কানে পানি ঢুকে যন্ত্রণায় কাতর! জেনে নিন ম্যাজিকাল সমাধান
নদী, পুকুর বা সুইমিংপুলে সাঁতার কেটে চান করতে কে না ভালোবাসে? কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে সেখানেই ঘটে যায় বিপত্তি। ডুব দিতেই কানের মধ্যে সুড়ুৎ করে ঢুকে যায় জল। অসাবধানে শাওয়ারে স্নানের সময়েও ঘটতে পারে একই ঘটনা। কারও কান থেকে কিছু সময় পরে এমনিই জল বের হয়ে আসে, আবার কারও কানে জল জমে আঠালো রক্তের মতো বের হয়।
কানের যন্ত্রণায় কাতর করে রাখে কিছুদিন। এ বিষয়ে ডাক্তাররা কি পরামর্শ দিচ্ছে আসুন একবার জেনে নেওয়া যাক।
কানে জল ঢোকা রোগে বড়দের সঙ্গে সাধারনত ছোট ছেলেমেয়েরাই বেশি আক্রান্ত হয়। শিশুদের গলার ভেতরে শ্বাস ও খাদ্যনালীর মুখে অবস্থিত লসিকাগ্রন্থি বড় হওয়া, গলা ও মধ্যকর্ণের সংযোগনালীর (শ্রুতিনালী) কাজে সমস্যা থাকা, এলার্জি, ভাইরাসের আক্রমণ এবং মধ্যকর্ণে যন্ত্রণার কারণে এই সমস্যা হতে পারে। বায়ুর চাপ কমে চারপাশের রক্তনালী হতে তরল পদার্থ মধ্যকর্ণে জমা হয়।
বর্তমান বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে কানে জল জমে রোগের হার খুবই বেশি।
মধ্যকর্ণে তরল পদার্থ শিশুর শ্রবনশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ। ভাষাশিক্ষা বিঘ্নিত হয়, বুদ্ধিবৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ব্যহত হয়, স্কুলে দক্ষতা কমে যায় এবং সঙ্গে শিশুর ব্যবহারের পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়। শিশুর বয়স ৪ থেকে ৫ বছরে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
আক্রান্ত শিশুর ৯৫% পর্যন্ত এমনিতেই সেরে যায় তবে ৫% এর ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় স্থায়ী হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এ রোগের প্রকোপ কমে যেতে থাকে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগটি স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
রোগের কারণ
* সর্দি-কাশি-নাক বন্ধ হয়ে ঘন ঘন শ্বাসনালীর সংক্রমন।
* প্রায়ই এলার্জি জনিত নাকের প্রদাহ।
* ক্রনিক টনসিলের ইনফেকশন।
* শিশুদের ক্ষেত্রে নাকের পিছনে এডিনয়েড নামক লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া।
* নাকের হাড় বাকা বা ক্রনিক সাইনোসাইটিস এর সমস্যা।
* ভাইরাল ইনফেকশন।
এই রোগে কানের মধ্যে ভোঁ ভোঁ শব্দ হয়। কানে কম শোনা যায়। সংক্রমণ বেশি তীব্র হলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে কান বেয়ে রক্ত মিশ্রিত জল বের হতে পারে। এ রকম জটিলতার আগেই একজন নাক-কান-গলার চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত। এ ধরণের রোগে চিকিৎসক কান পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণত এন্টি-হিস্টামিন, বয়স উপযোগী নাকের ড্রপ, প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
কানে জল ঢুকে কান বন্ধ হয়ে যাওয়ার চাইতে বিব্রতকর সমস্যা আর কিছুই হতে পারে না। খুবই বিচিত্র একটা অনুভব, সেটা কাউকে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। অন্যদিকে কানে জল রয়ে গেলে কান পাকা ও তীব্র ব্যথা সহ নানান রকমের শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
অনেকেই কানে জল ঢুকলে কটন বাড দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। এই কাজটি একেবারেই ভুল! বরং জেনে নিন কান থেকে জল বের করার ৬টি সঠিক উপায়।
১) কান থেকে জল বের করার সবচাইতে নিরাপদ উপায়টি হচ্ছে গ্রাভিটিকে কাজ করতে দেয়া। যে কানে জল ঢুকেছে, সেই দিকে মাথাটি কাত করুন। তারপর হাতের তালু রাখুন কানের উপরে এবং চাপ দিন। চাপ দিয়েই হাতটি সরিয়ে নিন। দেখবেন খানিকটা জল বের হয়ে গেছে। এভাবে বেশ কয়েকবার করুন। জল বের হয়ে কান বন্ধ হওয়ার সমস্যা দূর হবে।
২) আরেকটি উপায় হচ্ছে নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে জল বের করা। একটি লম্বা শ্বাস নিন, এবার দুই আঙুল দিয়ে নাকের ফুটো বন্ধ করে ফেলুন। এখন এই বন্ধ নাক দিয়েই নিঃশ্বাস ফেলার চেষ্টা করুন। খুব জোরে বল প্রয়োগ করতে হবে না, সাধারণত যেভাবে নিঃশ্বাস ফেলেন সেভাবে ফেললেই হবে। কানে আওয়াজ শুনতে পাবেন, বুঝবেন যে পানি বের করে বন্ধ কান ঠিক হয়ে গেছে।
৩) যে কানে জল ঢুকেছে, সেই কানটি বালিশে চাপা দিয়ে শুয়ে থাকুন এবং সম্ভব হলে ঘুমিয়ে পড়ুন। ঘুম ভাঙলে দেখবেন জলের আর সমস্যা নেই।
৪) চুইং গাম বা যে কোন কিছু চিবিয়ে খান। যেটা বেশ করে চিবাতে হয়, এমন খাবার বেছে নিন। খাবার চিবানোর সময় যে মুভমেন্ট তৈরি হবে, সেটা বন্ধ কানকে খুলে দিতে সহায়ক।
৫) হাই তুললেও কানের জল বেরিয়ে বন্ধ কান খুলে যায়।
৬) হেয়ার ড্রায়ার বেশ ভালো কাজ করে এক্ষেত্রে। একদম লো-তে ড্রায়ার সেট করুন। তারপর কান থেকে ১০/১২ ইঞ্চি দূরে রেখে তাপ দিন। কানের জলের সমস্যা দূর হবে।
যদি কিছুতেই কিছু না হয়, অতি সত্বর ডাক্তারের কাছে যান। অনেক সময় ওষুধেরও প্রয়োজন পড়ে কানের জল বের করতে। তাই এই বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না মোটেও।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন