কক্সবাজারে সৈকত যেন জনসমুদ্র
দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির পর মাঝখানে একদিন বাদ দিয়েই আবার বিজয় দিবসের সরকারি ছুটি। মাঝখানের ওই একদিন যারা অফিস থেকে ছুটি নিয়েছেন তারা একসঙ্গে পেয়ে গেছেন চার দিনের লম্বা ছুটি। আর এই ছুটিতে অনেকেই ছুটেছেন সমুদ্রের নগরী কক্সবাজারে। সঙ্গে বিজয় দিবসের দিন আশেপাশের জেলা থেকে আসা পর্যটকরা তো রয়েছেনই। তাতে বিজয় দিবসের দিন কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত যেন হয়ে উঠেছে আরেক জনসমুদ্র। পুরো সৈকতজুড়ে কেবল পর্যটক আর পর্যটক। কোথাও যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই!
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের দিন ২ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
বেড়াতে আসা এসব পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সমুদ্রসৈকত, সেন্টমার্টিন, ইনানী পাথুরে বিচ ও মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
কক্সবাজার হোটেল–মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত হোটেল–মোটেল ও কটেজের ৯০% কক্ষ বুকিং ছিল। ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর শতভাগ বুকিং। আর এর ফলে যারা অগ্রিম বুকিং না দিয়ে গেছেন তারা বেশ বিপাকেই পড়েছেন।
কক্সবাজার কলাতলী–মেরিন ড্রাইভ হোটেল–রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি মুকিম খান বলেন, “পর্যটন মৌসুম বহু আগে শুরু হলেও সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে বিধিনিষেধ থাকায় এতদিন পর্যটন ব্যবসা জমেনি। ডিসেম্বরের শুরুতে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু হলে চাঙ্গা হয়ে উঠে পর্যটন শিল্প। এর ফলে বেড়েছে পর্যটক। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে।”
কক্সবাজার হোটেল–মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, “চাহিদা বেশি থাকলেও সেন্টমার্টিনে দৈনিক মাত্র দুই হাজার পর্যটক যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এ কারণে আগ্রহ থাকলেও অনেক পর্যটক এ বছর কক্সবাজারে আসছে না। তবে ভারতে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ ভিসা বন্ধ থাকায় সেই শূন্যতা অনেকটা পূরণ হয়েছে। ভারত যেতে না পেরে অনেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসছেন।”
এদিকে বর্তমানে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা ও থানা পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় রাখা হয়েছে।
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক ফারিয়া রশীদ বলেন, “আমরা বন্ধুরা মিলে কক্সবাজারে ভ্রমণে এসেছি। রুম বুকিং না দিয়ে এখানে এসে বিপদে পড়েছি। কোনো রুম পাচ্ছি না। কটেজে কিছু রুম খালি আছে এগুলো মানসম্মত নয় এবং দামও বেশি।”
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক পারভেজ চৌধুরী বলেন, “সন্তানদের পরীক্ষা শেষ। তাই তাদের সময় দিতে পুরো পরিবার আসছি। সমুদ্র পাড়ে এসে এক সঙ্গে এত মানুষ দেখে ভালো লাগছে।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট ও লাবনী পয়েন্টে পর্যটকে ভরা। অন্য পয়েন্টগুলোতে চোখে পড়ার মত ভিড় ছিল। আগত পর্যটরা বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে ঘোড়ায় চড়ে, ওয়াটার বাইক ও বিচ বাইকে চড়ে সমুদ্র দর্শনে মেতেছেন। কিছু পর্যটক নোনা জলে স্নান করতে নেমে আনন্দ উপভোগ করছেন।
কক্সবাজার পর্যটক সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসাইন বলেন, লা“খো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজার। আগত পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। কোনো পর্যটক হয়রানি হলে অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন, “আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের টহল আরও দুইগুণ বাড়ানো হয়েছে।”
ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি কক্সবাজার জেলা পুলিশও কাজ করছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, “পুলিশ ও র্যাবসহ সব আইন–শৃঙ্খলাবাহিনী সমন্বিতভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। সেইসঙ্গে সাদা পোশাকে রাতদিন গোয়েন্দা নজরদারিও রাখা হয়েছে।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
গবেষণা: শৃঙ্খলাহীন ঘুম ডেকে আনে হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোক
কারও কারও ঘুমানোর সয়ম একেবারে বাঁধা। কেউ সে সবের ধারপাশবিস্তারিত পড়ুন
তারেক রহমান: জনসমর্থন থাকায় বিএনপি অনেকের হিংসার কারণ
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের সমর্থন বিএনপি’র সঙ্গে রয়েছে দাবি করে দলটিরবিস্তারিত পড়ুন
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা: নরেন্দ্র মোদির ফেসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়া জানাবে ঢাকা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, “ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন