কিংবদন্তি অভিনেতা জসিমের চলে যাওয়ার দিন আজ !

শুনতে অবাক লাগলেও বাংলাদেশের চলচিত্র অঙ্গনে তাঁর প্রথম অভিষেকটা হয়েছিলো খলনায়ক হিসেবেই। তবে সময়ের পরিক্রমকালে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়কদের একজন হিসেবে। বিশেষ করে অ্যাকশন নায়ক হিসেবে আমাদের চলচ্চিত্রে আজও তিনি কিংবদন্তি হয়ে আছেন। বলছি প্রয়াত চিত্রনায়ক জসিমের কথা।
এই নন্দিত অভিনেতার আজ ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। এই গুনি অভিনেতার প্রকৃত নাম আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন। জন্ম হয়েছে ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার কেরানীগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে। লেখাপড়া করেছিলেন বিএ পর্যন্ত।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন সৈনিক হিসেবে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে লড়েছেন তিনি। ১৯৭৩ থেকে তার অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে গেছেন। ঢাকার ছায়াছবিতে এই জসিমই নতুন ধারার মারপিট শুরু করেন।
দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘দোস্ত দুশমন’ ছবিতে প্রথম অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়। ‘দোস্ত দুশমন’ হিন্দি ‘শোলে’ ছবির রিমেক। এখানে জসিম গব্বর সিং-য়ের খলনায়ক চরিত্রটি রুপদান করে ব্যাপক আলোচিত হন। এরপর খলনায়ক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন একক রাজত্ব করেন ঢালিউডে।
তারপর বেশ কয়েক বছর পর দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর পরিচালনায় ‘সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় আশির দশকের প্রায় সকল জনপ্রিয় নায়িকার বিপরীতেই অভিনয় করেছেন এই অ্যাকশন অভিনেতা। তবে শাবানা-রোজিনা এর সাথে তার জুটিই সবচেয়ে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। বিভিন্ন চলচ্চিত্রে তাকে শোষণ-বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা যেত তাকে।
জসিম অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন ‘রংবাজ’, ‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’, ‘সুন্দরী’,‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘নবাবজাদা’, ‘অভিযান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘ভাইবোন’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘পরিবার’, ‘রাজা বাবু’, ‘বুকের ধন’, ‘স্বামী কেন আসামি’, ‘লাল গোলাপ’, ‘দাগী’, ‘টাইগার’,‘হাবিলদার’, ‘ভালোবাসার ঘর’ প্রভৃতি সুপারহিট ছবিতে। সবমিলিয়ে প্রায় দুই`শ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
নায়ক জসিমই আবিষ্কার করেছিলেন আজকের নায়ক রিয়াজকে। ১৯৯৪ সালে রিয়াজ তাঁর চাচাতো বোন ববিতার সাথে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) ঘুরতে এসে জসিমের সুদৃষ্টিতে আসেন। সেই তখনই তাকে অভিনয় জগতে আসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন নায়ক জসিম। এর পরই জসিমের সাথে ‘বাংলার নায়ক’ নামের একটি ছবিতে ১৯৯৫ সালে অভিনয় করেন রিয়াজ।
জসিমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন নায়িকা সুচরিতা। পরে তিনি ঢাকার প্রথম সবাক ছবির নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন। এই কালজয়ী নায়ক ও প্রযোজকের মৃত্যুর পর তাকে সম্মান জানাতে এবং আজীবন স্মরণ রাখতে এফডিসির সর্ববৃহৎ ২ নং ফ্লোরকে জসিম ফ্লোর নামকরণ করা হয়েছে।
কিংবদন্তী এই নায়কের প্রয়াণ দিবসে সময়ের কণ্ঠস্বরের পরিবার ও সকল পাঠকের পক্ষ থেকে রইল গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যে সিরিজগুলো ২০২৫ মাতাবে
চব্বিশের বছরজুড়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রাজত্ব করেছে “হীরামণ্ডি”, “মির্জাপুর সিজন ৩”বিস্তারিত পড়ুন

অবৈধ জুয়ার প্রচারণায় অপু-বুবলী-পরিমনি-ফারিয়াদের নাম
২০২৪ সালের বিভিন্ন সময় জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় যুক্ত হওয়ায় অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন

৮ বছরের আইনি লড়াই শেষে বিবাহ বিচ্ছেদ চূড়ান্ত ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’ দম্পতির
দীর্ঘ আট বছরের আইনি লড়াই শেষে বিবাহ বিচ্ছেদের আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোবিস্তারিত পড়ুন