কেউ কেউ বলছেন- সৈয়দ আশরাফ , আবার কেউ বলছেন ওবায়দুল কাদের..!
আজকের দিন গেলেই পর্দা উঠছে দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের ২০তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবার দৃষ্টি এ সম্মেলনকে ঘিরেই। দু’দিনের সম্মেলনের মাধ্যমে দলটির নেতৃত্বে কারা আসছেন- সে হিসাব-নিকাশই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে।
এবারও দলের সভানেত্রী হিসেবে থাকছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ এ পদে তার বিকল্প নেই বলে মনে করেন দলীয় নেতারা। টানা ৩৫ বছর এ পদে রয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তবে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাকে দেখা যাবে, তা নিয়েই এখন চলছে জল্পনা। কেউ কেউ বলছেন- সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থাকছেন। আবার কেউ বলছেন ওবায়দুল কাদেরের কথা। বেশকিছু সিনিয়র নেতাও এ দৌড়ে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৯ সাল থেকে সাধারণ সম্পাদকের পদে আছেন। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির সময় শেখ হাসিনার কারাবন্দি এবং প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার ডিগবাজিতেও দলকে এক রেখে সভানেত্রীর পূর্ণ আস্থা অর্জন করেন আশরাফ।
অপরদিকে ছাত্রলীগ সভাপতি থেকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদে আসেন ওবায়দুল কাদের। পরবর্তীতে সভাপতিমণ্ডলীতেও জায়গা করে নেন নোয়াখালীর কাদের। যদিও ২০১২ সালে দলের জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম ছিল আলোচিত।
গেলো বুধবার রাতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে নতুন ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের খসড়া অনুমোদন হয়। বৈঠকের আগে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। এরপর থেকেই সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের গুঞ্জন শুরু হয়। যদিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সৈয়দ আশরাফও গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে আগামীতে দল পরিচালনায় শক্তিশালী নেতৃত্ব উপহার দেবে আওয়ামী লীগ।’ তবে সাধারণ সম্পাদকের পদ পাবার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে একগাল হেসে তা এড়িয়ে যান। শুধু বলেন, ‘আকাশে চাঁদ ওঠলে সবাই দেখতে পাবেন।’ প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফও।
বাড়ছে পদ
আসন্ন সম্মেলনে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়ানো হয়েছে। কার্যকরী পরিষদের আকার ৭৫ থেকে বাড়িয়ে ৮১ করা হবে। সহ-সম্পাদক পদ ৭০ থেকে বাড়িয়ে ৯১ করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর পদ ১৫ থেকে বাড়িয়ে করা হতে পারে ১৯ সদস্যের। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদও বাড়ছে একটি। বিভাগ বাড়ার কারণে বর্তমান ৭ সাংগঠনিক পদ বাড়ারও আভাস দিয়েছেন দলীয় নেতারা।
বর্তমান গঠনতন্ত্রে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদকসহ (পদাধিকারবলে) আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের পদ ১৫টি। এর মধ্যে জোহরা তাজউদ্দীন মারা গেছেন, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বহিষ্কৃত এবং দু’টি পদ আগে থেকেই শূন্য ছিল।
দলটির দায়িত্বশীল নেতারা আরো জানান, সভাপতিমণ্ডলীতে সব অঞ্চলের প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা চলছে। সমতা আনতে নারীর সংখ্যাও বাড়তে পারে। ধারণা করা হচ্ছে- আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সভাপতিমণ্ডলীতে ফিরছেন।
সবকিছুতেই থাকছে নতুন চমক। বর্তমান তালিকা থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি যোগ হতে পারে বেশ কিছু নতুন মুখ।
শেষ বৈঠকে আবেগাপ্লুত নেতারা
বুধবার বিকেলে গণভবনে দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের শেষ বৈঠক হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের নানাদিক নিয়ে আলোচনা হয়। শেষ বৈঠক হওয়ায় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা অনেকটাই আবেগাপ্লুত ছিলেন।
এ বৈঠকের মাধ্যমে বর্তমান কমিটির কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করা হয়। শেখ হাসিনার কাছ থেকে শেষ বিদায় নেন দলের নেতারা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সম্মেলন কার্যক্রমের অগ্রগতির বিষয়ে নেতাদের কাছে বিস্তারিত খবর নেন। এসময় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, জঙ্গিদের জন্য বিএনপির মায়াকান্না দেখে বোঝাই যায়, তারাই জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা।
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২২ ও ২৩ অক্টোবর সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী দিনের নেতা নির্বাচন করবে দলটি। এই নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে, টান-টান উত্তেজনা। সকাল থেকে রাত, সব সময়ই পদ প্রত্যাশীদের উপস্থিতিতে মুখর দলটির সভানেত্রীর কার্যালয় ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নতুন নেতৃত্বে যারাই আসুক তাদের হাত ধরে এগিয়ে যাবে, আওয়ামী লীগ এমন প্রত্যাশা সকল মহলের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন