কোহলির ব্যাটে ভারতের সেমিফাইনাল নিশ্চিত
বিরাট কোহলি এক ব্যাটিং বিস্ময়! জিনিয়াস! কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে তার ব্যাটে চড়েই ঘরের মাঠের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গেলো ভারত। ৫ বল হাতে রেখে তারা কোয়ার্টার ফাইনাল হয়ে যাওয়া গ্রুপের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারালো ৬ উইকেটে। ৫১ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮২ রানে অপরাজিত থেকেছেন কোহলি। অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে করেছিল ১৬০ রান। কোহলির ব্যাটিংয়ে ১৯.১ ওভারে ৪ উইকেটে তা টপকে গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিলো ভারত।
৬ ওভারে ৬৭। জিতলে সেমিফাইনাল। হারলে শত কোটি ভারতের হৃদয় ভাংবে। নেতা এমএস ধোনি এসেছেন। সেট ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলির সাথে তার যাত্রা শুরু হলো। দুই ম্যাচ উইনারের হাতে ভারতের ভাগ্য। পরের ২ ওভারে ২০ রান। ৩ ওভারে ১৬ রান দেয়া শেন ওয়াটসন এলেন। কোহলির ফিফটি হলো। ওয়াটসন ৮ রান দিলেন। জেমস ফকনারের পরের ওভারে আসল কাজ শুরু কোহলির। প্রথম তিন বলে চার, চার ও ছক্কায় ১৪ রান! কোহলি আকাশে ভাসেন উচ্ছ্বাসে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে দুজন দুর্দান্ত! ১৯ রান এই ওভারে। এখানেই অস্ট্রেলিয়ার হাত থেকে ম্যাচটা বের হয়ে গেলো আসলে। ১২ বলে ২০ রানের হিসেব! ভারতের দর্শকরা এতক্ষণে হাসতে পারলেন! ১৮তম ওভার কল্টার-নাইলের। প্রথম বল ডট। পরের তিন বলে তিন বাউন্ডারি কোহলির। অসম্ভব চাপে কি সুনিপুণ ব্যাটিং! পঞ্চম বলে ডট। শেষ বলে আবার বাউন্ডারি! ১৬ রান! এখান থেকে ভারত আর কিভাবে হারে! শেষ ওভারে ৪ রান লাগে জিততে। ফকনারকে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে খেলাটা শেষ করে দিলেন ধোনি! মোহালি তখন উন্মাতাল। সাথে নিশ্চয়ই সারা ভারত! পঞ্চম উইকেটে হয়েছে ম্যাচ জেতানো ৬৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। যেখানে ১০ বলে অপরাজিত ১৮ রানের অবদান ধোনির। শেষ এই ৪৭ রান কোহলি করেছেন ২১ বলে। যেখানে বাউন্ডারি থেকে এসেছে ৩৪ রান।
ভারতের ওপেনিং জুটিতে এলো ২৩ রান। চার-ছক্কায় শুরু করা শিখর ধাওয়ানের মধ্যে প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু কল্টার-নাইলকে হুক করতে গিয়ে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। এর পরের দুটি আঘাত শেন ওয়াটসনের। ষষ্ঠ ও অষ্টম ওভারে। ১২ রানের মধ্যে রোহিত শর্মা (১২) ও সুরেশ রায়নাকে (১০) হারিয়ে ফেলে চাপে পড়ে ভারত। ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেই। বিরাট কোহলি জোড়া বাউন্ডারি মেরে শুরু করেছেন। কিন্তু যুবরাজ সিং শুরু করতেই হ্যামস্ট্রিংয়ের টানে পড়েছেন। খেলা তবু চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ১০ ওভারে ৬৫ রান ভারতের। তার মানে জিততে বাকি দশ ওভারে ৯.৬০ গড়ে ৯৬ রান তুলতে হয় ভারতের।
ওয়াটসনের জন্য এটা চমৎকার রাত! জেমস ফকনারের স্লোয়ারে শেষ মুহূর্তে শট চেক করতে গিয়ে ক্যাচ তুললেন যুবরাজ। অনেক খানি দৌড়ে ঝাপিয়ে পড়ে দেখার মতো ক্যাচ নিয়েছেন ওয়াটসন। কোহলি-যুবরাজের ৪৫ রানের জুটি ভেঙ্গেছে। যুবরাজ ফিরেছেন ২১ রান করে। শেষ ৬ ওভারে ৬৭ রান তুলে ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব পড়ে কোহলি ও অধিনায়ক এমএস ধোনির ওপর। এবং ধোনির ওপর চাপ পড়তে না দিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচটা জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন ম্যাচের সেরা কোহলি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করেছে ভারত। ওপেনিং জুটিতে অ্যারন ফিঞ্চ ও উসমান খাজা তুলেছেন ৫৪ রান। ধোনির কপালে তখন ঘাম। পেসার আশিস নেহরা নিজের তৃতীয় ওভারে বিপজ্জনক উসমান খাজাকে (২৬) তুলে নিয়ে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে ভারত। ৪ ওভারে ৫৩ ছিল অস্ট্রেলিয়ার। পরের ৬ ওভারে ২৮ রান তুলতে ডেভিড ওয়ার্নার (৬) ও অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে (২) হারালো অস্ট্রেলিয়া।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সাথে ফিঞ্চের ২৬ রানের জুটি হলো। ফিঞ্চ ততক্ষণে উইকেটে বেশ থিতু হয়েছেন। কিন্তু ১৩তম ওভারে দলের রান ১০০তে নিয়ে ফিঞ্চ বিদায় নিলেন। হার্দিক পান্ডিয়াকে পুল করে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় ৩৪ বলে ৪৩ রান তার। দায়িত্ব নিয়ে খেলছিলেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু জসপ্রিত বুমরাহ তাকে স্লোয়ারে বোল্ড করলেন। ৩১ রানে বিদায় ম্যাক্সওয়েলের। ওয়াটসন ও জেমস ফকনারের হাতে থাকলো শেষ ২১ বল। কিন্তু এই জুটি ১৬ বল খেলে ১৫ রান তুললো। শেষ ওভারের প্রথম বলে পান্ডিয়া তুলে নেন ফকনারকে (১০)। শেষ ৪ বলে তাও ১৫ রান তুলে একটু এগিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তাদের তোলা রানকে কোহলির বীরোচিত ব্যাটিংয়ে কিভাবেই না টপকে গেলো ভারত!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন