‘কেউ বিশ্বাস করবে না এই ঢাবি সেই ঢাবি’
সংবিধান প্রণেতা ও প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ১৯৪৭’র দেশ ভাগ, ৫২’র মহান ভাষা আন্দোলন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সেই ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। বর্তমান ঢাবিকে দেখে কেউ বিশ্বাস করবে না এই ঢাবি সেই ঢাবি।
রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের জন্য সংগ্রাম’ শীর্ষক এক সংলাপে শনিবার তিনি এসব কথা বলেন। অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের আত্মকথা ‘আনট্রাঙ্কুইল রিকাকেশনস, দ্য ইয়ারস অব ফুলফিলমেন্ট’ বইয়ের উপর এ সংলাপ আয়োজন করা হয়।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি ছিল? কোথায় কীভাবে ভূমিকা রেখেছে? কি কাজ করেছে? এখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখে কেউ তা বিশ্বাস করবে না। কারা এর সঙ্গে জড়িত? এটা অসহ্য বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে রেহমান সোবহানের বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এই সংলাপে আরও অংশ নেন- অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাবির অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক এমএম আকাশ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ অহমদ, সাবেক বিএনপি নেতা শমসের মোবিন চৌধুরী, রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রেহমান সোবহানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বাধীনতার পর সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আপনারা প্রথম পঞ্চবার্ষিকী তৈরি করলেন। দেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ ৯০ শতাংশ কলকারখানা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় করা হলো। বঙ্গবন্ধুকে বোঝানো হলো গণতন্ত্রের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। তাই ওয়ান পার্টি দরকার।
আমরা আশা করি আপনার পরবর্তী বইয়ে এই বিষয়ে থাকবে- স্বাধীনতার পর কীভাবে ওয়ান পার্টি এলো। এ বিষয়ে আপনি আমাদের জানাবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ওয়ান পার্টি বা বাকশাল গঠন না করা হলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ঘটতো না।
রেহমান সোবহানকে উদ্দেশ্য করে মওদুদ আহমেদ বলেন, আপনি নিজেকে একজন রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু বই থেকে বোঝা যায়, আপনি নিজেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার বাসনা ছিল। তবে আমি বলব আপনি রাজনীতিবিদ না হয়ে রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ হয়ে ভালোই করেছেন। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিবিদদের অবস্থা কেমন, তা আপনি ভালো করেই বুঝতে পারছেন।
অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান জানান, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত ডায়েরি থেকেই বইটি লেখার শুরু। এটি আমার একার গল্প না, আমাদের গল্প।
ড. গওহর রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভারত-পকিস্তানের বিষয় ছিল না। এটি ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহায়তা করেনি, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় ধরে নিয়ে। তবে বাংলাদেশ থেকে যখন ১ লাখ মানুষ ভারতে চলে গেল, তখন ভারত ভাবলো এর একটা সমাধান হওয়া উচিত।
অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর আগের স্থানে নেই। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনী আস্তানা গাড়তে গেছে। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের মতো ব্যক্তিকে পেটানো হয়েছে। এটা কিছুতেই কাম্য নয়।
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, প্রচলিত আছে কমিউনিস্ট পার্টির প্ররোচনায় বঙ্গবন্ধু ওয়ান পার্টি করেন। এটি মোটেও সঠিক নয়। তবে আমরা এর (ওয়ান পার্টি) সঙ্গে ছিলাম।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন