কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দুর্ভোগে সোয়া লাখ মানুষ
কুড়িগ্রামে চলমান বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী, নুন খাওয়া ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে নদ-নদী তীরবর্তী ৪১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের দুই শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ। তবে জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে দুর্যোগ কবলিত মানুষের সংখ্যা ৬২ হাজার দুইশ।
সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখো গেছে, বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষজন। বানভাসি মানুষ বসত ঘরে ওপরে কেউবা বাড়িতে বাঁশের মাচানে আবার কেউ কেউ নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অধিকাংশ পরিবারে ৫দিন ধরে চুলা জ্বলছে না। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তাদের গৃহপালিত পশুপাখি। চারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। বানভাসিদের অনেকেই গবাদি পশুসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে গ্রামাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বানভাসিদের মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব। একই সঙ্গে স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বন্যা কবলিত মানুষ।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার আব্দুল মতিন বলেন, পানি হু হু করে বাড়ছে। ঘরেও পানি প্রবেশ করেছে। চিন্তা ভাবনা করছি উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, আমার ইউনিয়নের অনেক চর ও দ্বীপ চর তলিয়ে গেছে। অনেক কষ্টে বসবাস করছে চরের মানুষ। এছাড়া কুড়িগ্রাম- যাত্রাপুর সড়কের দুটি স্থানে পানি ওঠায় বন্ধ রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি আরও ৪৮ ঘণ্টা বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যে ব্রহ্মপুত্রের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অন্যান্য নদ নদীর পানি বিপদসীমা নিচে রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত বানভাসিদের জন্য ৯ উপজেলায় ২৮২ মেট্রিক টন চাল ও ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মজুত আছে ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল, ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, সরকারের নির্দেশনায় স্থানীয় প্রশাসন বন্যার্তদের পাশে থেকে দুর্ভোগ কমাতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার সকাল থেকে উলিপুর ও সদর উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন এবং বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮ উপজেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। বন্যাকবলিতদের জন্য ৪০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন এক হাজার ২৪৬জন। শুক্রবার সাত উপজেলার দুই হাজার ৮৫০টি পরিবারের মাঝে ২৮ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবার, তেল ও ডালসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন