কাঠফাঁটা গরম, একদিনে তাপমাত্রা বাড়ল ৪ ডিগ্রি
চৈত্রের বৃষ্টির কারণে এবার কাঠফাঁটা রোদ সেভাবে দেখেনি মানুষ। বরং তীব্র গরমের এই মাসেও টানা বর্ষণে শীতের অনুভূতিও হয়েছে মানুষের। তবে মাসের শেষে বৈশাখ আসার আগ মুহূর্তেই তেঁতে উঠছে সূর্য। গত দুই দিন ধরেই প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ।
শ্রমজীবী আর গণপরিবহনের যাত্রীদের অবস্থা সবচেয়ে সঙ্গীন। ঘামে ভেজা মানুষ বসন্ত বাতাসে খানিকটা স্তস্তির খোঁজে থাকলেও হাওয়ার উত্তাপ শীতল হতে দিচ্ছে না মানুষকে।
লোকাল বাসে চলাচলকারী নগরযাত্রীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। যাত্রী বোঝাই করে চলা গাড়িগুলোর ভেতরে যেন উনুনের মত উত্তাপ। ঘেমে একাকার যাত্রীরা।
নিউ ইস্কাটনে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে রিকশায় বসেই বিশ্রাম নিচ্ছিলেন চালক ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘গরমের ঠেলায় ১০টার পরে বাইরাইছি। এত গরম পড়ছে যে জোরেও চালাইতে পারি না। ঘাম বাইর হয়া যায়। শরীর খারাপ করে।’
উত্তাপের কারণে ঘরের বাইরে থাকাও কষ্টকর। তাই মানুষ কম আর সেভাবে ‘প্যাসেঞ্জার’ পাচ্ছেন না ওমর ফারুকরা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগের দিনের তুলনায় আজকে তাপমাত্রা বেড়েছে চার ডিগ্রি। সন্ধ্যা ছয়টার পর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পারদে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আগের দিন যা ছিল ৩২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরদিকে আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল নীলফামারীর ডিমলায় ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, বছরের এই সময় তাপমাত্রা সাধারণত এমনই থাকে। কিন্তু এবার বৃষ্টির কারণে গত কয়েকদিন চৈত্রের গরম খুব একটা না পড়লেও আজ গরমের তীব্রতা বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘চলতি বছর ইউরোপের দেশগুলোতে দেরি করে শীত আসায় এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে। এর ফলে আগে যে গরম পাওয়ার কথা ছিল তা দেরিতে পড়েছে।’
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘মৌসুমি প্রবাহের কারণে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বেশ কয়েকদিন তীব্র তাপদাহ বয়ে যাবে। পহেলা বৈশাখে ঢাকায় বৃষ্টি হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। তবে ঢাকার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। এটা চালু থাকতে পারে আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে মৌসুমি বায়ুচাপের প্রভাবে ২২ এপ্রিলের পর থেকে দেশে বৃষ্টিপাত শুরু হবে। এভাবে সাত থেকে আটদিন চলার পর দেশে আবার তাপদাহ শুরু হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশে কালবৈশাখি ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক শহীদ আখতার হোসাইন বলেন, ‘তাপমাত্রা পারদে যতই উঠুক, বড় শহরে মানুষের কাছে অনুভূত হয় অনেক বেশি।’ তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে গাছপালা বেশি থাকার কারণে সেখানে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম অনুভূত হয়। কিন্তু শহরাঞ্চলে ইট পাথরের বাড়ি ঘর থাকায় এবং গাছপালা কম থাকার কারণে সেখানে তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হয়। সেই সঙ্গে লাখো গাড়ি থেকে বের হওয়া ধোঁয়াও শহরকে উত্তপ্ত করে তুলছে।’
গরম থেকে বাঁচতে ব্যবহার করা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রও গরম বেশি অনুভূত হওয়ার একটি কারণ বলে জানান শহীদ আখতার হোসাইন। তিনি বলেন, ‘এসিতে ঘর ঠান্ডা থাকলেও বাইরে গরমের ভাপ বের হয়। আর লাখ লাখ এসি একসঙ্গে চলায় শহরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় আরও।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন