কোথায়, কখন, কীভাবে হত্যার জন্য সাজা দেওয়া হয়েছে,
মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলবদর বাহিনীর অন্যতম নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এমনকি কাকে, কোথায়, কখন, কীভাবে হত্যার জন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন, তা তাঁর বোধগম্য নয়। আজ শনিবার মুজাহিদের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ শেষে জামায়াতে ইসলামীর এই সেক্রেটারি জেনারেলের দাবির বরাত দিয়ে তাঁর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেছেন।
আজ বেলা ১১টার কিছু পর মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান তাঁর পাঁচ আইনজীবী। তাঁরা হলেন—শিশির মনির, মশিউল আলম, কামাল উদ্দিন, নজিবুর রহমান ও মতিউর রহমান আকন্দ। সাক্ষাৎ শেষে দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা বেরিয়ে আসেন।পরে কারাফটকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শিশির মনির। তাঁর ভাষ্য, মুজাহিদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। যে অভিযোগে দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাঁর (মুজাহিদ) মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন, সেই অভিযোগ অনুসারে কাকে, কোথায়, কখন, কীভাবে হত্যার জন্য তাঁকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে, তা তাঁর বোধগম্য হয়নি।
শিশির মনিরের ভাষ্য, আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি হাতে পেলে তা বিশ্লেষণ করবেন বলে আইনজীবীদের জানিয়েছেন মুজাহিদ। এ জন্য আইনজীবীদেরও প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের আইনজীবী বলেন, পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে প্রস্তুতি নিতে আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছেন মুজাহিদ। পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হবে। মুজাহিদের উদ্ধৃতির বরাত দিয়ে শিশির মনির বলেন, ‘উনি বলেছেন, তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ভবিষ্যতেও শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। তাঁর বিশ্বাস রিভিউয়ে খালাস পাবেন।’
মুজাহিদ দেশবাসীকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উল্লেখ করে শিশির মনির দাবি করেন, তিনি (মুজাহিদ) শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। মানসিকভাবে দৃঢ় আছেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের আগমুহূর্তে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশা হাতে নিয়ে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনা ও গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনী। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে সেই আলবদর বাহিনীর অন্যতম নেতা মুজাহিদের ফাঁসির সাজা সম্প্রতি বহাল রেখে রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ওই রায় দেন। এই রায়ে নিশ্চিত হয়েছে, মুজাহিদ যুদ্ধাপরাধী এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে তাঁর সর্বোচ্চ সাজাই প্রাপ্য।
মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাতে কারাগারে আইনজীবীরা বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ‘বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই, অতীতেও ছিল না’-এই দম্ভোক্তি করা মুজাহিদ নিজেই যুদ্ধাপরাধী প্রমাণিত হন সেদিন। খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন তিনি। কিন্তু বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে আপিলেও তাঁর সর্বোচ্চ সাজা বহাল আছে।
নিয়ম অনুসারে, পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন মুজাহিদ। এতেও যদি দণ্ড বহাল থাকে, তাহলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন তিনি। সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে সাজা কবে ও কীভাবে কার্যকর হবে, তা ঠিক করবে সরকার।
এর আগে আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার রায় দিয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইতিমধ্যে জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আর জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন