কাতারগামী বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য যে সুখবর!
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ, পেশাজীবী পাশাপাশি আধাদক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে কাতার।
একই সঙ্গে দেশটি বাংলাদেশের এলএনজি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বিনিয়োগেরও আগ্রহ প্রকাশ করে।
কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. ইসা সাদ রোববার দোহায় বলেন, কাতার সরকার বাংলাদেশের পেশাজীবী যেমন- চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইটি বিশেষজ্ঞ, ব্যাংকার্স ও ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি আধাদক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহী।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে রোববার দোহায় এক বৈঠকে কাতারের মন্ত্রী তার দেশের এ আগ্রহের কথা জানান।
সোমবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আব্দুলরহমান বিন জসিম আল-ছানির আমন্ত্রণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর তিনদিনের সফরে বর্তমানে দোহায় অবস্থান করছেন।
বৈঠকে কাতারের শ্রমমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সেদেশে জনশক্তি নিয়োগের নতুন নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করে বলেন,
নতুন নীতিমালায় শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ যেমন নিয়মিত বেতন-ভাতা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক শ্রম আইন অনুযায়ী চাকরি পরিবর্তনের অধিকারসহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হয়েছে।
তিনি মালিক-শ্রমিকের মাঝে সরাসরি যোগাযোগের জন্য ওয়েবসাইট ভিত্তিক মেকানিজম স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী কাতারগামী বাংলাদেশী শ্রমিকদের আরবি ভাষা শিক্ষাসহ চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানেরও প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার সকালে কাতারের আমিরি দেওয়ানে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল ছানিসহ কাতারের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন।
বৈঠকে আলী বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ এসব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
তিনি কাতারের উন্নয়নে বর্তমানে কর্মরত বাংলাদেশের ৩ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিকের সততা ও কঠোর পরিশ্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখিয়াতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন।
এই বৈঠকে দুই নেতা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ গ্যাস উত্তোলন, এলএনজি অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, প্রতিরক্ষা, মেরিন ফিশারিজ, জনগণের মধ্যে সংযুক্ততা, কূটনৈতিক সফর বিনিময় ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সম্প্রসারণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে কাতারের মন্ত্রী ২০১৭-২১ মেয়াদে ইউনেস্কোর মহাসচিব পদে কাতারে প্রার্থিতাকে সমর্থন দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ২০১৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ৪৫তম ওআইসি-সিএফএম সম্মেলনে কাতারের সমর্থন চান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাতারের আমিরকে বাংলাদেশ সফর করার জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। জবাবে কাতারের মন্ত্রী বলেন, দু’দেশের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আগামী বছরের প্রথম দিকে কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফরের সূচি নির্ধারণ করা হবে।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাতারের জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ বিন সালেহ আল সাদার সঙ্গে জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। কাতারের জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী বাংলাদেশে এলএনজি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, নেবরাস পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার জন্য সেদেশ সফরে যাবে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী কাতারের জ্বালানি মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় কাতারের প্রধানমন্ত্রী খুব শিগগিরই কাতারের জ্বালানি মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির একটি প্রতিনিধিদলকে আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য কাতারে পাঠানো প্রস্তাব করেন।
সারাদেশে সরকার স্থাপিত ১শ’টি বিশেষ অর্থনীতি অঞ্চলের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বলেন, কাতারের বিনিয়োগকারীরা এসব অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে চাইলে বাংলাদেশ সরকার সে সুযোগ দিবে।
ড. মুহাম্মদ সাদা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছাড়া বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ফ্রেমওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী রোববার কাতারের প্রশাসন উন্নয়ন ও শ্রমমন্ত্রী ড. ইসা সাদ আল জাফালি আল নুয়াইমুর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী দোহায় বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং দূতাবাসে একটি লাইব্রেরি উদ্বোধন করেন।
তিনি দোহায় বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন ও নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতার সফরকালে এই স্কুলটি উন্নয়নের জন্য অনুদান দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী কাতারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ওই ব্যবসায়ী দোহায় বাংলাদেশ স্কুলটিতে তার ৬ সন্তানকে ভর্তি করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে স্কুল প্রাঙ্গণে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্মেলন স্থগিত
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশে যুক্তরাজ্য বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন
ইউরোপ থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বাড়ছে চাপ !
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়েবিস্তারিত পড়ুন
বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার শ্রমিক নেবে সৌদি আরব
চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৩ হাজারবিস্তারিত পড়ুন