কুপ্রস্তাবে না, ট্রেন থেকে ফেলে দেয়া হল গৃহবধূকে
এসেছিলেন আত্মীয়বাড়ি। সন্ধ্যায় ফেরার কথা ছিল।
কিন্তু ট্রেন ধরতে পারেননি। সেটাই কাল হল। উঠতে হল রাতের ট্রেনে। ফাঁকা কামরা। ওই গৃহবধূ ছাড়া কয়েকজন তরুণ ছিল। তারাই উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে ওই নারীকে। কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ওই গৃহবধূকে। এ ঘটনায় দুই পা ভেঙে গেছে তাঁর। মাথায় গুরুতর আঘাত। ঠান্ডার মধ্যে সারারাত লাইনের ধারে এক ধানখেতে পড়েছিলেন। সকালে তাঁকে দেখেও দেখেননি স্থানীয়রা। শেষে দুই যুবক এগিয়ে আসেন। নিজেদের কাজ ফেলে তারা আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে ভর্তি করেন হাসপাতালে।
মঙ্গলবার এমন অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার কুমারুলি গ্রাম। আক্রান্ত গৃহবধূ মামণি পাইক দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা। বসিরহাটে এসেছিলেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। ফেরার কথা ছিল সন্ধ্যার ট্রেনে। কিন্তু ছেড়ে যাওয়ায় রাতের ডাউন ৩৩৫৩৮ নম্বর ট্রেনে ওঠেন মামণি। রাত ৯টা ৩৯ মিনিটে ছাড়ে সেই ট্রেন। কামরায় যাত্রী তেমন ছিল না। কয়েকজন যুবক আর মামণি। চাঁপাপুকুর স্টেশন পার হতেই তাদের মধ্যে দুই যুবক তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। প্রথমে বধূকে লক্ষ্য করে চলে টিপ্পনী। মামণি প্রথমে পাত্তা দেননি। হাড়োয়া স্টেশনে ট্রেন এলে ফাঁকা কামরায় দুস্কৃতিকারীরা তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয়। প্রতিবাদ করেন মামণি। তাঁর কাছে বাধা পেয়ে দুই দুষ্কৃতী মামণির ওপর জোর জবরদস্তি চালায়। ওই বধূ তখন স্বামীকে ফোন করেন। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি তারা। নিজেকে বাঁচাতে তখন হাত ছুঁড়তে শুরু করেন মামণি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দুষ্কৃতিকারীরা। বাধা পেয়ে তারা মামণিকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।
বিদ্যুতের খুঁটিতে সজোরে ধাক্কা খায় তাঁর মাথা। গিয়ে পড়েন ঝোপের মধ্যে। সেখান থেকে গড়িয়ে যান পাশের ধানখেতে। জ্ঞান হারান মামণি। ভেঙে যায় দুই পা। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে সারারাত পড়ে থাকেন শিয়ালদা–হাসনাবাদ শাখার রেল লাইনের ধারে হাড়োয়া ও ভাসিলা স্টেশনের মাঝে কুমারুলি গ্রামের ধানখেতে।
সকাল হয়। অনেকেই দেখেন, এক গৃহবধূ ধানখেতে পড়ে আছেন। কিন্তু উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেননি কেউ। রাজমিস্ত্রির ঢালাইয়ের কাজে ট্রেন ধরতে ওই পথ দিয়ে ভাসিলা স্টেশনে যাচ্ছিলেন হাবিব সর্দার ও আবদুল রহিম মণ্ডল। প্রথমে তাঁদের নজরে আসে এক গৃহবধূ পড়ে আছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে শরীর। তা দেখে ছুটে আসেন তাঁরা। মামণিকে উদ্ধার করে প্রথমে হাড়োয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল নেতা সঞ্জু বিশ্বাস। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন সঞ্জু। বলেন, ‘রেল পুলিশের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটে। আমরা এর উপযুক্ত তদন্ত এবং দুষ্কৃতিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। নারীকে উদ্ধারকারী দুই যুবক হাবিব সর্দার ও আবদুল রহিম মণ্ডলকে পুরস্কৃত করব। ’ এ ঘটনায় পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র বলেন, ‘রেলে নারীদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে। ’
এদিন সকাল থেকে নারীর চিকিৎসার জন্য ছুটে বেরিয়েছেন হাবিব ও আবদুল। তাঁরা বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম ওই নারী মারা গেছেন। কাছে গিয়ে ওই নারীর গোঙানি শুনে বুঝতে পারি এখনো জীবিত। এরপর আর কিছু ভাবিনি। আমরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ’
সূত্র: আজকাল
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন