অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন
কুমিল্লায় দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০
কুমিল্লার হোমনায় মাছ ধরা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ৯টি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এ সময় নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার লটিয়া ও গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
আহতরা হলেন গোয়ারীভাঙ্গার মোফাজ্জল হোসেন (২৩), মো. ফরিদ মিয়া, (২৫), আবু কালাম (৩১), মো. সেলিম সওদাগর (৪৫), আশাদ মিয়া (৩৫), শফিকুল ইসলাম, (২৮), হালিমা আক্তার (৪২), শেফালী বেগম (৫৫), ফরিদ (৪১), আ. বাতেন (২৮) এবং লটিয়া গ্রামের আ. আউয়ালের ছেলে জিলানী (২৮), মো. রাসেল মিয়া (২২) এবং ফজলুল হক (৫০)। এদের মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন আবু কালাম, সেলিম মিয়া, কামাল মিয়া, আশাদ মিয়া এবং জিলানী মিয়াকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে মোফাজ্জল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, এলাকাবাসী এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের সাদত আলীর ছেলে ফরিদ মিয়া গোয়ারীভাঙ্গা-লটিয়ার খালে মাছ ধরতে গেলে লটিয়া গ্রামের নাঈম, আতাউরসহ ৪-৫ জন মিলে ফরিদকে ব্যাপক মারধর করেন। এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে পৌরসভার লটিয়া ওয়ার্ডের কমিশনার আব্দুস সুবহানের নেতৃত্বে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামে সালিসি বৈঠক বসে। এতে লটিয়া গ্রামের লোকজন দেরিতে আসায় এবং আসামিরা উপস্থিত না হওয়ায় কোনো রকম ফয়সালা ছাড়াই বিচার শেষ হয়। এরপরও ওয়ার্ড কমিশনার সবার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা চাইলেও সেখানে গোয়ারীভাঙ্গার লোকজন অশোভন আচরণ করে।
এর জের ধরে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় লটিয়া গ্রামের নদীর ঘাটলায় গোয়ারীভাঙ্গার নুরু মিয়ার ছেলে মোফাজ্জল ও মৃত সওদাগরের ছেলে আসাদ গোসল করতে গেলে লটিয়া গ্রামের লোকজন তার ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও টেঁটাবিদ্ধ করে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে গোয়ারীভাঙ্গার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামের রাস্তায় নেমে পড়লে লটিয়া গ্রামের লোকজনও মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামে আক্রমণ করে। এ সময় গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের নারীসহ ১৩ জন আহত হন এবং ৯টি বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুনরায় হামলার আশঙ্কা থাকায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। দুই গ্রামেই এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সোবহান বলেন, “ফরিদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত ছিলাম। এ নিয়ে চিকিৎসাসহ সুষ্ঠু মীমাংসার লক্ষ্যে আমরা বিচারেও বসেছিলাম। তবে একজন আসামি উপস্থিত না হওয়ায় গোয়ারীভাঙ্গার লোকজন আমাদেরকে সেখানেই অপদস্থ করে। এ নিয়ে গতকাল উভয় গ্রামের লোকজনই মাইকে ঘোষণা দিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। শত শত মানুষের মাঝে আমি একা কি আর সামাল দিতে পারি। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
হোমনা থানার ওসি রসুল আহমদ নিজামী বলেন, “মাছ ধরার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে গোয়ারীভাঙ্গা ও লটিয়া গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় সালিস হওয়ার কথা ছিল মেয়র সাহেবের উদ্যোগে। কিন্তু শুক্রবার রাতে লটিয়া গ্রামের লোকজন গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামে হামলা করে কয়েকটি ঘর ভাঙচুর ও কয়েকজনকে আহত করে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেব।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন
চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেরবিস্তারিত পড়ুন
টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দেন স্বামী, অতঃপর…
কুমিল্লায় ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে তিন ধর্ষকের হাতে তুলেবিস্তারিত পড়ুন