কাগজের অভাবে বাচ্চাদের ‘ন্যাপকিনেই’ মেসির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল বার্সার
১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেন লিওনেল মেসি। তার বাবার নাম হোর্হে হোরাসিও মেসি ও মায়ের নাম সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি। চার ভাইবোনের মধ্যে মেসি তিন নম্বর। ছোটবেলায় খুবই অস্বচ্ছল ছিল মেসিদের পরিবার। তার বাবা কাজ করতেন ইস্পাতের কারখানায়। যদিও তিনি একজন শখের ফুটবল কোচার ছিলেন। আর মা পরিবারের অভাব মেটানোর জন্য খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
বাবা ফুটবল কোচ হওয়ায় ফুটবলের হাতেখড়ি বাবার হাতেই। পাঁচ বছর বয়স থেকেই বাবার ক্লাব ‘গ্রান্দোলি’তে খেলেছেন মেসি। ছেলেবেলা তিনি খুব বেশি ভালো ছাত্র না হলেও পায়ে বল থাকলে বলের কারিকুরিতে তার সাথে পেরে উঠত না স্কুলের ছেলেরা। আর এ নিয়ে বাবাও বেজায় খুশি।
মেসির বয়স মাত্র সাত বছর পেরিয়েছেন, তখন মেসি খেলতে শুরু করেন নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবে। সেই ক্লাবে বয়সভিত্তিক গ্রুপ করে খেলা হতো। সেই ক্লাবে ১৯৮৭ সালে যারা জন্মগ্রহণ করেছে, তাদের নিয়ে তৈরি গ্রুপে একটানা চার বছর খেলেন মেসি। মজার তথ্য হলো, এই চার বছরে মেসির দল একটি বারও হারেনি। তবে কিছু কিছু মিডিয়ায় আসে নিউওয়েলসের ক্লাবটির হয়ে মেসিরা মাত্র একবার হেরেছিল! আর প্রতিটি ম্যাচেই মেসি দলের জন্য সবচেয়ে ভালো খেলাটি উপহার দিয়েছে। এতে করে ওই সময়েই ছোটখাট তারকার স্বীকৃতি জুটে যায় মেসির। এই চার বছর পর নিউওয়েলস দলটিই বন্ধ হয়ে যায়। আর মেসিও পড়েন শারীরিক সমস্যায়।
মেসির ১১ বছর বয়সে গিয়ে দেখা যায় মেসি আর গায়ে-গতরে বড় হয়ে উঠছে না। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেল তার শরীরে বড় হওয়ার পেছনে কাজ করা ‘গ্রোথ হরমোনে’র ঘাটতি রয়েছে। চিকিৎসা করলে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। কিন্তু তার জন্য তখন মাসে প্রায় ৯০০ ডলার খরচ করতে হতো। এত টাকা মেসির বাবার পক্ষে কোনোভাবে ব্যয় করা সম্ভব ছিল না। এদিকে নিউওয়েলস ক্লাবও বন্ধ। তখন আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সের বিখ্যাত ক্লাব রিভারপ্লেট মেসির প্রতিভার কথা জানলেও তারা মেসিকে সুস্থ করে তোলার জন্য খরচ করতে রাজি হয়নি।
মেসির কিছু আত্মীয় তখন থাকতেন স্পেনে। তারা স্পেনের বিখ্যাত ক্লাব বার্সেলোনায় জানায় মেসির কথা। নিউওয়েলস ক্লাবের হয়ে মেসি যে অসাধারণ খেলে গেছে চার বছর, সে কথা জেনে ক্লাব তাকে দেখতে আগ্রহী হয়। তখন বার্সেলোনার ক্রীড়া পরিচালক ছিলেন কার্লেস রেক্সাস। আটলান্টিক পেরিয়ে মেসির বাবা-মা মেসিকে নিয়ে তখন হাজির হন বার্সেলোনায়। ট্রায়ালে মেসি যে কয়েক মিনিট বল নিয়ে নিজের প্রতিভার ঝলক দেখান, তাতেই রেক্সাস একেবারে মুগ্ধ হয়ে যান। সাথে সাথেই তিনি মেসির বাবাকে বলেন বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তি করতে। কিন্তু তাৎক্ষণিক কাগজের অভাবে শেষ পর্যন্ত একটি ‘ন্যাপকিনের’ টুকরায় সই হয় মেসির বাবার সাথে বার্সেলোনার চুক্তির। এরপর থেকে মেসির দায়ভার পুরোটাই নিয়ে নেয় বার্সেলোনা। চিকিৎসা পেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে মেসি। একইসাথে বার্সেলোনার একাডেমি ‘লা মাসিয়া’তে আরও প্রশিক্ষণ পেয়ে ক্ষুরধার হয়ে উঠতে থাকেন।এর পরের ইতিহাস তো সবারই।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন