কোথায় মানবতা ! জান্নাতের পিঠের দাগ গুলোই বলে দিচ্ছে !
কথায় কথায় বলি দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছি আমরা । আসলেই কি আমরা সত্যিকারের অর্থে সভ্যতার দিকে এগিয়ে যেতে পারছি । এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে না পারলেও জান্নাতের পিঠের দাগ গুলোই বলে দিবে আমরা এ কোন সভ্য সমাজে বসবাস করছি ।
জান্নাতকে গতকাল বাঘের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এমন খবর প্রকাশিত হলেও জান্নাতে শরীরের বাঘের থাবার এত গুলো আচড় হয়তো সাংবাদিকদের ক্যামেরাতে ধরা পড়তো না । মানুষ হয়েও আজ আমাদের আচরন যেন হিংস্র জন্তু জানুয়ারের চেয়েও ভয়াবহ । গত কয়েক বছরে দেশে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঘটনা তাই প্রমান করেছে । লোহার রড দিয়ে শিশুকে পিটিয়ে মেরে ফেলা । জাতীয় দলের ক্রিকেটারের দ্বারা গৃহকর্মীর উপর অত্যাচার এমন হাজারো ঘটনা ঘটে গেছে আমাদের এ দেশটাতে ।
মাত্র ৯ বছরের জান্নাত যার ভিতরে এখনো বাস করছে অবুঝ মন । দুনিয়ার কিছুই যার বুঝে উঠা হয়নি । যে নিজের পেটের জ্বালা মেটাতেই কাজ করছিল, মাকে ফেলে দূরের কোন বাসা বাড়িতে । তার মতো অবুঝ শিশুটিকে কেমন করে কয়েক ডজন গরম খুন্তির দাগ দেয়া হয়েছে,তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় যাবে না । জান্নাতের শরীরের দাগ গুলো দেখে মনে হয়েছে কোন মানুষ নয় হিংস্র কোন জন্তু জানুয়ার তাকে ক্ষত বিক্ষত করে ছিড়ে ক্ষেতে বসে ছিল ।
হায়রে তথা কথিত ভদ্রলোক, নিজের সন্তানকে কি পারতেন এভাবে রক্তাক্ত করতে ? শিশু মেয়েটিকে দেখে মনে হয়েছে গৃহকর্তা এবং গৃহকর্তী জান্নাতের শরীরটাকে হায়নার মতো কামড়ে ছিঁড়ে ফেলতে চেয়েছিলেন ।
এ বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হলে যে পরিবারটিতে জান্নাত ছিল তারা হয়তো শিশু মেয়েটির কয়েক ডজন অন্যায় কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরবেন । কিন্তু প্রশ্ন হলো এমন কি কাজ করেছিল জান্নাত যার শাস্তি আপনারা এভাবে দিলেন ?
ঘটনার সূত্রে জানা যায় যে, ঈদের আগে গ্রামের বাড়ি যেতে চাওয়ায় এবং ঈদে জামা কিনে দিতে বলায় ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী মনি বেগম মিলে জান্নাতের উপর নির্যাতন চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
গৃহকর্তী মনি বেগম নাকি একজন স্কুল শিক্ষিকা এবং নারী । জান্নাতের বিষয়টি ভাবতে ভাবতে মনি বেগম যে একজন নারী সেটিই ভুলে গিয়েছিলাম । মেয়েরা মায়ের জাত তাদের মনটা থাকে মমতায় ভরা । কিন্তু জান্নাতের উপর অত্যাচার করা মনি বেগমের মমতার যে কি অবস্থা তাতো দেশবাসী জেনেই গেছেন । একজন নারী, স্কুল শিক্ষিকা তার আচরনের বহিঃপ্রকাশ যদি এমন হয় তাহলে সমাজের অন্যদের অবস্থা কেমন হবে । যদি সমাজের অবস্থা আসলেই এমন হয় তাহলে মানবতাবোধ নামক বিষয়টি কোথায় ?
জান্নাতের আজকের এ অবস্থার জন্যে কি শুধু নির্যাতনকারী পরিবারটিই দায়ী ? নাকি আশে পাশের বসবাস করা মানুষ গুলোও কিছুটা দায়ী । সমাজে বসবাস করা একজন মানুষ হিসেবে কি কোন দায়িত্ব নেই একটি নির্যাতিত শিশুকে বাঁচানোর । নিজেদের শিশু সন্তানটির জন্য যে ভালবাস আদর তার বিন্দুমাত্র কেন অন্যর সন্তানের প্রতি দেখাতে পারি না । তাহলে এ কোন সমাজে আমরা বসবাস করছি ?
কেউ কিছু বলতে না পারলেও জান্নাতের পিঠের দাগ গুলোই আমাদের বলে দিচ্ছে আমরা এ কোন সভ্য সমাজে বসবাস করছি ! জান্নাতে শরীরের প্রতিটি দাগ যেন আমাদের সমাজ ব্যবস্থার দিকে আঙ্গুল তুলছে । জান্নাতের পিঠের দাগ গুলো যেন নতুন করে ভাবতে বলছে আমাদের শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে । আর কতকাল জান্নাতদেরকে আমরা দেখব কুকুর বিড়ালের ছানার মতো । কেন মনে হবে জান্নাদের শুধু জন্ম হয়েছে আমাদের তথাকথিত সভ্যসমাজের নামধারী ভদ্রলোকদের বাসায় কাজের জন্যে ।
আজ জান্নাত কষ্টে কাতরাচ্ছে আর কাঁদছে,আমারতো মনে হয় জান্নাতের কাঁদার দরকার নেই । চোখের জল যদি ফেলতে হয় তাহলে তা ফেলবে সারা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ । কারণ আমাদের মানবতাবোধ হারিয়ে গেছে এ কষ্টেই কাঁদা উচিত ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন