কম খাবার খেলে বার্ধক্য আসবে দেরিতে..!
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে যৌবন ধরে রাখা নিয়ে রাজা-মহারাজাদের দীর্ঘ সংগ্রামের কাহিনী। বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখতে ধন্বন্তরি চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া থেকে শুরু করে কিংবদন্তির ‘ফাউন্টেন অব ইয়ুথ’ বা চিরযৌবনের ঝরণার খোঁজে সেনাদল পাঠানো— কী করা হয়নি তখন? বাস্তবতা হলো, মৃত্যুর মতো জরাও অজেয়, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্য আসবেই। এ বার্ধক্যকে ঠেকানো অসম্ভব হলেও তার আগমনকে তো কিছুটা বিলম্বিত করেই দেয়া যায়। বিশেষজ্ঞরাও তা-ই বলছেন। ‘মলিকিউলার অ্যান্ড সেলুলার প্রোটিওমিকস’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে তারা দাবি করছেন, নিয়মিত কম কম খেলে জীবনে বার্ধক্য আসবে ধীরগতিতে। খবর সায়েন্স ডেইলি।
প্রসাধনীর নানা বিজ্ঞাপনে ত্বকে বার্ধক্যের চিহ্ন দূর করার দাবি করতে দেখা যায়। মনে রাখতে হবে, এতে বার্ধক্যের চিহ্ন দূর করতে পারার দাবি করা হয়, খোদ বার্ধক্যকে নয়। কারণ এসব পণ্য আসলে ত্বকের বহিরাবরণের গভীর পর্যন্ত গিয়ে বার্ধক্যের চিহ্ন দূর করতে পারে সর্বোচ্চ। কিন্তু বার্ধক্য তো আসে গোটা শরীরে, কোষে কোষে।
গবেষকরা বলছেন, নিয়মিত কম কম খেলে কোষের বার্ধক্যের প্রক্রিয়ার গতি ধীর হয়ে যায় অনেক। অর্থাত্ ক্যালরি সরবরাহ কমে গেলে দেহের কোষগুলোয় তার প্রভাব পড়ে। ক্যালরি সরবরাহ কমলে এসব কোষের রাইবোজোমের প্রোটিন সংশ্লেষণ কার্যক্রমও ধীর হয়ে আসে, একই সঙ্গে ধীর হয়ে আসে বার্ধক্যের গতি। সংশ্লেষণ কার্যক্রমের ধীরগতিতে শরীরে প্রোটিন সরবরাহ কমলেও নিজেদের মেরামত করে আনার জন্য অতিরিক্ত সময় পায় রাইবোজোমগুলো।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক ব্রিগহ্যাম ইয়ং ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক জন প্রাইস বলেন, ‘রাইবোজোম হলো দেহকোষের অত্যন্ত জটিল একটি অংশ। অনেকটা আমাদের গাড়ির মতো। রাইবোজোমেরও দ্রুত কার্যকারিতা হারানো অংশের প্রতিস্থাপন বা মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। গাড়ির টায়ার নষ্ট হয়ে গেলে আমরা পুরো গাড়িটিকেই বাতিল করে দিই না বা নতুন গাড়ি কিনে নিই না। বরং নষ্ট টায়ারটিকে প্রতিস্থাপন করে নিই।’
প্রাইস ও তার সহকর্মীরা গবেষণায় উঠে আসা ফলের সূত্র ধরে দাবি করেছেন, শরীরে রাইবোজোমের অংশবিশেষের কার্যকারিতা হারানোর বিষয়টিকে বিলম্বিত করার উপায় হলো, এতে ক্যালরি সরবরাহ কমানো।
ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে প্রাইস ও তার সহকর্মীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। এজন্য তারা গবেষণায় ব্যবহূত ইঁদুরগুলোকে দুটি দলে ভাগ করে নেন। এর মধ্যে একটি দলকে প্রচুর পরিমাণ খাদ্য দেয়া হয়। অন্য দলটির খাবারে ক্যালরি সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয় স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫ শতাংশ, শেষোক্ত দলের বেঁচে থাকার জন্য আসলে এটুকুই যথেষ্ট ছিল।
দেখা যায়, শেষোক্ত দলের ইঁদুরগুলোর শরীরে বার্ধক্য এসেছে অনেক পরে, এরা বেঁচেও ছিল বেশি দিন। অন্যদিকে প্রথমোক্ত দলটি বুড়িয়ে গেছে দ্রুত।
প্রাইস বলেন, ‘শরীরের ক্যালরি সরবরাহ হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে আয়ুষ্কালও বাড়তে থাকে। এখান থেকে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, ক্যালরি সরবরাহ সীমিত হয়ে এলে দেহকোষে যে বায়োকেমিক্যাল পরিবতর্ন ঘটে, তারই ধারাবাহিকতায় বার্ধক্যের প্রক্রিয়াও অনেক ধীর হয়ে আসে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন