবে। এখানে মানুষ ইসলামের মূলধারার শিক্ষা পাবে।
জঙ্গিবাদ ঠেকাতে আলেমদের সহযোগিতা কামনা
ইসলাম কখনো জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামের নাম নিয়ে কেউ নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে না। মানুষ হত্যা করলেই নাকি তারা জান্নাতে যাবে। এই বিভ্রান্তি থেকে সরাতে আলেমদের সহযোগিতা চাই।’
বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নিজেরা নিজের ক্ষতি। ইসলাম ধর্ম শ্রেষ্ঠ, শান্তির ধর্ম। কিছু লোক মুসলমানের জীবন অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে। আমাদের ধর্মের মানসম্মান নষ্ট করে দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে-বিদেশে কোথাও যখন কেউ সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলামকে যুক্ত করে তখন আমার খুব কষ্ট হয়। আমি এর প্রতিবাদ করি। যারা সন্ত্রাস করে তারা সন্ত্রাসী, এটাই তাদের ধর্ম। আমি বলি, আমাদের পবিত্র ধর্মটাকে এভাবে বদনাম দেবেন না।’
প্রধানমন্ত্রী আলেমদেরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন